আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জনশুমারিতে নারী-পুরুষের পাশাপাশি হিজড়াদের আলাদা লৈঙ্গিক পরিচয়ে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম। গতকাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (বন্ধু) আয়োজিত ‘জনশুমারিতে হিজড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভ‚ক্তকরণ’ অনলাইন পরামর্শক সভায় মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে, জানুয়ারির প্রথম দিকেই জনশুমারি অনুষ্ঠীত হবে। তিনি বলেন, জনশুমারির নির্দিষ্ট ফরমে নারী-পুরুষের পাশাপাশি আলাদা লিঙ্গ হিসেবে হিজরা অপশন থাকবে। এই জনশুমারির মাধ্যমে হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। তাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু হিজড়ারা বেশীরভাগই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ভাসমান, তাই সবাইকে জনশুমারির আওতায় আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম এনডিসি বলেন, প্রত্যকে মানুষের জন্য আত্মস্বীকৃতি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ, তাই জনশুমারিতে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদের স্বেচ্ছায় অন্তর্ভূক্ত হওয়া উচিত। এজন্য পরিবার সদস্যদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। নাসিমা বেগম বলেন, জনশুমারিতে যারা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ করেন তাদের হিজড়া ইস্যুতে ভালো ভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহায়তা বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।
জনশুমারিতে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের যুক্ত করতে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহায়তায় ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র সঙ্গে কাজ করছে বন্ধু। ২০২১ সালের জনশুমারিতে আলাদা ভাবে হিজড়া লিঙ্গ যুক্ত হওয়ায় বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, লৈঙ্গিক স্বীকৃতির পর জনশুমারিতে সংযুক্ত হওয়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটি বড় অর্জন। হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা জানা গেলে, তাদের জীবনমান উন্নয়ন আরো দ্রুততর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জনশুমারিতে হিজড়াদের সংযুক্তি ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)- ২০৩০’ অর্জনে সরকারের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন বক্তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন