কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মলিহাদ ইউনিয়নের গোপিনাথপুর পাগলা গ্রামে আবাদি জমির মাঝখানে আইন অমান্য করে নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটা। মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই নতুন করে আরও কয়েকটি ইটভাটা গড়ে উঠছে আবাদি জমিতে। ফসলি জমিতে ইটের ভাটার কারণে খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্তে কুষ্টিয়া জেলা এবার পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চল, আবাদি জমি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকার ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু গোপিনাথপুর পাগলা গ্রামে আবাদি জমির মাঝখানে নির্মাণ করা হয়েছে এমএমএসবি নামক টিনের চিমনির ইটভাটা। সেখানে দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রও। জানালেন ভাটা মালিক নিজেই।
ইটভাটার আশপাশে রয়েছে বিভিন্ন ফসলের আবাদ। ইটভাটার ধোঁয়া, গ্যাস, ধুলাবালির কারণে এসব খেতের ফসল উৎপাদনে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তাছাড়া টিনের চিমনির ইটভাটা পরিবেশের জন্যও ব্যাপক ক্ষতিকর।
সরেজমিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের গোপিনাথপুর পাগলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চিমনির চুল্লি বসিয়ে আবাদি জমিতে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ভাটায় সংগৃহীত আছে প্রচুর কাঠের খড়ি।
জানা যায়, এটা এক সময়কার কাপড় ব্যবসায়ী মইন উদ্দিনের ইটভাটা। এদিকে মইন উদ্দিন প্রভাবশালী হওয়ায় আশপাশের জমির মালিকরা কোনো কথা বলতে সাহস পাইনি।
তবে তারা জানান, ভাটার কারণে জমিতে ফসল উৎপাদন কমে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইটভাটার দক্ষিণ দিকের এক একর জমির মালিক বলেন, ‘শুনেছি, আবাদি জমির মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ করা বেআইনি কাজ। তা হলে এ ইটভাটা কীভাবে হচ্ছে?’ ইটভাটার মালিক মইন উদ্দিন বলেন, এবছর প্রথম আমি এই ভাটা লিজ নিয়েছি। ইটভাটা চালাতে কি কি কাগজ লাগে তা আমার জানা নেই। তবে কয়েকজনের কাছে শুনেছি ভ্যাট অফিসের কাগজ থাকলেই হয়। এ সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।
পরিবেশ অধিদফতর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান জানান, কুষ্টিয়াতে মোট ১৪৫ থেকে ১৫০টি ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি ইটভাটায় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিগুলো সব অবৈধ। ইতোমধ্যে আমরা অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। এবছর ৩টি ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে কথা হয়েছে পর্যায়ক্রমে সবগুলো অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন