সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লড়াইটা দুই খালেদেরও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

কাগজে কলমে দু’দলের ব্যবধান চোখে পড়ার মত। একদিকে কাইরন পোলার্ড, সুনিল নারাইন, আন্দ্রে রাসেল, হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের মতো বিগ হিটার আর সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আছেন নেতৃত্বে। কিন্তু তারপরেও নামের সুবিচার করতে দেখা যায়নি ঢাকা ডায়নামাইটসকে। টুর্নামেন্টে উড়ন্ত শুরু করা দলটির পারফরম্যান্স গ্রাফ হঠাৎ করেই এতটা নিম্নমুখী হয়ে উঠেছিলো যে, প্লে অফ নিশ্চিত করতেই খাবি খেতে হয়েছে।
অথচ ঢাকার চাইতে যোজন যোজন পিছিয়ে থেকেও চমকে দিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস। বলার মতো বড় কোন নাম এখানে নেই। রবি ফ্রাইলিঙ্ক, মোহাম্মদ শাহজাদ, ক্যামেরন ডেলপোটের্র মতো মধ্যমানের বিদেশি এবং মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলী ও আবু জায়েদ রাহির মতো দেশি ক্রিকেটারদের উপস্থিতি। তবুও ঢাকার আগেই প্লে অফ নিশ্চিত করেছে বন্দর নগরীর দলটি।
প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচটি জয়ের পরই কেবল নিশ্চিত হয়েছে শীর্ষ চারে থাকা। এখন সামনের সব ম্যাচই হতে পারে শেষ ম্যাচ। ঢাকা ডায়নামাইটসের সামনে তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ জয়ে ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ তাকিয়ে দলের বড় দুই তারকা আন্দ্রে রাসেল ও সাকিব আল হাসানের দিকে।
টুর্নামেন্টে ঢাকার পথচলায় সাকিব ও রাসেল কখনও বেশ ভালো করেছেন, কখনও ছিলেন বিবর্ণ। বল হাতে সাকিব ছিলেন দুর্দান্ত, ১২ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ২১টি। তবে ব্যাটিংয়ে নিজের সেরাটি দেখাতে পারেননি এখনও। ১২ ইনিংসে ২৭৫ রান করেছেন ২৫ গড় ও ১১৪.৫৮ স্ট্রাইক রেটে। রাসেল ২৫৫ রান করেছেন ৩১.৮৭ গড় ও ১৫০.৮৮ স্ট্রাইক রেটে। উইকেট ১২ ম্যাচে ১২টি।
ফাইনালের পথে টিকে থাকার লড়াইয়ে এই দুজনের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় আছেন ঢাকার কোচ। আজ এলিমিনেটরে চিটাগং ভাইকিংসের মুখোমুখি হবে ঢাকা, প্রাথমিক পর্বে যাদের কাছে দুবারই হেরেছে তারা। এবার হারা মানে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া। তৃতীয় দেখায় ভিন্ন কিছু করতে খালেদ মাহমুদের ভরসা সাকিব ও রাসেল, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ। জিতলে থাকব, হেরে গেলে বিদায়। আমরা এর আগে চিটাগংয়ের বিপক্ষে হেরেছিলাম। তবে কালকে (আজ) একটি নতুন দিন। আমরা খুব কাছাকাছি গিয়ে তাদের কাছে হেরেছি। আন্দ্রে রাসেল এমন একজন ক্রিকেটার, যে কিনা একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখে। এছাড়া আমরা সাকিবের কাছ থেকেও রান পাইনি কয়েকটি ম্যাচে। সাকিব তো বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদের মধ্যে একজন। আশা করি অধিনায়ক সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিবে।’
আগের দুই ম্যাচে দলে যোগ হওয়া উপুল থারাঙ্গার ওপরও তার আস্থা বেশ, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, বিদেশি ক্রিকেটারের মধ্যে উপুল এসেছে, তাতে নতুন একটি ফরমেশন তৈরি হয়েছে দলে। আশা করি, যে বিদেশি ক্রিকেটাররা এখনও সেভাবে পারফর্ম করেনি, হয়তো এই সময়ের জন্যই করেনি। এখন হয়তো জ্বলে উঠবে।’
তবে তাকে চোখ রাঙাচ্ছে চিটাগং ভাইকিংসের আরেক ‘খালেদ’, পেসার খালেদ আহমেদ। লিগ পর্বে ১২ ম্যাচে ৬ জয় ও ৬ হারে টেবিলের ৪ নাম্বারে ঢাকা। সমান সংখ্যক ম্যাচে ৭ জয়ে টেবিলের তিনে চিটাগং। বলা বাহুল্য ঢাকার এই ৬ হারের দুটিই ভাইকিংসদের বিপক্ষে। আর এখানেই স্বস্তি, আত্মবিশ্বাস চিটাগং পেসারের। কেননা আজকের এলিমিনেটর ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ সেই চেনা শত্রু। যাদের সঙ্গে দু-দুটি লড়াইয়ে জয়ের সুখস্মৃতি এখনো তরতাজা, ‘ঢাকা বড় দল। তাতে কোন সন্দেহ নেই। সেদিক থেকে আমাদের কোন সমস্যাও নেই। শেষ দুইটা ম্যাচ ওদেরকে আমরা হারিয়েছি। এখানেও চাইবো যে এই ম্যাচেও ভালো ক্রিকেট খেলে জিতবো।’ মোহাম্মদ শাহজাদ টুর্নামেন্টের শেষটায় খেলতে না পারলেও চিটাগংয়ের জন্য সুখবর আছে। হ্যামস্ট্রিং চোটে সপ্তাহখানেক বিশ্রামে থাকা রবি ফ্রাইলিঙ্ক এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরছেন। এই ম্যাচ উইনারকে পাওয়া চিটাগংয়ের জন্য সবথেকে বড় স্বস্তি। গতকাল মিরপুরে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন ফ্রাইলিঙ্ক। প্রোটিয়া এ অলরাউন্ডারকে নিয়ে খালেদ বললেন, ‘আমি যা দেখছি সে মোটামুটি সুস্থ।’
তবে একটি বিষয়ে খালেদের দুশ্চিন্তা লক্ষ্য করা গেল। সেটা হিটার নিয়ে। যেহেতু ঢাকার হিটারের লিস্ট বেশ বড়। নক আউট ম্যাচ। হেরে গেলেই বিদায় ঘণ্টা, ‘আসলে আমাদের দলে বিগ হিটার তেমন নাই। ওদের টিমে বিগ হিটার আছে। এখানে আমরা একটু পিছিয়ে আছি যে বিগ হিটার কম। ওদের টিমে বিগ হিটার বেশি। ওদেরই মানে হিটিং করার জোনটা বেশি থাকবে। আমাদের হিটিং করার জোন কম।’ তবুও জয়ের বিকল্প ভাবতেই চাইছেন না এই উদীয়মান ভাইকিংস ফাস্ট বোলার, ‘শেষ দুই ম্যাচ যেমন খেলেছি, চাইবো এর থেকেও ভালো ক্রিকেট খেলে এই ম্যাচটা জিতবো।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন