শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

পণ্যের মানে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বাণিজ্যমেলা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পণ্যের মান নিয়ে ক্ষুব্দ ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। গুলিস্থান বা নিউমার্কেটের মতো দেইখা লন-বাইছা লন রব শুনে বিরক্ত তারা। অনেকের মতে, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা যেন শুধু নামেই আন্তর্জাতিক। ফুটপাতের পণ্যে সয়লাব মেলা প্রাঙ্গণ। আর কিছু কিছু দোকানি উচ্চস্বরে ডেকে ডেকে পণ্য বিক্রি করায় বিরক্তের পাশাপাশি পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা। তবে বরাবরের মতো এসব অভিযোগ মানতে নারাজ আয়োজক কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, আমরা মেলায় আর্ন্তজাতিক মানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্টল বরাদ্দ দিয়েছি। একই সঙ্গে পণ্যের মান দেখভালের জন্য কাজ করছে ভোক্তা অধিদফতর। গতকাল রোববার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আগারগাঁও বাণিজ্যমেলা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের হকারদের মতোই মেসার্স ফ্যাশন মেলা এবং মায়ের দোয়া ওড়না হাউজের দোকানের কর্মচারীরা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে উচ্চস্বরে চিৎকার করছেন। আর বলছেন, আসেন আপা আসেন, দেইখা লন ১০০, বাইছা লন ১০০, হিজাব লন, ওড়না লন ১০০, একদাম একদর। ঠিক একইভাবে ১৫০ টাকা দরে নামাজের হিজাব ও শাল বিক্রি হচ্ছে, মেয়েদের গাউন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ছেলেদের শার্ট আর মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের ওয়ান পিস বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। এছাড়াও দোকানগুলোতে বিভিন্ন রকম ছোট ও মাঝারি লেডিসদের ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে একদাম ১৫০ টাকা। মেলার ৫৮ নম্বর স্টল মেসার্স ফ্যাশন মেলায় সুতিসহ অন্তত ১৫-২০ ধরনের হিজাব-ওড়না একদাম ১০০ টাকা করে ডেকে ডেকে বিক্রি করছে। দোকানগুলো ছেলেদের নানা রংয়ের শার্ট বিক্রি করছে ২০০ টাকায়। একই দামে বিক্রি করছে মেয়েদের কামিজ। তবে মেয়েদেরটিকে বলা হচ্ছে ওয়ান পিস। এসব দোকানে বিভিন্ন রকম ছোট ও মাঝারি লেডিসদের ব্যাগ বিক্রির হচ্ছে একদাম ১৫০ টাকায়। দোকানের কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা কম দামে ভালো কাপড় বিক্রি করছি। তাই আমাদের বিক্রিও ভালো হচ্ছে। মায়ের সাথে মেলায় আসা রুহি দাম কম পেয়েছি তাই দুটি গাউন কিনেছি।

এদিকে, মেলা শুরুর আগে প্রবেশমূল্য বাড়ানোর কারণে অনেকে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এবার এত দামে টিকিট কেঠে মেলায় এসব নি¤œমানের পণ্য বিক্রি দেখে অবাক ক্রেতা-দর্শণার্থীরা। তারা বলছেন, আগের বছরের তুলনায় প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা বাড়ানো হলেও আর্ন্তজাতিক মানের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়নি আয়োজক কর্তৃপক্ষ। যাকে তাকে স্টল বরাদ্দ দিয়ে মেলার মান প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের।
মেলা প্রাঙ্গনে কথা হয় রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা কাওছার আজিজের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা ৪০ টাকা দিয়ে প্রবেশ করে কি দেখলাম। একবার এই টাকা দিয়ে মানুষ প্রবেশ করলে আর দ্বিতীয়বার আসবে না। যেভাবে গুলিস্থানসহ রাজধানীর ফুটপাতের মতো পণ্য বিক্রি হচ্ছে মনে হচ্ছে এটা আধুনিক মানের কোন ফুটপাত যেখানে ৪০ টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করতে হয়।

যদিও মেলার সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ বিষটি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার মেলায় পণ্যের গুণগত মান অনেক ভালো। মেলায় যাতে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি না হয় সে জন্য নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মেলার মান বাড়ানোর জন্য স্টল সংখ্যা কমানো হয়েছে। এ ছাড়া আগে বিদেশি প্যাভিলিয়নে নিম্নমানের দেশি পণ্য বিক্রি হতো, এবার যাতে এমনটি না হয় সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এবার মেলায় নিম্নমানের পণ্য প্রবেশ করবে না। মেলায় যাতে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি না হয় সে জন্য ভোক্তা অধিদফতরের অফিস রয়েছে। মেলায় আমরা তাদের জায়গা দিয়েছি। কেউ নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন