শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নেত্রকোনা-৪ আসনে ৩ নারী প্রার্থীর নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে

নেত্রকোনা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৪:৪৬ পিএম

নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে তিন নারী প্রার্থীর প্রচার প্রচারণা ও নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে ৩০ ভাগ নারীকে মনোনয়ন দেয়ার নির্দেশনা থাকলেও এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন সময় নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবিক অর্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যাপ্ত পরিমান নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে প্রতিটি দলই অনেকটাই দ্বিদ্বা দ্বন্দ্বে ভোগেন বলে সচেতন মহলের ধারণা।
নেত্রকোনা জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য নূরুল আমিন-এর মৃত্যুর পর ২০০৩ সালের উপ-নির্বাচনে প্রথমবার তার স্ত্রী খাদিজা আমিনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক খাদ্য মন্ত্রী আব্দুল মমিনের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিনী রেবেকা মমিনকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। তিনি এ আমন থেকে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হন। এবারও তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ আসন থেকে ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে লুৎফুজ্জামান বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়ে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি দুটি মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। এ আসনে তার পরিবর্তে এবার তার সহধর্মিনী তাহমিনা জামান শ্রাবনীকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এবার এ আসনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এবং গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক গামেন্টর্স আন্দোলন সংগ্রামের লড়াকু সৈনিক কমরেড জলি তালুকদারকে।

প্রতিক বরাদ্দের পর পরই তিন প্রার্থী পথ সভা, কর্মী সভা ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিন নারী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরাও সাধারণ ভোটাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছেন। এই প্রথম এক আসনে তিন নারী প্রার্থীর নির্বাচনী লড়াই এই আসনের ভোটারদের ছাড়াও জেলাবাসীর মাঝে ব্যাপক কৌতুহল সৃষ্টি করেছে।
আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী রেবেকা মমিন এমপি কাছে নির্বাচনী পরিবেশ এবং ভোটারদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই স্বতঃষ্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি। আমি ১০ বছর ধরে এ আসনের এমপি হিসেবে জনগনের পাশে ছিলাম। আমি হাওরাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন এবং হাওরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে যে অবদান রেখেছি। আমি আশা করি, জনগন আমাকে ভোট দিয়ে পূনরায় এমপি নির্বাচিত করবেন।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাহমিনা জামান শ্রাবণী’র কাছে একই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। আমার স্বামী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং আমার জনপ্রিয়তা দেখে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ঈর্ষাণি¦ত হয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বাঁধা সৃষ্টি করছে। অপরদিকে পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় ৬ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ পূর্বক ও অজ্ঞাতনামা আরো সহ¯্রাধিক নেতাকর্মীর নামে ৩টি গায়েবী মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদের বাড়ীঘরে হানা দিচ্ছে এবং গণ গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে নেতাকর্মীরা বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সারাদেশে বিএনপির প্রার্থীদের উপর যে ভাবে নগ্ন হামলা হচ্ছে, তাতে আমি আতংকিত, কখন আমার উপর হামলা হয়। তারপরও ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে এবং নিরাপদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তাহলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো, ইনশাল্লাহ্।

বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী জলি তালুকদার বলেন, নির্বাচন করার কোন সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা রাতের আঁধারে আমার পোস্টার ছিড়ে ফেলছে। দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছেন। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আমার গণসংযোগে হামলা চালিয়ে আমিসহ ৭ নেতাকর্মীকে আহত করেছে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন এদের ব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হতে যাচ্ছে।
তবে শেষ হাসি কে হাসবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৩০ ডিসেম্বর রাত পর্যন্ত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন