জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর কেন্দ্রীয় নেতা মৌলভীবাজার-২ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেছেন, কতিপয় অতি উৎসাহী পুলিশ যেভাবে তার নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে এতে ৭১ সালের পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বরতা হার মানিয়েছে। তার নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে। পুলিশের কতিপয় অতি উৎসাহী ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মামলা ও নানাভাবে হয়রানি করে ভীতি সঞ্চার করছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই না-মামলার ক্ষেত্র তৈরী করতে নৌকার সমর্থকরা নিজের অফিস নিজেরা ভাংচুর করে তার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন গায়বী মামলায় তার এ পর্যন্ত ৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে প্রেফতার করা হয়েছে। প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন শেষে বের হওয়ার সময় ডিভি পুলিশ জেলা বিএনপির নেতা ও কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজ কে গ্রেফতার করে।
ধানের শীষের নিশ্চিত বিজয় দেখে নৌকার কর্মী সমর্থকদের এমন উগ্র সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এই নির্বাচনী এলাকায় এখন চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। ভোটের দিনকে সামনে রেখে পুরাতন মামলার পাশাপাশি একাধিক নতুন মামলায় চলছে গণগ্রেফতার। তারা পরিকল্পিত ভাবে হামলা করে অফিস ও যানবাহন ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দেওয়া হচ্ছে মামলা। মুঠোফোন ও বাড়িতে গিয়ে দেওয়া হচ্ছে হুমকি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন জানা অজানা মামলায় নাজেহাল মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়ার বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা। প্রতিনিয়ত এমন হামলা মামলার ভয় আর গ্রেফতার এড়াতে ঘর ছাড়া ধানের শীষের কর্মীরা। এখন ভোটের মাঠে চরম আতংক এই নির্বাচনী আসনে।
এ সময় তার সাথে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও ২০ দলীয় ঐক্যজোটের অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাস খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবীদ এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, জেলা বিএনপির নেতা বদরুজ্জামান সজলসহ জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রতীক বরাদ্ধের দিন পর্যন্ত আমার নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও প্রচার কাজ সুষ্টু ভাবে চালাই। প্রতীক পাওয়ার পর আমার ধানের শীষের প্রতীক সহ লিফলেট বিতরণ ও পোষ্টার টাঙ্গাতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা, মামলা,ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গ্রেফতার শুরু করে কুলাউড়া থানার অতি উৎসাহী কতেক পুলিশ। কুলাউড়ার কতেক পুলিশ ক্রমশই বেপরুয়া হয়ে উঠে। এই উৎসাহী পুলিশের সহযোগীতায় কতিপয় সরকার দলীয় সমর্থক আমার নির্বাচনী সভা মঞ্চ ভাংচুর, আমার সমর্থকদের উপর হামলা করে ও গণসংযোগে বাঁধা দেয়। এখন প্রতিনিয়তই এই মাত্রা বাড়ছে। মামলার ক্ষেত্র তৈরী করার জন্য নৌকার সমর্থকরা নিজেদের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। গায়বি মামলা সহ নতুন করে অসংখ্য মিথ্যা মামলায় এ পর্যন্ত ধানের শীষের ৬ শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। চলমান বিভিন্ন পরিকল্পিত ও মিথ্যা মামলায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থককে আসামী করা হয়েছে। আমার কর্মী ও সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে পুলিশ ও সরকার দলের সমর্থকরা সম্মিলিত ভাবে হামলা চালায়। এখন পুলিশের এ ভয়ংকর হামলা ঘটছে এ স্বাধীন দেশের কুলাউড়ায়। অতি উৎসাহী পুলিশ ও সরকারদলীয় সমর্থকদের সম্মিলিত এ হামলায় ধানের শীষের নেতা কর্মী ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। আতঙ্কে আমার কর্মী সমর্থকরা ঘর বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। আমার অনেক ছাপা করা পোষ্টার টাঙ্গাতে না পারা ও লিফলেট বিতরণ করতে না পারায় সে গুলোও ভান্ডেল আকারে পড়ে রয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর বিকালে রাউৎগাঁও ইউনিয়নে গণসংযোগ কালে আমার উপর এবং আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খানসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের উপর পুলিশ বাহিনী কতিপয় অতি উৎসাহী ও নৌকার সমর্থকরা এক হয়ে হামলা চালায়। আমার ব্যক্তিগত সহকারী শাহিদুর রহমান সাহেদ গুরুতর আহত হয় এবং আমার ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই সময় এলাকার সাধারণ জনতার তোপের মুখে পুলিশ পিছু হঠতে বাধ্য হয়। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া ধানের শীষের পক্ষে দেখে আমার প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্ধি নৌকার প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী ও কতিপয় পুলিশ মারাত্মক মারমুখি,মিথ্যা এবং কাল্পনিক মামলা তৈরী করতে পরিকল্পনা করে। সে অনুয়ায়ী কাদিপুর ইউনিয়নের ঢুলিপাড়া নামক স্থানে, ১৬ ডিসেম্বর,নবাবগঞ্জ বাজারে ১৯ ডিসেম্বর, হাজীপুর ইউনিয়ন মনুষ্টেশন বাজারে ১৯ ডিসেম্বর, ভাটেরা ইউনিয়ন বাজারে ২১ডিসেম্বর রাতে এবং ২৩ ডিসেম্বর পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজারে নামমাত্র অফিস নির্মাণ করে সরকারদলের সন্ত্রাসীরা পাতানো অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুর করে আমার সমর্থক ও কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলা দেয়া হয়। আমার নিশ্চিত বিজয় দেখে টাকার বিনিময়ে প্রশাসনের কতিপয় ঘুষখোর কর্মকর্তা সহ উগ্র নেতাকর্মী লেলিয়ে দিয়ে মামলা হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার অপচেষ্ঠায় মত্ত। যদিও মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই তারপরও আমি আশাবাদি। অবাদ সুষ্ট ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিশাল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ। আমার নির্বাচনী এলাকায় ঘটে যাওয়া সকল বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার,জেলা পুলিশ সুপার, দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করে কোন সু-ফল এখনও পাইনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন