শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

নেগেটিভ ইক্যুইটি নয়, গুজবে বড় দরপতন

পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির প্রভাব বিষয়ে কর্মশালায় অতিথিরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২২, ১২:০৩ এএম

রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট বা নেগেটিভ ইক্যুইটির কারণে নয়, গুজবের জন্য টানা দুই কার্যদিবস দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। গতকাল রাজধানীর হোটেল পূর্বাণীতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে ‘পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির প্রভাব’ শীর্ষক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএসইসির কমিশনার বলেন, গত ২ কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার ও রোববার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৭২ পয়েন্ট। যার জন্য রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে সময় বেঁধে দেয়াকে কারণ উল্লেখ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভুল বার্তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারে যুদ্ধের জন্য সূচক পতন হওয়া যৌক্তিক না।
তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও তার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই কম। তাই আমাদের অর্থনীতিতে কম প্রভাব পড়বে। ফলে গত দুই দিনে যে পরিমাণ সূচক কমেছে, তা ঠিক না। অন্যদিকে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে, তা পুরোপুরি ঠিক না বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এই কমিশনার। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয়ে ২০১৫ সালে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপরে নিয়মিত তা সমন্বয়ের জন্য সময় বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি বর্তমান কমিশন সময় বাড়িয়ে তা ২০২৩ সাল পর্যন্ত করেছে। যা শেয়ারবাজারের স্বার্থে প্রয়োজনে আরও বাড়ানো হবে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
বিনিয়োগকারীদেরকে আশ্বস্ত করে শেখ সামসুদ্দিন বলেন, শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে না। সবার আগে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তাই নেগেটিভ ইক্যুইটি সমন্বয় নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছরের ব্যবধানে অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। তার সঙ্গে এ খাত তাল মিলিয়ে চলেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি, সুশাসন ও খেলাপি ঋণে বিশেষভাবে নজর দেয়া উচিত।
বিএসইসি’র এই কমিশনার বলেন, স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে শেয়ারবাজার এখন অনেক এগিয়েছে। এক সময় ব্যাংক ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কথা চিন্তা করা না গেলেও এখন শেয়ারবাজার বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, এখন পুঁজিবাজারে ফোকাস করার মতো সময় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকেরও উচিত বিভিন্ন খাতে পলিসির মাধ্যমে ফোকাস করা। এক্ষেত্রে মনিটরিং পলিসি আরও বাড়াতে হবে। আইনের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক সময় অনেক কাজ করতে পারে না। তবে এখন সময় এসেছে নীতিমালার পরিবর্তন করার। এ ব্যাপারে তারা কাজ করছে। ফলে শিগগির ব্যাংকের কাজে ভ্যারিয়েশন আসবে।
এনবিআর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্থাটি ধীরে ধীরে অনেক বদলে গেছে। ভ্যাট-ট্যাক্সের ব্যাপারে তাদের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। এনবিআর এখন আমাদের অনেক সহযোগীতা করছে। যে সব কোম্পানি বেশি মূলধন নিয়ে পুঁজিবাজারে আসছে, তাদের ট্যাক্স সুবিধা তত বেশি দেয়া হবে। এ বিষয়ে এনবিআরের এমন বিষয় নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় ও সিএমজেএফ সভাপতি জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর আবু আহমেদ, বিএসইসি’র সাবেক কমিশনার আরিফ খান, সিরডাপের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মাদ হেলাল উদ্দিন, বিআইবিএম’র প্রফেসর ড. শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব, সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলী প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন