কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আদম শুমারি’র নিয়োগের ব্যাপারে কথা বলার জন্য বাড়িতে ডেকে নিয়ে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা (৫০) এক গৃহবধুকে ধর্ষনের চেষ্টা করেন। এ অভিযোগে সোমবার (২৭ জুন) ওই গৃহবধু (২৬) বাদী হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর পূর্বে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দোকান ভাংচুরের অভিযোগে মামলা হয়। চেয়ারম্যানের একের পর এক ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মামলা ও গৃহবধুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আদম শুমারির নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ওই গৃহবধুকে গত ৯ জুন বাড়িতে ডাকেন ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। গৃহবধু ওই দিন সকালে চেয়ারম্যানে বাড়িতে যান। এ সময় চেয়ারম্যানের পরিবারসহ বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাড়ির একটি কক্ষে গৃবধুকে বসতে বলেন। এর কিছু সময় পর চেয়ারম্যান ঘরের দরজা বন্ধ করে গৃহবধুর মুখ চেপে ধরে বিছানায় ফেলে ধর্ষন করার চেষ্টা করেন। নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে গৃহবধু চেয়ারম্যানের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করলে মুখ থেকে হাত সড়ে যায় এবং গৃহবধু ডাকচিৎকার শুরু করে দরজা খুলে বাহিরে বের হয়। এরপর সড়কে এসে অটোরিক্সাতে বাড়ি আসার চেষ্টা করেন। চেয়ারম্যান অবস্থা বেগতিক দেখে গৃহবধুর পিছু নিয়ে অটোরিক্সায় উঠেন এবং গৃহবধুকে ভয়ভীতি দেখান। ঘটনা প্রকাশ করলে আদম শুমারীর গননার কাজ করতে দিবেন না এমনকি গৃহবধুর স্বামী-সন্তানের ক্ষতি করবেন বলে চেয়ারম্যান হুমকি দেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধু আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন এবং ঘটনাটি মিমাংসার কথা বলে টালবাহনা করে সময়ক্ষেপন করতে থাকেন। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে ২৭ জুন ওই গৃহবধু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৮)।
থেতরাই ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুন্নবী, সেকেন্দার আলী, রেজাউল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত ২৮ ফেব্রæয়ারী এক সেনা সদস্যকে মারধর করে দোকান ভাংচুর ও চাঁদাদাবী করেন। এ অভিযোগে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি-দখল থেকে শুরু করে নানা অপর্কমের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ওই গৃহবধুর অভিযোগ সত্য নয়। তাদের পারিবারিক একটি বিষয় মিমাংসা করে দিয়েছি। এই রায় তাদের বিপক্ষে যাওয়ায় ক্ষোভের কারনে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। এলাকার লোকজন বিষয়টি জানেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, ওই গৃহবধু ঘটনার দিন জরিপের কাজে তার বাড়িতে এসেছিলেন। সেদিন আমার পরিবারের লোকজন বাড়ীতেই ছিল।
উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন