একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, কয়েকটি স্থানে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ফলে আগামী কয়েকদিনের পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত নোয়াখালীর সাধারণ মানুষ। গত সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পরদিন বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার প্রচারণার শুরুতে একাধিক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার সকালে ১১টার দিকে কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট বাজারের জিরো পয়েন্টে বিএনপি প্রার্থী বারিস্টার মওদুদ আহমদের সমর্থনে পূর্ব নির্ধারিত পথসভাস্থলে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এতে উভয় দলের ৪০ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেশকিছু দোকানপাট ও ঘরবাড়ি হামলার শিকার হয়। ফলে বারিস্টার মওদুদ আহমদ তার নির্ধারিত পথসভাস্থলে যেতে পারেনি। ইতিপূর্বে একাধিক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মওদুদ তার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা ও নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা প্রদানের অভিযোগ করেন।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি একাংশ) আসনে বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি জয়নুল আবেদীন ফারুক মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সরকারী সুযোগ সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। এ বিষয়ে তিনি জেলা রিটার্নিং অফিসারের নিকট অভিযোগ দায়ের করলেও ফলোদয় হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে জয়নুল আবদীন ফারুক আরো অভিযোগনোয়াখালীতে উত্তপ্ত করেন যে, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও গায়েবী মামলায় জড়ানো অব্যাহত রয়েছে। ফলে গ্রেফতারের আশঙ্কায় অনেকে এলাকা ত্যাগ করেছেন।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী ফজলুল আজিম অভিযোগ করেন যে, বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরকারী সুযোগ সুবিধা ভোগ করে একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের এক নেতাকে অপহরণ করে পায়ে গুলি করে জখম করার অভিযোগ করেছে বিএনপি। বর্তমানে আহত ছাত্রদল নেতা চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নোয়াখালী-৪ ও নোয়াখালী-৩ আসনে এযাবত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও সাধারণ মানুষের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
নোয়াখালীর ৬টি উপজেলায় প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা এখন মাঠে সক্রিয় রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পুরনো প্রার্থীদের উপর ভরসা রেখে মনোনয়ন প্রদান করেছে। ফলে ৬টি আসনে মহাজোট কিংবা ঐক্যফ্রন্ট অন্য কাউকে মনোনয়ন প্রদান করেনি। নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে। ফলে শুরু থেকে এখানে নির্বাচনী উত্তেজনা লক্ষনীয়।
নোয়াখালীর বিভিন্ন পেশার শতাধিক ভোটারের সাথে আলাপ কালে তারা একবাক্যে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বলেন, শুরু থেকে কয়েকটি আসনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আগামী কয়েকদিন পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সে বিষয়ে তারা সন্দিহান। ইতিমধ্যে জেলা রিটার্নিং অফিসারের দফতরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগপত্র জমা পড়েছে। এছাড়া সরকারী দলের এমপিরা সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচরণা চালানোর অভিযোগ করেছে ৬টি আসনের বিএনপি প্রার্থীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন