এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে খ্যাত রাজশাহীর বাগমারার আসন্ন পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠিত হচ্ছে আত্মগোপনে থাকা সর্বহারা সংগঠনের ক্যাডাররা। তারা ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাগমারায় চিহ্নিত সর্বহারা ক্যাডার ও খুনিরা আত্মগোপনে ছিল। বর্তমানে সর্বহারার চিহ্নিত খুনিরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করায় জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, তাদের কর্মকান্ড জনমনে নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা দিনের বেলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় দিয়ে চলে। আর রাতের বেলায় সর্বহারা সংগঠনকে সংগঠিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ধারে টাকা চাওয়া ও বাকিতে মোটা অঙ্কের টাকার জিনিসপত্র ক্রয় করছে। এতে করে ওই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আসন্ন পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ বাগিয়ে নেয়ার জন্যই তারা পুনরায় সংগঠিত হওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শান্তির বাগমারাকে আবারও রক্তাক্তে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে আত্মগোপনে থাকা ও প্রকাশ্যে থাকা সর্বহারা ক্যাডাররা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকলেও ভীতি কাটছেনা জনমনে। বাগমারায় সর্বহারার হাতে জবাই হন যুগিপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, তাহেরপুর পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আলো খন্দকার, বিএনপি নেতা তাহেরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল, জাপা নেতা দুলু সরকার, বিএনপি নেতা সাবেক ঝিকড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মরু, হারিমকুৎসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খামারুর দুই ছেলে, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশকয়েকজন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা, গোয়ালকান্দি, হামিরকুৎসা, ঝিকড়া ও যুগিপাড়ায় সর্বহারা অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত রয়েছে। বর্তমানে ওই সকল এলাকাগুলোতেই রাতের আঁধারে গোপানে গোপেন তারা সংগঠিত হয়ে মিটিং করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমানের বলেন, আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। আত্মসমর্পণকৃত সর্বহারা ক্যাডারদের প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর দারিতে রয়েছে। তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ে কোনো ফায়দা হাসিলের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে ওই সকল এলাকার জনগণখে সজাগ থেকে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। কোনোরূপ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সুযোগ দেয়া হবে না। শান্তির বাগমারাকে যারাই অশান্ত করার চেষ্টা করবে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন