৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণকে সামনে রেখে একপাক্ষিক হলেও নরসিংদী ৩, সদর আসনে চলছে জমজমাট প্রচারণা। এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন কারাগারে আটক। মাঠে আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লে: কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী, ইসলামী আন্দোলন নরসিংদীর সেক্রেটারি আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া। দুজন প্রার্থীই মাঠে ময়দানে ব্যাপক প্রচারণা লিপ্ত হয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই চলছে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।
এসব প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন নরসিংদী-১,সদর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে: কর্নেল ( অব:) মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু। সবদিকেই চলছে তার প্রচারণা ঢামাডোল। কর্নেল হিরু তার দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটকর্মীদেরকে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই নির্বাচনী সমাবেশ, মিছিলসহ ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘুরে বেড়াচ্ছেন নরসিংদীর শহর, বন্দর, গ্রামসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তার নির্বাচনী পোস্টার ,ব্যানারে ছেয়ে গেছে সারা নির্বাচনী এলাকা। কিছুদিন পূর্বে নিজের নেতৃত্বে কর্নেল হিরু আয়োজন করেন বিশাল এক নৌ মিছিলের। মেঘনার নরসিংদী অংশের প্রায় ৮ কিলোমিটার পানি সীমায় বহু সংখ্যক নৌ-যান সমন্বয়ে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। নৌ-মিছিলকে নিয়ে রচিত হয়েছে কাহারবা তালের প্যারোডি গান। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরুর নৌকা মার্কার বিভিন্নমুখী প্রচারণা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তাদের মতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু একজন সৎ মানুষ হিসেবে মানুষ হিসেবে পরিচিত। নরসিংদী সদর আসনে দত্তপাড়া বাইরে আওয়ামী লীগের কোন এমপি নির্বাচিত হয়নি। কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু একমাত্র রাজনীতিক যিনি দত্তপাড়ার বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত ১০ বছরে তিনি নরসিংদীতে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। বিশেষ করে তার উন্নয়নের মধ্যে মেঘনা ব্রিজ একটি উল্লেখযোগ্য এবং দৃশ্যমান উন্নয়ন। বিগত ১০ বছরে কর্নেল নজরুল ইসলাম হিরু তথা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে তার সততা, দক্ষতা এবং কর্তব্যনিষ্ঠাতার কারণে। ৩০ শে ডিসেম্বর ভোটাভুটি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে বিভিন্নমুখী আলোচনা ও সমালোচনা। তাদের দৃষ্টিতে সদর আসনে আওয়ামী লীগের মূল ও প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী দল হচ্ছে বিএনপি।
এদিকে বিএনপির প্রার্থী ও বিএনপি›র যুগ্ন- মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন কারাগারে বন্দি থাকায় তার নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাপকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। পুলিশের গায়েবি মামলায় আত্মগোপনে রয়েছেন বিএনপি›র পৌনে তিন শত নেতাকর্মী। খোকনের সাথে গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন কমবেশি শতাধিক নেতাকর্মী। যার কারণে খায়রুল কবির খোকনের সহধর্মিণী মহিলা দলের নেত্রী শিরিন সুলতানা তার স্বামীর পক্ষে সীমিত আকারে প্রচারণা চালাচ্ছেন। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত তার পোস্টার ব্যানার, ফেস্টুন, স্টিকার নৌকার তুলনায় অত্যন্ত কম। মহিলা নেত্রী শিরিন সুলতানা একদিকে কোর্টকাছারিতে দৌড়াচ্ছেন অপরদিকে নির্বাচনের মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঠে প্রচারণা চালাতে গিয়েও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হচ্ছেন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বড় বড় নেতা পলাতক এবং জেলে থাকায় সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রোপাগান্ডায় মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছে না। যা কিছু পোস্টার সাঁটানো হচ্ছে, তাও ছিঁড়ে ফেলছে আওয়ামী লীগের এক শ্রেণীর উশৃঙ্খল নেতাকর্মী। এই অবস্থায় নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা একেবারই একপাক্ষিক এবং একচেটিয়া হয়ে পড়েছে। বিএনপি›র ভোট কর্মীদের ধারণা বিএনপি মাঠে থাকলে ভোটের প্রচারণা থাকতো আরো অনেক বেশি জমজমাট। তাদের ধারণা খায়রুল কবির খোকন জেলে থাকায় তার জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। বিএনপি প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর দমননীতির কারণে তাদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তা নৌকার জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। নেতাকর্মী প্রচারণা চালিয়ে ধানের শীষের ভোট অর্জন করতে না পারলেও জনগণ যদি জানতে পারে যে ধানের শীষ নির্বাচনে আছে , আর যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তবে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের মাঠে অনন্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া। ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল বারির নেতৃত্বে প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া হাতপাখা নিয়ে ব্যাপকভাবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত তিনি তার ভোট কর্মীদের কে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।ইসলামী আন্দোলন নেতাকর্মীরা বলছেন প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। সকল দলের অংশগ্রহণে এবং জমজমাট প্রচারণায় সকল প্রার্থী তথা সকল দলের অংশগ্রহণ থাকলে নেতৃত্বের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায়। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন