শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আরো ১ জনের মৃত্যু

সালথায় তান্ডবের ঘটনা অজ্ঞাত ৪ হাজার জনের নামে মামলা : আটক ১৩

আনোয়ার জাহিদ, ফরিদপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস ও থানায় তান্ডবের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ মামলায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও প্রায় ৪ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সালথা থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এদিকে তান্ডবের ঘটনায় মিরান মোল্যা নামে আহত আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের দরজাপুরুরা গ্রামের আব্দুর রব মোল্যার ছেলে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছেন ভাওয়াল ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া। এর আগে এ ঘটনায় জুবায়ের হোসেন নামে এক যুবক নিহত হয়। এ নিয়ে মোট দুই যুবকের মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালথা থানার ওসি আসিকুর রহমান।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, উপজেলা পরিষদ ভবন, ভ‚মি অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও থানা এলাকায় তান্ডবের ঘটনায় ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ ১৩ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মামলার এজাহারভুক্ত আসামি উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামের ক্বারী ইনছুর শেখের ছেলে মো. নুরু শেখ, বিনোকদিয়া গ্রামের করিম কাজীর ছেলে মো. সজিব কাজী, ইউসুফদিয়া গ্রামের শাহজাহান মাতুব্বরের ছেলে রাব্বি মাতুব্বর, মিনাজদিয়া গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো. ইউনুস মাতুব্বর ও গোপালিয়া গ্রামের সালাম মোল্যার ছেলে আমির মোল্যা। অন্যরা হলেন- ফুকরা গ্রামের গ্রামের সুলতান শেখের ছেলে আবুল কালাম শেখ, রিপন শেখ, ইসরাইল মোল্যার ছেলে ইলিয়াস মোল্যা, চিলারকান্দা গ্রামের খালেক শেখের ছেলে শহিদুল শেখ, পিসনাইল গ্রামের গ্রামের ঝিলু ফকিরের ছেলে মো. রুবেল ফকির, সোনাপুর গ্রামের মিজানুর শেখের ছেলে মো. রাকিবুল ইসলাম ও বিনোকদিয়া গ্রামের আয়ুব মোল্যার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসক অতুল সরকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সালথার তান্ডবের ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের দুটি কমিটি করা হয়েছে। এর একটিতে প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. তাসলিমা আলীকে। অপর কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম মোল্যাকে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই দুই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে ধংসযজ্ঞ শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এলাকার অবস্থা এখনো থমথমে। উপজেলা পরিষদজুড়ে শুধুই ক্ষত-বিক্ষত চিহ্ন। উপজেলা সদরের বাতাসে পোড়া গন্ধ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভাঙা কাঁচ আর আসবাবপত্রের টুকরা। মানুষের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। টানা তিনঘণ্টা তান্ডবে লন্ডভন্ড উপজেলা পরিষদ এলাকা। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যাক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী বলেন, গত সোমবার রাতে চালানো তান্ডবের ঘটনা এখনও চোখে ভাসছে। স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, সালথা দাঙ্গাপ্রবণ এলাকা হলেও এমন ঘটনা কখনো ঘটতে দেখিনি। এই ধরনের ভয়াবহ তান্ডব প্রথম দেখলো সালথাবাসী। এ কারণে সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন