সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পটিয়া পৌরসভায় অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ : দুর্ভোগ চরমে

| প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পটিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : পটিয়া পৌরসভায় অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণের ফলে পৌর সদরে যানজট দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকায় যাত্রী সাধারণ নিদারুণ দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। মহাসড়কের দুই পার্শ্বের গাছপালা কেটে ফেলার দরুন মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। এ ড্রেন নির্মাণের ফলে একদিকে সরকারের অর্থ অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে পৌরসভার মহাসড়ক এলাকার দুই পার্শ্বের অবকাঠামো নষ্ট হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক ব্যবসা বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সাহায্য পুষ্ঠ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স এন্ড সার্ভিস প্রজেক্ট (এমজি, এসপি) প্রকল্পের আওতায় পটিয়া পৌরসভায় মহাসড়কের পার্শ্বে মাজার গেইট থেকে কালি বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ড্রেন, ফুটপাত, স্ট্রিট লাইট স্থাপনের জন্য সরকার ১২ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নেজাম আলী চৌধুরী (জেবি) কনস্ট্রাকশন কাজটির টেন্ডার প্রাপ্তি সহ কার্যাদেশ পেয়ে বিগত ২০১৬ সালে নভেম্বর মাসে পটিয়া বাস স্টেশন থেকে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। মহাসড়কের দুই প্রান্তে কাজের জন্য খুঁড়ে ফেলার দরুন মহাসড়কের উপর বিশাল মাটির স্তুপ, বালি, কনক্রিট, ইট, সিমেন্ট ও ভাঙ্গা পিলার রাখা হয়। যার ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া পৌর সদরে ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ ১১ মাস ধরে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবেড্রেন নির্মাণের ফলে ড্রেনের কোন দিকে উচু কোন দিকে নিচু হয়ে ঢেউ আকারের সৃষ্টি হয়েছে। পটিয়া থানার মোড় থেকে কলেজ গেইট পর্যন্ত অধিকাংশ বানিজ্যিক ভবন মহাসড়ক ঘেষে গড়ে উঠায় এখানে ড্রেন সৃষ্টি করা দুষ্কর ব্যাপার। যে নিয়মে ড্রেন হচ্ছে এ নিয়মে ড্রেন করতে গেলে ৩/৪ টি ৪ তলা ভবন ভাঙ্গতে হবে। নয়তো ড্রেন মহাসড়কের উপর দিতে হবে। কোন কোন স্থানে আর সি সি ওয়াল নিষ্প্রয়োজনভাবে উঁচু করা হয়েছে। মহাসড়কের মাজার গেইট, বৈলতলী রোড, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, আনোয়ারা রোড, ছবুর রোড, দেওয়ানী আদালত রোড, পোষ্ট অফিস মোড় সহ আঞ্চলিক সড়কের সংযোগস্থল পাহাড়সম উঁচু করায় স্বাভাবিক যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান। কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ড্রেনটির সাথে কোন খালের সংযোগ নেই। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এতে প্রকল্পের অর্থ অপচয় এবং মহাসড়কের দুই পার্শ্বের অবকাঠামো নষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এ কাজে পটিয়ার পৌর নাগরিকের পানি নিষ্কাশনসহ নান্দনিক ড্রেন নির্মাণে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে না। ড্রেনটি পৌরবাসীর কোন কাজে আসবে না। এটি পৌর ও জনস্বার্থ বিরোধী। এতে কিছু লোকের পকেট ভারী হচ্ছে। ড্রেনের মহাসড়কের পার্শ্বে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়ার কারনে বৃষ্টির পানি মহাসড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য দুই পার্শ্বে লেভেল সাইড দিয়ে রাস্তা প্রসস্থ না করায় সড়ক সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দুই পার্শ্বের বৃক্ষ নিধনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে। এদিকে এমজি, এসপি প্রকল্প থানার মোড় থেকে তালতলা চৌকি পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণের জন্য আরো ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ ড্রেন পরিকল্পিতভাবে না হলে ব্যবসায়ী সহ জনভোগান্তি বাড়বে বলে পটিয়া পৌর ব্যবসায়ীদের অভিমত। এ ব্যাপারে পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান খন্দকার জানানা, তাদের কাজের কারণে যানজট হচ্ছে না। তবে ড্রেন নিয়ে যে সমস্যা দেখা যাচ্ছে তা ড্রেনের কাজ সমাপ্তি হলে আর দেখা যাবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন