রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

লবণ ভর্তি ট্রাকের পানিতে নষ্ট হচ্ছে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়ক

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ থেকে : লবণের পানিতে টেকনাফ-কক্সাবাজার সড়ক (শহীদ এটিএম জাফর আলম সড়ক) দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ট্রাকের গলিত লবণাক্ত পানি সীমান্তের প্রধান সড়ক পিচ্ছিল হয়ে পড়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এতে করে এই রোড়ে প্রতিনিয়ত সড়ক দুঘর্টনাও বাড়ছে। খোলা ট্রাকে লবণ পরিবনে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও লবণ ব্যবসায়ী-পরিবহন সংশ্লিষ্টরা তা কিছুতেই মানছে না। কভার্ড ভ্যান এবং পানি চষে না পড়ার মত করে লবণ পরিবহনের নির্দেশনা টেকনাফে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। লবণ পরিববণ এবং তৎসংশ্লিষ্ট নীতিমালা না থাকায় কতিপয় সুবিধাভোগী লাভবান হলেও জনসাধারণের চরম ক্ষতি হচ্ছে। লবণের ট্রাক থেকে গলিত খরা পানি টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের স্থায়িত্ব দিন দিন নষ্ট করে দিচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল জরুরী ভিত্তিতে লাভের বিপরীত ক্ষতির দিক বিবেচনায় খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট নীতিমালা প্রণয়নের জোর দাবি জানিয়েছেন।
সাধারণত টেকনাফ-কক্সবাজার রোড়ে সড়কের উপর যত্রতত্র ট্রাকে লবণ লোড করতে চোখে পড়ে। কতিপয় অসাধু মহল রাস্তার উপর জেদ করে গাদাগাদিভাবে লবণ লোডের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দুঘর্টনা এবং লবণের পানিতে সড়ক নষ্ট হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারী নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সরেজমিন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, হোয়াইক্যংয়ের নয়াবাজার, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলার রঙ্গিখালী, আলীখালী, নাটমুরা পাড়া, উলুচামরী, মোচনী, জাদীমুরা, টেকনাফ, সাবরাং, নয়াপাড়া এলাকায় সড়কের উপর ট্রাক রেখে লবণ লোড করা হচ্ছে। সকাল থেকে বিকাল দীর্ঘ সময় প্রতিদিন ডজন ডজন ট্রাক লবণ ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে দাঁড় করিয়ে রাখাতে যাত্রীবাহী গাড়ী চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সন্ধ্যায় পর্যটকবাহী গাড়ী চলাচলে মারাত্মক অসুবিধা দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব সড়কের উপর বড় বড় লবণের ট্রাক রেখে লোড করার সময় পথ যাত্রীদের সাথে প্রতিনিয়ত বাক-বিতন্ডা লেগে থাকে। কেউ কিছু বললে লবণ ব্যবসায়ীর নামে অসাধুরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি প্রদান করে। উল্টো পথচারীদের উপর বিপদ নেমে আসে। স্থানীয়রা বলছেন, রোড়ের উপর গাড়ী রেখে লবণ ভর্তি করতে করতে বছর আগে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকৃত রাস্তা দ্রæত সময়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে। উল্লেখিত এলাকায় সওজের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে মেইন রোড়ের নিচে বিশেষ গর্ত করে পাইপের মাধ্যমে লবণ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে সড়কের উপর পানির ড্রেইন তৈরীর মাধ্যমে লবণ মাঠে অবাধে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সড়কের দু’পাশে লবণ ব্যবসায়ীদের জেদাজেদী ট্রাকে লবণ লোড, মেইন রোড়ের নিচে বিশেষ কায়দায় গর্ত করে পানি সরবরাহ ও সড়কের উপর দিয়ে ড্রেইন করে পানি চলাচলে সওজ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে রীতিমত সমালোচনার ঝড় বইছে। সচেতন মহল মনে করছেন, লবণ ব্যবসায়ীরা রাজস্ব খাতে তেমন উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখে না। কিন্তু লবণ ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত সড়কের বারাটা বাজাচ্ছে। ট্রাক এবং রোড় ক্যাপাসিটির বাইরে এসব ব্যবসায়ীরা কৌশলে প্রচুর পরিমাণে লবণ লোড করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চালান করছে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কের উপর অনিয়ন্ত্রিত গাড়ী পার্কিং করে লবণ লোড বন্ধ করতে অসাধু এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রæত পদক্ষেপ নিতে হবে। খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহনে সড়কের উপর লবণাক্ত পানি পড়ে ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম বলেন, লবণের পানি পড়ে প্রতিনিয়ত টেকনাফ-কক্সবাজার চলাচলের রোড়ে (শহীদ এটিএম জাফর সড়ক) সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। জনসাধারণ ও পর্যটকদের সুবিধার্থে অপরিকল্পিতভাবে সড়কের উপর ট্রাক লোডিং এবং লবণ পরিবহনে বিষয়ে শীঘ্রই তিনি অভিযান পরিচালনা করার কথা জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন