শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রিয়ালের পথ কঠিন করল চেলসি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এর আগে কখনো মুখোমুখি হয়নি রিয়াল মাদ্রিদ-চেলসি। অঝোরে বৃষ্টির মধ্যে গতপরশু আলফ্রেড ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে প্রথম দেখায় জেতেনি কেউই। তবে সেমির প্রথম লেগে ১-১ গোলের ড্রতে চেলসিরই বেশি খুশি হওয়ার কথা। যদিও টমাস টুখেল জানেন, প্রথমার্ধের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে তারা ফাইনালের পথে অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারত। তারপরও রিয়ালের বিপক্ষে পাঁচবারের দেখায় অপরাজিতই রইলেন টুখেল।
কেউ যদি ভেবে থাকেন টুখেলের চেলসি অ্যাওয়ে ম্যাচে ডিফেন্ড করার জন্য নামবে তাহলে শুরু থেকেই সেটা ভুল প্রমাণিত করেছে তারা। ম্যাচের প্রথম থেকেই চেলসি জানান দিয়েছে তারা গোল পেতেই এসেছে মাদ্রিদে। প্রথম গোলটা পেয়ে যেতে পারত মিনিট দশেকের মধ্যেই। দারুণ একটা আক্রমণ থেকে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচের হেড গিয়ে পড়ে টিমো ভের্নারের কাছে। মাত্র ছয় গজ দূর থেকে জার্মান স্ট্রাইকারের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন থিবো কোর্তোয়া। তবে কোর্তোয়ার কৃতিত্বের চেয়ে অত কাছ থেকে গোল মিস করার জন্য সম্ভবত ভের্নারের ব্যর্থতাই বেশি। এই মৌসুমে সহজ গোল মিস করার লিস্ট আরও বাড়ল ভের্নারের।
রিয়ালকে শুরু থেকেই চেপে ধরা চেলসিকে গোলের অপেক্ষাও খুব একটা করতে হয়নি। ১৪ মিনিটেই পেয়ে যায় মহামূল্য অ্যাওয়ে গোলটা। বক্সের ভেতরে বল পেয়ে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ একজন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডারকে দিলেন ছিটকে। এরপর সামনে যখন ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া, দারুণ এক স্টেপওভারে ছিটকে দিলেন তাকে। গোলমুখে ডিফেন্ডারের জটলার মাঝেও বলটা জড়ালেন জালে।
তবে এর আগে-পরে, একগাদা সুযোগ তৈরি করেছে চেলসি। তবে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোলের দেখা আর মেলেনি। সবচেয়ে ভালো সুযোগটা এসেছিল ম্যাচের নবম মিনিটে। পুলিসিচের করা একটা হেডার গিয়ে পড়ে টিমো ভের্নারের পায়ে। তবে তিনি তা কোর্তোয়ার পায়ে মারেন, গোলরক্ষকের সেভ রিয়ালকে রাখে বিপদমুক্ত। এরপর চেলসির অনেক সুযোগ হারিয়ে গেছে কখনো ফরোয়ার্ডদের পজিশনিং, কখনো দূর্বল শটে।
বড় ম্যাচে এক আধটা সুযোগ মিললেই কাজে লাগাতে হয়, তবেই আসে সফলতা। সেখানে চেলসি সুযোগ পেয়েছে অজ¯্র, কাজে লাগাতে পারল কেবল একটি। যার খেসারত স্বাভাবিকভাবেই দিতে হয়েছে চরমভাবে। কারিম বেনজেমা দারুণ এক গোল করে ২৮ মিনিটে সমতায় ফেরান রিয়ালকে। এর আগে তারই একটা শট গোলপোস্টে না লাগলে হয়তো ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই সুযোগ নষ্ট করেছে পাল্লা দিয়ে। প্রথমার্ধে শুরু হওয়া বৃষ্টি আরও বেগবান হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে, যার ফলে খেলার ধারও কমেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। ফলে ১-১ ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে। কিন্তু এরপর চেলসি বা রিয়াল, কেউই সেই গোলের কাছাকাছি যেতে পারেনি। জিয়েখ ফ্রিকিক থেকে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কোর্তোয়া ছিলেন জায়গামতো। ক্রুসের একটা শট দিকবদল করে একটুর জন্য চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। সেই কর্নার থেকেই ভারানের হেড চিলওয়েলের মাথায় লেগে আরেকটু হলে ঢুকে যেত জালে। কিন্তু সেটা হয়নি। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল হয়নি এই অর্ধে। এর মধ্যেও নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন আজকের ম্যাচসেরার দাবিদার কান্তে। তবে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর টুখেলের চেয়ে জিদানই বেশি মন খারাপ করবেন।
ফিরতি লেগে চেলসির একটা গোলশূন্য ড্র করলেই চলবে। তবে ফাইনালে যেতে হলে রিয়ালকে করতে হবে গোল। আপাতদৃষ্টিতে মাদ্রিদের কাজটা কঠিন মনে হলেও দ্বিতীয় লেগে ফিরবেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস, ফেরলান্দ মন্ডি, ফেদে ভালভার্দেরা। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ম্যাচে ফিট থাকলে শুরুর একাদশে থাকতে পারেন ইডেন হ্যাজার্ডও। সব মিলিয়ে এখন চেলসির কাজটাই কঠিন মনে হচ্ছে।
রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে গোলসহ ড্র। কোথায় চেলসির আনন্দিত হওয়ার কথা, সেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম সেমিফাইনালের পর আক্ষেপে পুড়ছেন দলটির কোচ। আমাদের শান্ত থাকতে হয়েছিল এবং আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে হয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধে খুব কৌশলগত লড়াই হয়েছে। আপনারা হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে আমরা কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন