শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নৌকার বাবেল এগিয়ে বিএনপিতে নবীন-প্রবীণের লড়াই

ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁওয়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

গফরগাঁও থেকে মো. আতিকুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১২:০৯ এএম, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮

একাদশ সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ভোটারদের মাঝে ততই আলোচনার ঝড় বাড়ছে। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে বেশ কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল জনপ্রিয়তায় সবার চেয়ে এগিয়ে। অন্য দিকে এই আসনে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই এলোমেলো। মূলত, ধানের শীষের মনোনয়ন দৌড়ে চলছে নবীন-প্রবীণের লড়াই।

স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে এমপি বাবেল উপজেলা জুড়ে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন, শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন। পাশাপাশি উপজেলা, পৌরসভা, ১৫ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোকে বেশ চাঙা করেছেন। যোগ্য, সৎ ও নিবেদিত প্রাণ নেতারা বিভিন্ন কমিটিগুলোতে স্থান পাওয়ায় উপজেলাজুড়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র ও ১৫ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে এমপি সমর্থিত ব্যক্তিরাই বিজয়ী হয়েছেন। সার্বিক বিবেচনায় এমপি বাবেলই আছেন শক্ত অবস্থানে।

উপজেলা আ.লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, এমপি বাবেলের বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে প্রতিপক্ষের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারের হীন চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে একদিনও যাদের এলাকায় দেখা যায়নি, দলের পক্ষে কোনো ভূমিকা পালন করেননি, এমন কেউ কেউ নৌকার মনোনয়ন পেতে এমপি বাবেলের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বা অপপ্রচার চালিয়ে লাভ হবে না। গফরগাঁওবাসীর মন জয় করেছেন এমপি বাবেল, তাকেই আবারো এমপি হিসেবে দেখতে চায় গফরগাঁওয়ের মানুষ।

ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ছাড়াও আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ আলাল আহমেদ, জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ আনোয়ার বুলবুল, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু সেনা পরিষদ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ মেজর (অব.) রেজাউল করিম (রেজা ), সাবেক মেয়র ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ প্রমুখ।

বাবেলের বাবা আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ ১৯৯১ সাল থেকে টানা তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও একবারের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তার মৃত্যুর পর বাবেল প্রথমবার উপজেলা চেয়ারম্যান হন এবং পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য হয়ে তিনি এলাকায় বহু উন্নয়ন কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বাবেলের নেতৃত্বে সব ধরনের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি বন্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরা কার্যকর ভ‚মিকা পালন করছেন।

৩ নম্বর চরআলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা মাছুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘গফরগাঁওয়ের মাটি ও মানুষের নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। তাকে আবার এমপি হিসেবে দেখতে চায় গফরগাঁওবাসী।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাবেল গোলন্দাজ ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়ন পেলে বিএনপিকে মোকাবেলা করতে পারবে না। কেননা, বাবেল গোলন্দাজ সদরের বাসিন্দা। বিএনপিকে মোকাবেলা করে জয়ী হতে হলে বর্তমান এমপিকেই লাগবে। আমরা মনে করি, বাবেল গোলন্দাজ মনোনয়ন পেলে আবারো নৌকার জয় হবে।’

এবারো আ.লীগের মনোনয়নে আশাবাদী বর্তমান এমপি ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। তিনি বলেন, ‘গফরগাঁওয়ের মাটি আ.লীগের ঘাঁটি। এই ঘাঁটি তৈরির পেছনে আমার বাবা মরহুম আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের ভূমিকাই অগ্রগণ্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে বাবার মতো আমিও দলের জন্য, দেশের জন্য ও এলাকার মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করে যাচ্ছি। আশা করি, এবারো দলের মনোনয়ন পাব এবং সব নেতাকর্মী ও গফরগাঁওয়ের জনগণকে নিয়ে নৌকার বিজয় ধরে রাখব।’
মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর (অব.) রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা রাখি। যদি মনোনয়ন না পাই, তাহলে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমি তার পক্ষেই কাজ করে যাব।’

এবার বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন-উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ বি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক এমপি মরহুম ফজলুর রহমান সুলতানের ছেলে মো. মুশফিকুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক অধ্যক্ষ আবুল কাশেম (আরজু), সাবেক ঢাবির স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রদলের সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির দু‘বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ড. মীর মিজানুর রহমান (মিজান), কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার বাবা সাবেক এমপি মরহুম ফজলুর রহমান সুলতানের হাতে গড়া গফরগাঁও বিএনপি তৃণমূল পর্যায়ে খুবই শক্তিশালী। দলের মনোনয়ন আমি পাব বলে আশা করি, মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ।’ অ্যাডভোকেট ড. মীর মিজানুর রহমান (মিজান) বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে গফরগাঁওসহ জেলার দলের নেতাকর্মীদের সব রাজনৈতিক মামলা আমি বিনা পয়সায় মোকাবেলা করছি। আশা করছি, দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে।’ আমি প্রথম স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গফরগাঁও রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত বিশাল জনসভা পরিচালনা করেছি এবং অদ্যাবধি দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ মোতাবেক সংগঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন