রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন। তাদের মধ্যে কদমতলীর রায়েরবাগে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে কদমতলীর মুজাহিদনগরে একটি বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত জান্নাতুল ফেরদৌসের বন্ধু রিপন বলেন, আমরা গত ২৭ আগস্ট সিলেট থেকে ঘুরে এলাম। জান্নাতুলকে কখনও কোনো বিষয়ে হতাশাগ্রস্ত মনে হয়নি। গত শনিবার রাতেও আমাদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় গেল। প্রিয়জন হারানোর বেদনা সহ্য করতে পারছি না।
কদমতলী থানার এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে দেয়ালে রক্ত দিয়ে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’।
নিহতের পরিবার জানায়, জান্নাতুল একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। কী কারণে তিনি এমন কাজ করেছেন সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি পরিবার। নিহতের বাবা লিটন ব্যপারী বলেন, আমার একটাই ছেলে। সে গত শনিবার রাতে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ে। আমি সকালে কাজে চলে যাই। জান্নাতুল এমনিতেই সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমায়। ঘুম থেকে না উঠায় তার মা ডাকতে গেলে দেখে ফ্যানের সাথে তার দেহ ঝুলছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কখনও কিছু বুঝতে পারিনি। আমাদের সঙ্গে তার কোনো বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য বা কথা কাটাকাটি হয়নি।
এদিকে, সদরঘাটে পারাবত-১২ লঞ্চের ৩১২ নম্বর কেবিন থেকে এক নারীর (৩৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাথায় সিঁদুর ও হাতে শাঁখা দেখে সনাতন ধর্মাবলম্বী বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে গতকাল এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই নারীর নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
সদরঘাট নৌ-পুলিশের ওসি মো. কাইয়ুম আলী সরকার বলেন, গত শনিবার রাত ১১টার দিকে বরিশাল থেকে পারাবত-১২ লঞ্চ ছেড়ে আসে। রাতে কেবিন বয়ের কাছে অর্ডার দিয়ে খাবার খান ওই নারী। সকালে লঞ্চটি সদরঘাটে পৌঁছানোর পর সব যাত্রী নেমে গেলেও ওই কেবিনটি তালাবদ্ধ দেখতে পায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। লঞ্চে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে তালা খুললেও ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগানো থাকায় দরজা খুলতে পারে না লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। সন্দেহ হওয়ার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সামনে তালা ভেঙে একজন নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর তার লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি আরও বলেন, লাশ উদ্ধার হওয়া ওই নারীর ছোট ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে লঞ্চের টিকিট পাওয়া যায়। টিকিটে আনোয়ার হোসেনের নাম ছিল। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন