পাবনায় জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সাঁথিয়ায় জামায়াত এখন ততটা জোরে ঘাঁটিতে আছে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করেন না। সরকার গঠনের আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়াইটা হচ্ছে প্রতীকের সাথে প্রতীকের । নৌকার সাথে ধানের শীষের । পাবনা-১ আসনে মাও: নিজামীর পুত্র ব্যারিস্টার নজিবুর রহমান ( আপেল প্রতীক) স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। তবে তিনি ভোটের মাঠে নেই। তাঁর পক্ষে ভোটের কাজ করছেন অনুসারীরা । তাঁরা আপেল প্রতীকে ভোট চাইছেন। অপরদিকে আওয়ামীলীগ ও ঐক্যফ্রন্ট্রের প্রার্থীদের প্রচারণার মাঠে উভয়পক্ষের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। সাধারণ ভোটারদের কাছে উত্তেজনা, উত্তপ্ত পরিস্থিতি কাম্য নয়। প্রতীকের ভোট প্রতীকেই হয়।
পাবনা-১ (সাঁথিায়া-বেড়া উপজেলার একাংশ) আসনে গণফোরাম থেকে ঐক্যফ্রন্ট্রের প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ এবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি নৌকা প্রতীকের সাথে নিয়ে মাঠে রয়েছেন। অপরদিকে ভোটের মাঠে প্রকাশ্য উপস্থিতি না থাকলেও আপেল মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আছেন , ব্যারিস্টার নজিবুর রহমান।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, মাত্র কদিন আগেও নৌকার প্রচারণায় ছিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। ১৯৯১ ও ২০০১ এ আসনটিতে নির্বাচিত জামায়াতের সাবেক আমীর মাও: মতিউর রহমান নিজামীর সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর)। তবে, আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় না থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে রয়েছেন নিজামী পুত্র ব্যারিস্টার নজিবুর রহমান। শোনা কথা ফেসবুকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় মতিউর রহমান নিজামীর বড় পুত্র ড. নকিবুর রহমান সাঁথিয়া বেড়ার মানুষের কাছে ছোট ভাই ব্যারিস্টার নজিবুর রহমানের জন্য ভোটও চেয়েছেন। এই আসনটি দূর অতীতে জাতীয় পার্টির দখলে ছিল ,এম.পি ছিলেন, মেজর (অব:) মঞ্জুর কাদের । পরে দিনি বিএনপিতে যোগদান করে এই আসনে এম.পি নির্বাচিত হন। মাও: নিজামীকে হারিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাড. শামসুল হক টুকু এম.পি নির্বাচিত হলে আসনটি ফের আওয়ামীলীগের দখলে চলে আসে। জামায়াতের আমীরকে ভোট যুদ্ধে পরাজিত করায় এবং আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে তাঁকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। এর আগে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ নৌকা প্রতীকে ১৯৯৬ সালে এম.পি নির্বাচিত হন এবং আ’লীগের তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাবনার সাঁথিয়া পৌর সদরের ভোটার ও সংবাদের পাবনাস্থ নিজস্ব প্রতিবেদক হাবিবুর রহমান স্বপন জানান, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই সাঁথিয়ায় জামায়াতের ভোট ব্যাংক আছে। তবে, তা একক ভাবে নির্বাচিত হবার মত যথেষ্ট নয়। তাছাড়া, বিগত দিন গুলোতে জামায়াত নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য রাজনৈতিক তৎপরতাও চালাতে পারেননি। বিএনপির ভোট ছাড়া জামায়াত নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারবে না।’
এদিকে, প্রতীক বরাদ্দের পর আবু সাইয়িদ বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ধানের শীষের প্রচারণায় নেমেই দফায় দফায় দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। গেল ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর সাঁথিয়া পৌর এলাকার শিমুলতলা বাজার, জোড়গাছা বাজার এবং মাধপুর মোড়ে হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন আবু সাইয়িদ। এসব ঘটনায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী শামসুল হকের সমর্থক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে অভিযোগও করেছেন তিনি। ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীকে আদর্শচ্যুত উল্লেখ করে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এম.পি শামসুল হক টুকু তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শামসুল হক টুকু বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে হামলার ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের অভিযুক্ত করে আবু সাইয়িদ মিথ্যাচার করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন