শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

দলীয় জুলুমবাজির অবসানে নতুন বছর হয়ে উঠুক শান্তির বাংলাদেশ

মোহাম্মদ আবদুল গফুর | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গত বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম। সিএনজির ড্রাইভার এক পর্যায়ে প্রশ্ন করে বসল, আচ্ছা খালু (দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সূত্রে সে আমাকে এভাবেই ডেকে থাকে), এ কেমন ব্যাপার যে, যেখানে আওয়ামী লীগ রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে মিটিং-মিছিল করছে, সেখানে বিএনপিকে একটা পোস্টার ও লাগাতে দিচ্ছে না? আমি তার এ প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারলাম না। শুধু অবাক হয়ে ভাবলাম, বিষয়টা জনগণের মধ্যে কত গভীরে ঢুকে গেছে !
এর সাথে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিককালের বহুল-উচ্চারিত একটি উক্তি মিলিয়ে বিচার করি, যেখানে তিনি বলেছেন, অতীতে জনগণ ভোট দিয়েছিল তাই ক্ষমতায় এসেছি, এবার যদি ভোট না দেয়, আসব না, এ জন্য আমার কোন দু:খ নেই। গতবার বলতে নিশ্চয় তিনি ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনের কথা বুঝিয়েছেন। সেই নির্বাচন নীতিগত কারণে বিএনপির সঙ্গে অতীতের আওয়ামী লীগের সমঝোতা লংঘনের অভিযোগে বিএনপি বয়কট করেছিল। বিএনপির মত একটি বড় দল নির্বাচন বয়কট করায় নির্বাচনটি পরিণত হয়ে পড়ে নির্বাচনী প্রহসনে। বিএনপির সেই বয়কটের কারণে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতির সুযোগে আওয়ামী লীগের অল্পসংখ্যক নেতাকর্মী ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী প্রার্থীদের ব্যালটপত্রে ইচ্ছামত সীল মেরে তাদের পক্ষে প্রদত্ত ভোট সংখ্যা অকল্পনীয়ভাবে বহুগুণে বাড়িয়ে দেখানো নিশ্চিত করেন, যদিও ভোটদানের নির্ধারিত সময়ে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র প্রায় ফাঁকা জনশূণ্য থাকার ঘটনার কারণে পরদিন পত্রপত্রিকার সচিত্র প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়ে পড়ে। ফলে জনগণ এ ভোটের নাম দেয় ভোটারবিহীন নির্বাচন।
এবার জাতীয় নির্বাচনের জন্য দিন সাব্যস্ত হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর। সুখের বিষয় এ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ভোটারবিহীন নির্বাচন বিজয়ী আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনে জিতেও যে দুর্নাম কুড়ায়, তা মোচনের একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে আওয়ামী লীগের। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির জনপ্রিয়তার ভীত শংকিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেভাবে হামলা-মামলা ইত্যাদি চালিয়ে নির্বাচনে তাদের অংশ গ্রহণকে অসম্ভব করে তুলে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে তাতে অবস্থা শেষ পর্যন্ত কোন্ দিকে গড়ায় তা বলা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।
নির্বাচনে বিএনপি-অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন দেশ-বিদেশে একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের সুনাম ফিরে পাওয়ার, তারা বিরোধী দল বিশেষ করে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা, গ্রেফতার ইত্যাদি চালিয়ে যাওয়ায় আওয়ামী সরকারের দুর্নাম বরং পাকাপোক্ত হয়ে পড়বে এবং তাতে আওয়ামী লীগ জিতলেও সে বিষয়ে তাদের বিজয় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকার যদি এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পুণর্ধিবিবেচনা করে প্রধান বিরোধী দলের প্রতি সমান অধিকার দিতে রাজী হতো, তাদের অতীতের দুর্নাম থেকে মুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ আসতো। আজ তাই প্রশ্ন আওয়ামী লীগ অতীতের দুর্নাম থেকে মুক্তির লক্ষ্যে প্রধান বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে, না বিএনপির বিরুদ্ধে তাদের নিজেদের সংকীর্ণ লাভের চিন্তায় অধিক মহগ্রস্ত হয়ে অতীতের বদনামকে আরো পাকাপোক্ত করে তুলবে।
আওয়ামীলীগ দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল হিসাবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্য আদর্শ পথ প্রদর্শক হওয়ার যে সুযোগ পেয়েছে, ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য তার পক্ষে তা হারানো তার জন্য সঠিক হবে না। অথচ তারা যা করছে করতে যাচ্ছে তার ফলে তাদের সুনাম অর্জনের সুযোগ পুনরায় হারিয়ে যেতেই বসছে।
অথচ বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকার সুযোগে যা করতে চাইছে তার ফলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছেন। সরকার-বিরোধী ঐক্যফ্রণ্টের নেতা ড. কামাল হোসেন প্রশাসন, পুলিশ ইত্যাদিকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ সরকারের একগুয়ে ভূমিকার কারণে তাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা ইতিমধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এর পরও যদি তারা একই রূপ ভূমিকা পালনের প্রশ্নে অটল থাকেন তাতে তারা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়লেও মধ্য থেকে পক্ষে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধতা করার ও সাহস হবে না। সেক্ষেত্রে তাদের ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখতে হবে, তারা কোন পথে চলবেন।
গত ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচনের পর একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যেই যেসব ঘটনা যেভাবে ঘটতে শুরু করেছে, তাতে বাংলাদেশ সরকারের যথেষ্ট দুর্নাম হয়েছে। এর পরও তারা যদি তারা এই প্রশ্নে অটল থাকেন, তার ফল হবে, তাদের সংশ্লিষ্ট কেউ বিশ্বাস করবে না। এবং সরকার ও দেশ সম্পর্কে বাইরের দুনিয়ার বিশ্বাস ও হারিয়ে যাবে।
নির্বাচনে সরকারী দলের বাড়াবাড়ি আচরণের ফলে এবার একটা নতুন প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে যে, বিরোধী দল রাত জেগে ভোট কেন্দ্র পাহাড়া দেবেন। এটা যদি বাস্তবে কার্যকর হয় তা সরকারী দলের জন্য হবে বিরাট দুর্নাম। মানুষ যদি কোন কাজ করতে দৃঢ় সংকল্প হয়, কেউ তাদের ঠেকাতে পারে না। বরং তা ইতিহাস হয়ে প্রেরণা যোগায়। এরকম আরেকটা চিন্তা ঢুকেছে বিরোধী দলের নেতাদের মাথায়। সেটা হলো গেরিলা কায়দায় প্রচার। এসব কার্যকর হলে তা হবে বিরোধী দলের জন্য বড় রকমের প্রেরণার উৎস।
মোট কথা সরকারের পক্ষে যত অন্যায় অনৈতিক কাজ বেড়ে যাবে, ততই বিরোধী শিবির নতুন নতুন কার্যক্রম নিয়ে অগ্রসর হবে। এবং তাতে ক্ষতি হবে সরকারী পক্ষেরা। সুতরাং সময় থাকতে সরকারী দলকে সাবধান ও সংযত হয়ে তাদের কর্মসূচি পরিচালনা করতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ এটা সরকারের জন্য কোন সুখবর নয়। এর ফলে প্রধানত ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকারী দলের প্রার্থীরা। যারা চান নির্বাচন সফল হোক তারা দেখতে চান, সরকার নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুক এবং সেসব নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড তৈরী হোক। ভোটারদের বেশী বেশী সংখ্যায় নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারদের আগমন ঘটুক। কোনরকম বাধা ও প্রতিবন্ধকতা যেন সৃষ্টি করা না হয়।
নির্বাচন কতটা জমে ওঠে, তার একটা লক্ষণ নির্বাচনে দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক যদি বাড়ে যথেষ্ট সংখ্যায়। এবার দেশী পর্যবেক্ষক কম হবে এটা আগেই জানা গেছে। এখন জানা যাচ্ছে, আসছে না বিদেশী দলটিও। এসবে নিশ্চয়ই সরকারের হাত থাকার কথা। সরকার এবার নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলকে ও যে নিরুৎসাহিত করতে চান, তার লক্ষণ এটা গত দশম সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বয়কট করায় কতটা খুশী হয়েছিল এবার প্রধান বিরোধী দলসহ সকল বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় সরকার ততটাই ভীত শংকিত। অথচ এবার সরকারের উচিৎ হবে স্বতপ্রণোদিত হয়ে বিরোধী দলের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ করে তাদের অধিক সংখ্যায় নির্বাচনে আনতে চেষ্টা করা। এতে সরকার যে বিরোধী দলের নির্বাচনে অংশ গ্রহণের বিরোধী সে অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হবে।
ইতোমধ্যে গত সোমবার নির্বাচন উপলক্ষে সেনাবাহিনী মোতায়েন শুরু হওয়ায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির লক্ষণ দেখা দিয়েছে। বিরোধী জোটের নেতা ড. কামাল হোসেন সেনা মোতায়েনে নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। দেশের সাধারণ মানুষও সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থাশীল। এর আগে পুলিশ নির্বাচনের ব্যাপারে বিরোধী দলের কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যে দুর্নাম অর্জন করে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ফলে সে দুর্নাম ধীরে ধীরে হলেও তা কমতে শুরু করেছে।
মোট কথা, আসন্ন নির্বাচনকে সকল রকম প্রশ্নবদ্ধতার ঊর্ধ্বে রাখতে চাইলে সরকার, ইসি (নির্বাচন কমিশন), পুলিশ প্রভৃতিকে যে কোন মূল্যে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। এতদিন যেভাবে পরিস্থিতি অগ্রসর হয়েছিল তাতে যথেষ্ট হতাশার কারণ ঘটছিল। সরকার তো বিরোধী দলের নির্বাচনী প্রচারণা অসম্ভব করে তোলার চেষ্টায় কোন ত্রুটিই করেনি। তার সাথে ইসি ও পুলিশের ভূমিকা ছিল অনেকটা শাসকদলের নেতাকর্মীদের মত। এর ফলে দেশ-বিদেশের যারা বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করেছিল, তাদের মধ্য বিরাজ করছিল চরম হতাশা।
নির্বাচন উপলক্ষে সেনা বাহিনী মোতায়েনের ফলে পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। তবে সরকার যে মনোভাব নিয়ে নির্বাচন উপলক্ষে সেনা বাহিনীর মোতায়েনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, তার চূড়ান্ত সার্থকতা নির্ভর করবে সরকার যদি এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় মনোভাব বজায় রাখে। সরকারের এই নিরপেক্ষ মনোভাবের ফলে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনে শাসক দল যদি নির্বাচনে পরাজয়ও বরণ করে, তবুও তাতে সরকারী দলের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। এই পরাজয় বরণের ফলের জনগণের মধ্যে শাসক দলের প্রতি যে আস্থা অর্জন সম্ভব হবে তার সুফল শাসক দল পাবে পরবর্তী কালে। এর অন্যথা হলে জনগণের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে যে অনাস্থা বিরাজমান তা আরও বৃদ্ধি পাবে, এবং তারা আত্মসংশোধনের অযোগ্য এ ধারণা পাকাপোক্ত হয়ে বসবে, যা হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী।
আমরা সরকারী দলের নেতৃবৃন্দকে বিশেষভাবে জোর দিয়ে মনে রাখতে বলতে চাই এ কারণে যে, এর ফলে তাদের সম্পর্কে জনগণের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি হবে যার সুফল হবে সুদূর প্রসারী। এ প্রসঙ্গে সরকারকে আমরা আরেকটা কথা মনে রাখতে বলি। সরকার কিছুতেই এমন নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ করবে না, সরকারী দলের বাইরে যার কোন স্বাধীন অস্তিত্ব থাকবে না। কারণ ইসি যদি মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়ে এবং তার স্বাধীন অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে, তার উপর জনগণের আস্থা থাকবে না এবং জনগণ ইসির প্রতি একবার আস্থা হারিয়ে ফেললে সে আস্থা ফিরে পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আর একটা কথা বলে আজকের এ লেখার ইতি টানতে চাই। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে একদা সকল জাতীয় নির্বাচন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতো। এ দেশে এমন একটি সময় ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা চালু ছিল। সে সময় দেশে বেশ কয়েকটি নির্বাচন উপরে উল্লেখিত ব্যবস্থাধীনে অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে পালাক্রমে এর পর দেশের দুই প্রধান দল বিজয়ী হয়ে পর পর দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করে। ফলে বাংলাদেশের বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই ব্যবস্থার বাস্তবতা প্রমাণিত হয়।
পরবর্তীকালে এক পর্যায়ে শেখ হাসিনার প্রধান মন্ত্রীত্বকালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবর্তে নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনে সকল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে ব্যবস্থা সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তার পক্ষে যুক্তি দিতে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে সরকার জনগণ কর্তৃক কোন নির্বাচিত সরকার নয়, শুধু নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক হবার কারণে সে সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা আদৌ কোন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হতে পারে না। পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তাই দলীয় নির্বাচিত সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
একথা সত্য যে, পৃথিবীর সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু সেসব দলীয় সরকারের স্বরূপ কেমন হয়ে থাকে? সেসব নির্বাচিত হওয়ায় দলীয় সরকার হলেও সেসব সরকারের স্বরূপ হয়ে থাকে নির্দলীয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মত। তাই সেসব সরকার ভুলেও দলীয় সরকারের মত আচরণ করে না। ফলে তারা দলীয় সরকার হলেও তাদের স্বরূপ থাকে নির্দলীয় সরকারের মতই। সেসব গণতান্ত্রিক দেশে দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা রয়েছে সেসব দেশের দিকে একবার চোখ বুলালেই এই সত্যের স্বীকৃতি মেলে। সেসব দেশে দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঐ সরকারের কট্টর বিরোধী দল বিজয়ী হয়ে নতুন সরকার গঠনের ব্যবস্থা রয়েছে, আমাদের মত দেশে কখনও যা কল্পনা করাও সম্ভব নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন