ঢাকার কেরানীগঞ্জে শুভাঢ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমি দীর্ঘ ৪৬বছর পর উদ্ধার করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল দক্ষিন সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ ইমরুল হাসান উদ্ধার হওয়া ওই জমিতে শুভাঢ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন। উদ্ধার হওয়া জমির পরিমান ৩৯শতাংশ। এই জমির বর্তামান মূল্য প্রায় ৪কোটি টাকা।
কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল দক্ষিন ভূমি অফিসের নাজির মোহাম্মদ মজিরুল হক জানান, স্বাধীনতার অনেক পূর্বেই শূভাঢ্য কাচারী পাড়া এলাকায় শূভ্যাঢ্যা ভূমি অফিস চালু ছিল। সে সময় ওই ভূমি অফিসকে কাচারী বাড়ি বলা হতো। এই কাচারী বাড়ির সুবাধে ওই এলাকার বর্তমান নামকরন হয়েছে শুভাঢ্যা কাচারী পাড়া। স্বাধীনতার পর নানা কারনে পরে এই অফিসটি রাজধানীর কোতয়ালী থানার সদরঘাটের ওয়াইজঘাট এলাকায় একটি সরকারী পরিত্যাক্ত ভবনে স্থানান্তর হয়। এলাকাবাসীর সুবিধার্থে এই অফিসটি ওয়াইজঘাট থেকে বর্তমানে আগানগর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। একাধিকবার ওই ভূমি অফিসের জমি উদ্ধারের জন্য কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল দক্ষিন সহকারী কমিশনারগন(ভূমি) চেষ্টা করেও ব্যার্থ হন। কিন্ত বর্তমান সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ ইমরুল হাসান স্যারের বলিষ্ট পদক্ষেপে ওই ভ‚মি অফিসের জমিতে থাকা কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে ওই জমি উদ্ধার করা হয়েছে এবং সেখানে স্যারের তত্ববধানে শূভাঢ্যা ভূমি অফিসের একটি তিনতলা ভবনের নির্মান কাজ শুরা করা হয়েছে। জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া মালারানী মন্ডল জানান, সেই পাকিস্তান আমলে এইখানে একটি চৌচালা টিনশেড ঘরে ভূমি অফিস ছিল। এই অফিসে আমার শশুর ঋষিকান্ত মন্ডল ও শাশুড়ি ধর্মনী মন্ডল ফুট-ফরমাসের কাজ করতেন। ১৯৭১সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী ওই কাচারী বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে ।পরে ১৯৭২সালে সেখানে একটি একতলা পাকা ভবন নির্মান করা হয়। সেময় এই অঞ্চলে ব্যাপক ডাকাতি ও খুন খারপি হওয়ার কারনে কাচারী বাড়ির সব স্যারেরা অফিসের সমস্ত নথিপত্র নিয়ে ওয়াইজঘাটে চলে যান। আমরা অদ্যবধি এই পরিত্যাক্ত ঘরটিতে বসবাস করে আসছিলাম। শূভাঢ্যা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর ইসলাম জানান, শূভাঢ্যা ভুমি অফিসের জমি উদ্ধার হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। এই জন্য বর্তমান সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ ইমরুল হাসান স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেল সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ ইমরুল হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান,দীর্ঘদিন শূভাঢ্যা কাচারী বাড়ির জায়গাটি বেদখলে ছিল। আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ওই জমিটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে উদ্ধার কাজে কিছুলোক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিল। তাদেরকে আমি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিহত করেছি। এই জমিতে শূভাঢ্যা অফিসের একটি তিনতলা ভবনের নির্মান কাজ শুরু করে দেয়া হয়েছে। ভবনটি নির্মান হলে আগান নগর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে শুভাঢ্যা ভূমি অফিসটি এখানে স্থানান্তর করা হবে। আশা করি এই অফিস থেকে ভূমি মালিকরা ভালমানের সেবা পাবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন