খুলনাঞ্চলের নদ নদী থেকে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে হুমকির মুখে পড়ছে বেড়িবাঁধ, ফসলি জমি, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। খুলনায় কাজিবাছা নদীতে একটি মাত্র বালুমহালে ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ঠিকাদার। বাকি সবই অবৈধ। অভিযান স্বত্তে¡ও থেমে নেই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই বালুর রমরমা ব্যবসা।
খুলনার ভৈরব, কাজিবাছা, আমতলী, সালতা, মরা ভদ্রা, হরি, শাকবাড়িয়া ও কপোতাক্ষসহ বিভিন্ন নদ-নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বালু মহল ইজারা না নিয়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এ ধরনের রমরমা ব্যবসা চলছে অবাধে। আর ভরাট হচ্ছে শহর-গ্রামের সব জলাশয়। এছাড়া বালু’র সরবরাহ পাইপ লাইনের কারণে দুর্ঘটনাসহ চলাচলে নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পথচারিরা।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলমান থাকলেও স¤প্রতি কেসিসি ও উপজেলা প্রশাসন এসব অবৈধ বালুর পাইপ লাইন উচ্ছেদসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ফলে স্বস্তি ফিরেছে জনমনে।
সম্প্রতি খুলনার দাকোপে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে হাফিজুল ইসলাম শেখ ওরফে খোকনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া বিল থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে রাজু আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। বটিয়াঘাটা উপজেলার আমতলী নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনে দায়ী ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১৫দিনের কারাদন্ড দেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদুজ্জামান। তাতেও বন্ধ হয়নি খুলনায় অবৈধ বালু উত্তোলন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনার রূপসার চর মাথাভাঙ্গা, জাবুসা এলাকা, বটিয়াঘাটার আমতলী নদীর অনুমোদনহীন বালু পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভরাট হচ্ছে বিভাগীয় শহর খুলনার নিম্নাঞ্চল-জলাশয়। শহরের জনবহুল আবাসিক এলাকার রাস্তার উপর দিয়ে পাইপ নিয়ে অবৈধ বালু ব্যবসা করছেন প্রভাবশালীরা। বেড়িবাঁধ ভাঙন, ঘরবাড়ীসহ স্থাপনার ক্ষতি, ফসলি জমি নষ্ট ও জনভোগান্তির সৃষ্টি হলেও নিরুপায় জনপ্রতিনিধিরা তাকিয়ে আছেন জেলা প্রশাসনের দিকেই।
নগরীর ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজমল আহমেদ তপন বলেন, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ২৮, ৩০, ৩১নং ওর্য়াডের নিম্নাঞ্চল ও জলাশয় ভরাট করছে। তাদের পাইপ স্থাপনে ব্যাপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে মর্মে স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সূত্রমতে, খুলনায় কাজিবাছা নদীতে একটি মাত্র বালুমহালে ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ঠিকাদার। বাকি সবই অবৈধ। জেলার ডুমুরিয়ার সালতা, মরা ভদ্রা, হরি নদী, রূপসার চর মাথাভাঙ্গা, জাবুসা এলাকা, বটিয়াঘাটার আমতলী নদী, কয়রার কপোতাক্ষ নদের গাববুনিয়া, হরিণখোলা ও মদিনাবাদ লঞ্চ ঘাট, শাকবাড়িয়া নদীর কাটকাটা, ৬নং কয়রা, কয়রা নদীর গিলাবাড়ি, চাঁদআলীসহ কয়েকটি স্থানে ড্রেজার দিয়ে মাসের পর মাস বালু উত্তোলন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন