কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই গত তিনদিনে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, দমকা হাওয়া ও ঝড়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে শত শত একর জমির আমন ক্ষেত। সদ্য শীষ বের হওয়া ও আধাপাকা ধান ক্ষেত লুটিয়ে পড়ায় ভেঙে গেছে কৃষকের স্বপ্ন।
বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় জেলার চলতি মৌসুমের আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া বন্যা থেকে বেঁচে যাওয়া আমন ধানের সবে মাত্র ফুল এসেছে। এইসময় বৃষ্টি আর বাতাসে ফুল ঝড়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেক ধান বাতাশে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। যেগুলোতে কোন প্রকার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা নেই। এছাড়া টানা বৃষ্টিপাতে শাক সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে ধারণা কৃষকদের।
ইতিমধ্যে জেলার বেশীরভাগ উচুস্থানের লাগানো আমন ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জেলার, নাগেশ্বরী ভূরুঙ্গামারী, রাজারহাট, উলিপুর, সদর এবং ফুলবাড়ী উপজেলার বেশিরভাগ উচু এলাকার ক্ষেতের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন, সায়েদ আলী ও জহুরুল ইসলাম জানান, তাদের প্রত্যেকের দেড় থেকে দুই বিঘা করে আমন ক্ষেত বাতাসে হেলে পড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় আমরা বড় দুশ্চিন্তায় আছি। আর কয়েকদিন পরেই ক্ষেতে ধান পাঁকতো। জানি না আমাদের কি হবে।
নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের কৃষক শহিদ মিয়া, আবুল হোসেন জানান, তাদের আমন ক্ষেতে কেবল মাত্র ফুল এসেছে এর মধ্যে বাতাস আর বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দমকা হাওয়ায় জেলার আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি সবজিসহ মরিচেরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক শামসুদ্দিন মিঞা জানান, এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় ২হাজার ২৭৪হেক্টর আমনের ক্ষেত মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে এর মধ্যে প্রায় ৯শ' হেক্টর জমির আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদে হেলে পড়া ধান গাছগুলো ছোট ছোট করে আঁটি বেঁধে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেয় হচ্ছে। ধান গাছ গুলো তুলে দিলে কিছুটা রক্ষা পাবে কৃষক।
কৃষিবিভাগ আরো জানান, এ মৌসুমে ১লাখ ১৫হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে আমন চাষ হয়েছে প্রায় ১লাখ ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে।
এর আগে বন্যায় ৯হাজার ৯৭ হেক্টর আমনের ক্ষতি হয়েছে। এবার বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ার কারনে আরেক দফা ক্ষতিতে পড়েছে আমন ধান। ফলে চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন