কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সরিষার ভালো ফলনে অনেক কৃষক খুশি। বিশেষ করে চরাঞ্চগুলোতে বেড়েছে সরিষা চাষের আগ্রহ। কৃষি জমিতে ধান বা অন্যান্য ফসল উৎপাদনের পর ফাঁকা সময়টাতে এবং পরিত্যক্ত জমিতে সরিষা চাষ করে বাড়তি আয় করছে কৃষকরা। ধানের দাম কম হওয়ায় এবং বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে বলে মনে করছেন কৃষকরা। এবারের শীত মৌসুমেও সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্যমন্ডিত হয়েছিল চারপাশ। কয়েকদিন আগেও নাগেশ্বরীর ২ হাজার ৮শ’ ২০ হেক্টর জমিতে ছিল সরিষার হলুদে ফুলের সমারোহ। এসব ফুলে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহেও ব্যস্ত ছিল। কয়েকদিনের ব্যবধানেই এসব ফুলের পরিবর্তে ফল হয়ে সবুজ দানায় পরিপূর্ণ হয়েছে সরিষা। সে দানায় আশায় বুক বেঁধেছে চাষিরা। এখন জমি থেকে সরিষা তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। তাদের প্রত্যাাশা সরিষা বিক্রিতে ন্যায্যমূল্য পেলে বন্যার ক্ষতি এবং আমন ধান বিক্রিতে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে সক্ষম হবেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেরকে পরিত্যাক্ত ও নিঁচু জমিতে চাষের জন্য মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের ১ হাজার ১শ’ কৃষকের প্রত্যেককে ১ কেজি করে উন্নত জাতের বারী-১৪ নামক সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি এবং ১০ কেজি করে পটাস সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও নিজস্ব উৎপাদিত দেশি সরিষা বীজ বুনেছিল অনেক কৃষক।
এ ব্যাপারে কেদার ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সামাদ, কচাকাটা ইউনিয়নের আলাউদ্দিন আজাদ, মফিজুল ইসলাম, আজিবর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, হালিম, নারায়ণপুর ইউনিয়নের আব্দুল জব্বার, আব্দুস সাত্তার, আজিজার রহমান, মকবুল হোসেন, বল্লভেরখাস ইউনিয়নের কায়ছার, সফিয়ার রহমান, জয়নাল, সৈফুর রহমানসহ অনেকেই একর প্রতি ১৫ মণ পর্যন্ত সরিষা ঘরে তোলার আশা প্রকাশ করছেন। এছাড়াও বর্তমানে সরিষা বিক্রিতে মণ প্রতি ১৩শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা মূল্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এসব কৃষক। তাদের দাবি সরিষার দাম বাড়ানো না হলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে না এবং কৃষকরাও সরিষা চাষে আগ্রহ হারাবেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাসুজ্জামান বলেন, উপজেলায় সরিষা উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে। যা অতিক্রম করে আরও ১শ’ ২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এবারের ফলন ও দাম ভালো থাকায় আগামীতে সরিষা চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন