বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত

গোপালগঞ্জের বিণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ থেকে মো. অহেদুল হক : গোপালগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী বিণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ১৯৩৮ সাল থেকে গোপালগঞ্জ জেলায় মধ্যে নারী শিক্ষা বিস্তারে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে অসছে। এ বিদ্যালয়ের পাঠ দানের মান অত্যন্ত সমৃদ্ধ। শিক্ষাক মÐলী অন্তরিকতার সাথে পাঠ দান করে থাকেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ঐকান্তিক চেষ্টায় বরবরই বিদ্যালয়টি এসএসসি ও জেএসসির ফলাফলের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। কিন্তু বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক সঙ্কটে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় শিক্ষার মান নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ে প্রভাতি ও দিবা শাখা চালু রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ে ৫২ জন শিক্ষক থাকার কথা রয়েছে। সেখানে সহকারী শিক্ষক রয়েছে মাত্র ২৯ জন।
এর মধ্যে ভৌত বিজ্ঞান বিষয়ে চারজনের মধ্যে একজন শিক্ষকও নেই। জীব বিজ্ঞানে চারজনের মধ্যে আছেন দুইজন, বাংলার আটজন শিক্ষকের মধ্যে আছেন দুইজন, ধর্মীয় শিক্ষায় চারজনের মধ্যে আছেন একজন ইংরেজিতে আটজনের মধ্যে আছেন ছয়জন, সামাজিক বিজ্ঞানে চারজনের মধ্যে আছে দুইজন শিক্ষক।
এ ছাড়া একজন প্রধান শিক্ষক ও দুইজন সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। সহকারী প্রধান শিক্ষকের একজন ডেপুটেশনে ঢাকায় রয়েছেন। অপর সহকারী প্রধান শিক্ষক এক বছরের মেডিক্যাল লিভ নিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রভাতি শাখায় ৬২০ জন ও দিবা শাখায় ৫০২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক সঙ্কটের মধ্যে একজন শিক্ষক অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে পাঠদানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া শিক্ষদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বাইরেও পাঠ দান করতে হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা পাঠদান করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মানসী বিশ্বাস, নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুমনা আকতার নয়নমণি বলেন, আমাদের বিজ্ঞান বিষয়সহ অন্যান্য বিষেয়ের শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। তারপরও শিক্ষকরা অতিরিক্ত পাঠদান করে বিদ্যালয় চালিয়ে নিচ্ছেন। এতে শিক্ষকদের অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া এক বিষয়ের শিক্ষক অন্য বিষয়ে পাঠদান করছেন।
সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শারফুন আফনান নিসর্গের পিতা তাজউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিণাপাণী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধশালী নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে এসএসসি ও জেএসসিতে ধারাবাহিকভাবে ভালো রেজাল্ট হয়ে আসছে। শিক্ষক মÐলী অত্যন্ত যোগ্য ও মেধাবী। কিন্তু শিক্ষক সঙ্কটে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে আমরা শিক্ষার মান নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থানের এ জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত হবে, এটি কাম্য নয়। দ্রæত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সঙ্কট নিরসনের জন্য দাবি জানাচ্ছি।
ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সৈয়দা তাসনিম মাইসার পিতা সৈয়দ মুরাদুল ইসলাম বলেন, অর্ধেক শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদান চালিয়ে নেয়া দুষ্কর। এতে পাঠদান কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। তারপরও শিক্ষকমÐলী অশেষ কষ্ট করে পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন। এ জন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গোপালগঞ্জের এ স্কুলে গোপালগঞ্জ ও আশপাশ জেলা থেকে যোগ্যে, মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সমস্যার সমাধান করার দাবি জানাই। দূরবর্তী জেলা থেকে শিক্ষক নিয়োগ দিলে তার এখানে যোগদানের কিছু দিনের মধ্যেই নিজ জেলায় চলে যান। ফলে শিক্ষক সঙ্কট থেকেই যায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবল চন্দ্র মÐল শিক্ষক সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, তারপরও আমরা এ শিক্ষক দিয়েই পাঠদান করে যাচ্ছি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে এ ব্যাপারে নিয়মিত তথ্য পাঠানো হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে মহাপরিচালক এ ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। আশা করছি, অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন