পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল ব্যতীত শব্দটি সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ইসরাইলের সাথে নতুন সর্ম্পক তৈরি করা মানে বায়তুল মোকাদ্দাসে হামলাকারীকে স্বীকৃতি দেয়া। ইসরাইল ইসলামের চির শত্রু এবং গোটা মানবতার শত্রু। কারণ তারা পুরো পৃথিবীতে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে। সরকার পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল ব্যতীত শব্দটি সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অনতিবিলম্বে পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল শব্দটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল শব্দটি সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ রোববার বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরাইল ব্যতীত শব্দটি সরিয়ে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশ সরকার কেন নতুন করে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে? এধরণের সিদ্ধান্ত মুসলিম উম্মাহ কোনভাবেই মেনে নেবে না। নেতৃদ্বয় বলেন, ইসরাইল শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য এখন একটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইল ইসলামের চির শত্রু এবং গোট পৃথিবীর শত্রু। কারণ তারা পুরো পৃথিবীতে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে। মানবাধিকারকে ধ্বংস করছে। আজ রোববার এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ছাড়া বিশ্বের সব দেশের ক্ষেত্রে বৈধ’ কথাটি তুলে দেয়ায় সচেতন জনে মনে সংশয় ও সন্দেহ হচ্ছে, তাহলে কী সরকার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করতেই পাসপোর্ট থেকে সে কথাটি তুলে দিতে যাচ্ছে? অবৈধ কথাটি তুলে দিয়ে সরকার ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে মজলুম ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে তার অবস্থান স্পষ্ট ছিল, অথচ এখন তার কন্যা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে ফিরে এসে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অত্যন্ত খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তারা পাসপোর্টে ইসরাইল সর্ম্পকে পূর্বের লেখা বহাল রাখার জোর দাবি জানান।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টর : পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ শব্দ দুটি বাদ দেয়া মানে ইসরাইলকে খুশি করে ফিলিস্তিনি মুসলমানকে চপেটাঘাতের শামিল। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান ও মহাসচিব এম এ মতিন একযুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। দপ্তর সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন,গাজায় এখনও রক্তের দাগ শুকায়নি, আর্তনাদ এবং রক্তকরণ এখনও বন্ধ হয়নি এমন মূহুর্তে বাংলাদেশ সরকারের হঠকারীমূলক সিদ্ধান্তে মুসলমানদের হৃদয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি করে দিল। ফিলিস্তিনে যখন ইসরাইলে আক্রমণে মুসলমানদেরকে বর্বর এবং নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছিল তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী আবেগ-আপ্লুত হয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে নিমর্ম ছবি প্রদর্শনে আমরা কিছুটা শান্তনা খুঁজে পেয়েছিলাম। আমরা মনে করেছিলাম রক্তচোষা ইসরাইলি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়িয়ে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে উজ্জ্বল করবেন। কিন্তু বরাবরই তিনি আমাদেরকে হতাশ করেছেন। বাংলাদেশি পাসপোর্টে ইসরাইল ভ্রমণের সুযোগ নিষিদ্ধ থাকলেও বর্তমান ই-পাসপোর্টের সুবাদে এই দেশে ইহুদীবাদের অবাধ বিচরণের সুযোগ তৈরি হয়ে যাবে। তারা আরও বলেন, মুসলমানদের প্রথম কিবলায় যারা হামলা করেছে তাদের সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করা মানে বায়তুল মোকাদ্দাসে হামলাকারীকে স্বীকৃতি দেয়ার শামিল হবে। এতে জনগণের সেন্টিমেন্টে আঘাত করা হবে এবং সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নেতাদ্বয় অবিলম্মে এহেন সিদ্ধান্ত বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন