বসন্ত ঋতুতে মাঠে প্রান্তরে যে ফুলগুলো সহজেই নজর কেড়ে নেয় তার অন্যতম হলো বনজুঁই। কেউবা একে আবার ভাট বা ঘেটু ফুলও বলে। এই ফুল দিনে ফোটে এবং রাতে সৌরব ছড়ায়। চাষ নয়, কিংবা শখের বশে ও কেউ লাগায় না। এমনিতে অযত্ন আর অবহেলায় জন্মালেও এ ফুল দৃষ্টি কাড়ে সব মানুষের। মীরসরাইসহ দেশের প্রায় সব এলাকায় কম বেশি এ ফুল দেখা যায়। বনজুঁই গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। মূলত এটি বুনো ফুল। ঋতুরাজ বসন্তে দেখা যায় এই ফুল। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্লেরেনদ্রুম ভিস্কোসুম। এটি গ্রামবাংলার অতিপরিচিত উদ্ভিদ। ভারবেনাসেইগণের এই ফুল ল্যামিয়াসেই পরিবারভুক্ত। এটি ইনফরচুনেটাম প্রজাতির। গাছের প্রধান কান্ড সোজাভাবে দন্ডায়মান, সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে কিছুটা পান পাতার আকৃতির। এমনকি খানিক খসখসে। ফুলের পাপড়ি পাঁচটি এবং পাপড়ির গোড়ার দিকটা হালকা বেগুনী রঙের। প্রতি ফুলে চারটি করে পুংকেশর সামনের দিকে বেরিয়ে আসে। পুংকেশরের অগ্রভাগ হয় স্ফীত ও কালো। রাতে বেশ গন্ধ ছড়ায় এই ফুল। সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এ ফুল গ্রামের মেঠো পথের দুই ধারে ফুটে থাকতে দেখা যায়।
কবি ও সঙ্গীত শিল্পী রণজিৎ ধর বলেন, গাছ ভর্তি বনজুঁইয়ের সমারোহ দেখে সব বয়সী মানুষেরই মন জুড়িয়ে যায়। ছোট ছোট শিশুরা এ ফুল নিয়ে খেলা করে। আমরাও ছোটবেলায় এ ফুল নিয়ে খেলা করতাম। বনজুঁই বা ভাট অবহেলিত ফুল হলেও এর রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসালয় থেকে জানা যায়, এ ফুল শুধু সৌন্দর্য বিতরণ করে না। এর আছে নানা উপকারিতা রয়েছে। কাউকে পোকামাকড়ে কামড় দিলে ভাট ফুল রস করে ওই স্থানে দিলে দ্রুত উপশমের কাজ করে। অনেকে আবার কৃমি দূর করার জন্য এ ফুলের রস খেয়ে থাকেন। গরু-ছাগলের গায়ে উকুন হলে ভাট গাছের পাতা বেটে দুই-তিন দিন লাগালে উকুন মরে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন