একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬০৪ জন। যার মধ্যে মোট পুরুষ ভোটার ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬৫ জন এবং নারী ভোটার ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৭৩৯ জন। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এবার কুমিল্লায় নতুন ভোটার বেড়েছে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৯১৭ জন। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এবার কুমিল্লায় নারী ভোটার চেয়ে পুরুষ ভোটার সংখ্যাই কিছুটা বেশি। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লার ১১টি আসনেই প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা মেলাচ্ছেন ভোটের হিসাব-নিকাশ। গ্রাম-গঞ্জের সকল চায়ের দোকানগুলোতে আড্ডায় ঝড় তুলছে নির্বাচনী আলোচনা। নিজেদের মতো করেই চলছে ভোট ভাগাভাগির নিখুঁত বিশ্লেষণ।
নির্বাচন ঘিরে কুমিল্লার মাঠে-ঘাটে চলা এসব আলোচনা ও আগাম হিসাব-নিকাশে ঘুরে ফিরে আসছে নতুন পাঁচ লাখ ভোটার। পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বাছাই করবে নিজেদের প্রতিনিধি। আর প্রবীণ ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচনের মাঠের অনেক হিসাব-নিকাশই পাল্টে যেতে পারে নতুন ভোটার হওয়া পাঁচ লাখ তরুণ-তরুণীর সিদ্ধান্তে। কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে একটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। জেলার বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ‘ফ্যাক্ট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন ভোটাররা। মোট ভোটারের প্রায় ১৩ শতাংশ এসব নতুন ভোটারের চাওয়া-পাওয়া ও সমর্থনের বিষয়টি নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নবীন ভোটাররা বলছেন, তাদের কাছে প্রতীক নয়, গুরুত্ব পাবে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। যে প্রার্থী সৎ, আদর্শবান এবং যিনি মাদক নির্মূলে ও শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করবেন তাকেই ভোট দেবেন তারা। এ ব্যাপারে কুমিল্লা পলিটেকনিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, যিনি কুমিল্লাকে এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবেন, বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে এ জেলাকে এগিয়ে নেবেন, আমরা তাকেই ভোট দেব।
আরেক শিক্ষার্থী আফসান কামাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কুমিল্লা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানে মাদক ও চোরাচালানের আগ্রাসন বেশি। যিনি এসব কিছু বন্ধে অবদান রাখতে পারবেন বলে মনে হবে তাকেই ভোট দেব।
এ বিষয়ে কথা হয় কুমিল্লার প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আতিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনেই তরুণ ও নতুন ভোটারদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। তাদের নিত্যনতুন চাহিদা থাকে। দেশ-সমাজ নিয়ে নানা ধরনের ভাবনা ও পরিকল্পনা থাকে। যেসব প্রার্থী তাদের সেই ভাবনা ও আস্থার জায়গায় ‘টাচ’ করতে পারবেন তারাই লাভবান হবেন।
এদিকে, নতুন ভোটারদের জন্য সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন কুমিল্লার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহা. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, তরুণ ভোটাররা যেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারে সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন