দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অভাবনীয় উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে। ভোটের ময়দান প্রার্থী নেতা-কর্মী সমর্থকদের পদভারে কাঁপছে। সবার মধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দ-উচ্ছ্বাস। চারিদিক নির্বাচনী আনান্দে মাতোয়ারা। প্রতিটি মানুষের চোখেমুখে নতুন এক আশার ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা, কর্মী, সমর্থক এমনকি সচেতন প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা অত্যন্ত সুষ্ঠু এবং শান্তিপুর্ণভাবে জনগণ সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন তেমন পরিবেশ বজায় থাকুক।
সবারই প্রত্যাশা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন করে গণতন্ত্রের ধারকশক্তি নির্বাচনে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। একইসঙ্গে সচেতন ও পর্যবেক্ষকমহল আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নতুন করে জাতীয় নির্বাচন যেন অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আবদ্ধ না হয়। দলীয় আদর্শের চেয়ে দেশ ও জাতির স্বার্থকেই সবসময় বড় করে দেখতে হবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে। কারণ একমাত্র গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতাই পারে সাধারণ মানুষের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে।
দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলায় (খুলনা বিভাগ) মোট ৩৬টি আসনে আসনভিত্তিক চূড়ান্ত নির্বাচনী জরিপ চালানো শুরু হয়ে গেছে। এই অঞ্চলে অন্য কোন প্রার্থী বা প্রতীকের বিষয় সামনে নেই। শুধু নৌকা আর ধানের শীষের দ্বিমুখী লড়াই হবে। সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে। দিনরাত সমানতালে চলছে শো-ডাউন, গণসংযোগ ও নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রাজনৈতিক, সামাজিক নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শেণি ও পেশার মানুষ অকপটে বলেছেন, আমরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে, সাধারণ মানুষের কল্যাণের রাজনীতি দেখতে চাই। দলীয় নীতি আদর্শ তো থাকবেই কিন্তু প্রার্থীর ক্ষেত্রে বিচার বিবেচনা করেই ভোট দেয়া হবে। কারণ যোগ্য দক্ষ জনকল্যাণমুখী চরিত্রের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে ভুল করলে তার খেসারত দিতে হয় জনগণকেই।
তবে ভোটের মাঠে সর্বাগ্রে প্রাধান্য পাচ্ছে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে। এখন যেমন সবাই ভোটে মাতোয়ারা সেটি ৩০ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে তো-এমন নানা প্রশ্ন ও আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। মাঠের নির্বাচনী রাজনীতির খোঁজ নিয়ে সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সাধারণ মানুষের ভাবনার সঙ্গে প্রধান দু’টি নির্বাচনী জোট মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্টের বোদ্ধা রাজনীতিবিদরাও এমন প্রশ্ন ও আশঙ্কার সাথে দ্বিমত পোষণ করছেন না।
বর্তমান অবস্থায় যেটি হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের কার কি অবস্থান খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যম।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত নিরপেক্ষভাবে বেশ কড়া নজরদারি করা হচ্ছে গোটা এলাকায়। তবে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগও চলছে। যশোর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ধানের শীষের প্রার্থী কর্মী ও সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করে প্রচারণা শুরুর আগেই শহরে মিছিল করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। যশোরের দড়াটানায় ধানের শীষের প্রচার মাইক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। এলাকার সাধারণ ভোটারদের কথা, ‘ওরে ভাই ভোট আসলি সবাই তৎপর হয়, ভোট গেলে সাধারণ লোকজনের খবরও রাখে না আমাদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। অনেকেই রাতারাতি চোখ পাল্টি দিয়ে দেয়’। ভোট রাজনীতিতে কি এসবের পরিবর্তন হবে না-এমন প্রশ্ন ও নানা কথাবার্তা চলছে ভোটের মাঠে। এবারের নির্বাচনের কর্মকৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারার বাইরে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতারা মুখ খুলছেন না। এটুকু বলছেন, নতুন ধারার ইলেকশন পলিসি নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে কাছে টানার কৌশল রপ্ত করছে উভয়জোট। সেইসাথে নির্দল ভোটারদের কাছে টানার পথ খুঁজে বের করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন