রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিদ হাসান জিহাদের বুকে, পিঠে ও হাতে বেত্রাঘাতের চিহ্ন জ্বল জ্বল করছে। কমপক্ষে ১৫টি ক্ষতচিহ্ন তার শরীরে ফুটে উঠেছে। চড়ে দুই কান দিয়ে রক্ত বের হয়ে কানে কম শুনছেন বলেও অভিযোগ করে ছাত্রের বাবা। আহত অবস্থায় জিহাদকে প্রাথমে রায়পুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে হয়েছে। কানের অবস্থা আশংকাজনক হওয়া পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পের হাট চর আবাবিল এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাশ কক্ষে ইংরেজি শিক্ষক ইমান হোসেনের চড় ও পিটুনিতে তার এ অবস্থা হয়। বৃহস্পতিবার বিকালে চিকিৎসা শেসে বাড়ী ফিরলেও এখনও ভয়ে তেম একটা কথা বলতে পারছে না।
শুক্রবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তানজিদ হাসান জিহাদ (১৩), স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জাফর ও কয়েকজন স্থানীয় লোকজন জানায়, কয়েক দিন আগে বিদ্যালয় মাঠে একটি গরু চরের বিচার হয়। গত মঙ্গলবার জিহাদসহ কয়েকজন ছাত্র মিলে ওই চোরকে দেওয়া শাস্তি কথা বলা বলি করে। কিন্তু কে বা কারা ইংরেজি শিক্ষক ইমাম হোসেনকে গিয়ে বলে জিহাদ না কী ইমাম স্যারের বাবাকে চোর বলেছে। এতে ইমাম স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে কোন কথা না শুনে ক্লাসে সকল ছাত্র-ছাত্রীর সামনে বেত দিয়ে বেধম পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ক্লাসে দাড় করিয়ে দুই কানে কয়েকটি চড় মেরে ক্লাসে জিহাদকে ফেলে চলে যায় শিক্ষক ইমাম। এসময় ছাত্র-ছাত্রীরা ও স্থানীয় লোকজন তার বাবাকে খবর দিয়ে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে জিহাদকে ভর্তি করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিহাদের শরীরে ১৫টি রক্ত জখম ও কান দিয়ে পানি পড়তে দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এছাড়াও ওই শিক্ষক এর আগেও দুই ছাত্রকে পিটিয়ে শুরুতর আহত করে। বিষয়টি তখন স্থানীয় ভাবে সমাধান করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদেক ওই বাড়িতে গেলে আহত শিক্ষার্থী জিহাদের বাবা আবু তাহের কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, চার দিন পর ছেলেকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে আনলেও ভয়ে কথা বলতে পারছে না। কোনো শিক্ষক ছাত্রদের এভাবে মারতে পারেন তা তার জানা ছিল না। একটি মিথ্যা কথাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলে জীবন নষ্ট করেছে ওই শিক্ষক। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। কান দিয়ে শুধু পানি পড়ছে। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়া চেষ্টা করছি।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ জানান, একটি তুচ্ছ কথাকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের ছাত্র জিহাদের সাথে যে ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কোন শিক্ষক কখনোই শিক্ষার্থীদের মারধর করতে পারেন না। এসএসসি পরীক্ষা থাকায় এঘটনাটি নিয়ে আগামি সোমবার পরিচালনা কমিটির জরুরি সভার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আহত জিহাদের চিকিৎসা চালানোর জন্য তার অভিভাবকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন