ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট কিনতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত টাকা। ফলে যাত্রীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি বুকিং ক্লার্কদের হয়রানি থেকে রেহাই না পাওয়া যাত্রীরা টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করলেও শুনতে হয় গালাগালি। এসব ঘটনায় প্রায়সময়ই স্থানীয়দের সাথে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। ভৈরব রেলওয়ের টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা বুকিং সহকারি জাবেদ ও বিপ্রজিত দাস বিপ্লব সহ একটি বুকিং সিন্ডকেটের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠে। প্রকাশ্যে অতিরিক্ত টাকা নিলেও কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এই সিন্ডেকেট র্নিবিঘে্ন তাদের অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট কিনতে গেলে তখন টিকিট পাওয়া যায়না। আবার ট্রেনের সময় হলে তখন টিকিট পাওয়া যায় অতিরিক্ত মুল্যে। আন্ত:নগর এগারোসিন্দুর, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়ই টিকিটের সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুল্য চাওয়া হয় যাত্রীদের কাছে। যাত্রীরাও তখন টিকিট পাওয়ার আশায় তাদের কথামত অতিরক্তি মুল্য দিতে বাধ্য হয়। অনেকে আবার টিকিটের মুল্য না জেনেই কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করছে। তবে কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা চা-পানের খরচ হিসেবে রাখছে তারা। অনেকে খুশি হয়ে প্রতি টিকেটে ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বেশি দিচ্ছে। সুযোগ বুঝে অনেকের কাছ থেকে আবার টিকেটের ডাবল মূল্য নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাস আগে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে কথিপয় কিছু লোকজন টিকিট কালোবাজারির সাথে জড়িত ছিল। তখনও টিকিট নিয়ে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভ ছিল। ভৈরব উপজেলা আ.লীগ সভাপতি ও নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: সায়দুল্লাহ মিয়ার হস্তক্ষেপে বর্তমানে স্টেশনে টিকেট কালোবাজারি বন্ধ হলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পায়নি ট্রেন ভ্রমণকারী সাধারণ যাত্রীগণ। যাত্রীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে এখন কাউন্টারের ভিতরে দায়িত্বে থাকা সহকারি বুকিং ক্লার্করাই পুরোদমে টিকিট কালোবাজারির সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এখন যেন সরিষাতেই ভূত।
মঙ্গলবার রাতে আন্ত:নগর মহানগর ট্রেনে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্টেশনের ১নং প্লাটফর্মে অপেক্ষমান বেশ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন টিকিটের নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে কাউন্টার থেকে।
এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছে সাধারণ ট্রেনযাত্রী ও স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত ভৈরব রেলওয়ে টিকেট কাউন্টারে রাতের শিফটে দায়িত্বরত সহকারি বুকিং ক্লার্ক বিপ্রজিত দাস বিপ্লব বলেন, অনলাইনে টিকিট ম্যানেজ করে দেয়ায় যাত্রীরা ১০/২০ টাকা চা পানের খরচ দেয়। যাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে টাকা রাখেননা, খুশি হয়ে যাত্রীরা যা দেয় তাই রাখেন।
এ বিষেয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুল মজিদ বলেন, কাউন্টারের ভিতরে আসন প্রতি টিকিটে নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে বেশি নেয়া হয় বলে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হবে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে যেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার একেএম কামরুজ্জামান বলেন, সহকারি বুকিং ক্লার্ক জাবেদ ও বিপ্রজিত দাসের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ আরো শুনেছি। প্রধান বুকিং সহকারি কিশোর নারায়ণ দাদার সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন