রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নোয়াখালীতে প্রচারণায় এগিয়ে আ.লীগ : মাঠে নেই বিএনপি

নোয়াখালী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর ৬টি আসনে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। পক্ষান্তরে হামলা, মামলা, পুলিশের আটকের ভয়ে দিশেহারা বিএনপি। জেলার ৬টি আসনের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় নৌকা মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারণা চলছে বিরামহীন। অপরদিকে, নির্বাচনী প্রচারণা দূরের কথা প্রার্থী নিজে ও তার সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে সুখে নেই ধানের শীষ প্রার্থী ও সমর্থকরা। এ যাবত কয়েকটি স্থানে ধানের শীষ প্রার্থী হামলার শিকার হন। এর মধ্যে নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ি একাংশ) আসনের বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচনী এলাকার সোনাইমুড়ি প্রধান সড়কে গুলিবিদ্ধ হন।

নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ রয়েছেন। তিনি আরো জানান, নির্বাচনী প্রচারণা দূরের কথা আমি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। হামলা ও মামলা দিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। কবিরহাট বাজারে ধানের শীষের সমর্থনে পথসভায় হামলা চালানো হয়েছে। ৩০ নেতাকর্মীকে মারাত্মক আহত করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি, দোকানপাট ও দলীয় অফিস ভাঙচুর করা হয়। কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট আসনের কোথাও ধানের শীষ মার্কার নির্বাচনী অফিস এমনকি পোস্টার পর্যন্ত নেই।

নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর)আসনের এওজবালিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় যুবলীগের এক স্থানীয় নেতা নিহত হয়। পরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী বিচক্ষণতার সাথে পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেন। উক্ত ঘটনায় বিএনপির ৩৬৪ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত সংখ্যককে আসামি করে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ ইতিমধ্যে ১০জনকে আটক করেছে। এ আসনে ধনের শীষ মার্কার প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান অভিযোগ করেন, তিনি ও তার নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিনিয়ত বাধার সন্মুখীন হচ্ছেন। পুলিশ বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশী চালাচ্ছে। মাইকিং পোস্টারিং নেই বললেই চলে। ধানের শীষের প্রচারণা ব্যাহত হচ্ছে। কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমর্থক এলাকা ত্যাগ করেছে। তিনি এসব বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ সুপারকে অবহিত করলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বলে জানান।
গত বৃহস্পতিবার হাতিয়া চানন্দী ইউনিয়নের দরবেশবাজারে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী ফজলুল আজিমের গাড়ি বহরে হামলা চালিয়ে ৮টি গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলায় ১০জন আহত হয়েছে। গত সোমবার রাতে প্রকৌশলী ফজলুল আজিম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন যে, আমাকে জিম্মী করে রাখা হয়েছে। আমি বাসা থেকে বের হতে পারছিনা। আমার বাসভবনের সন্মুখ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত নৌকা মার্কার মিছিল চলছে। গত রোববার সকালে নোয়াখালী-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী জয়নুল আবদীন ফারুকের নির্বাচনী গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এতে সেনবাগ উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৬জন আহত হয়। হামলায় তার প্রচার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। জয়নুল আবদীন ফারুক সাংবাদিকের জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহাকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর মুহূর্তে হঠাৎ একজন সন্ত্রাসী অতর্কিত গাড়িতে হামলা চালায়। তিনি আরো বলেন, নৌকা মার্কা প্রার্থী প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

নোয়াখালীর ৬টি আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ঝুঁকির অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা। ফলে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে বলে তাদের অভিযোগ। গত শনিবার ধানের শীষের ৬জন প্রার্থী যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মওদুদ অভিযোগ করেন, হাজারো প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও আমরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দু:খজনক হলেও সত্য যে, সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা বিরোধী দলের বিরুদ্ধে আগেকার ক্রুসেড তীব্রতর করেছে। আমার নির্বাচনী এলাকায় আমি অবরুদ্ধ। অথচ একজন মন্ত্রী সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে রাজকীয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত থাকা উচিত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন