বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

উৎকণ্ঠায় কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়ীরা

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

 কুমিল্লায় ট্যানারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় দেড় হাজার চামড়া ব্যবসায়ী চরম উৎকণ্ঠায়। এবার মূলধন সঙ্কট ও চামড়ার বাজারও যাচ্ছে মন্দা। 

কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, মূলধনের অভাবে চামড়া সংগ্রহ করা না গেলে এ অঞ্চলের চামড়া সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে যেতে পারে। সংশ্লিষ্টদের মতে, মূলধন সঙ্কট, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় না হওয়া, লবণসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্যাংক ঋণের অভাবে কুমিল্লায় চামড়া শিল্পে ধস নেমেছে। ফলে পশুর চামড়া সংগ্রহের মূল মৌসুম কোরবানির ঈদে কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম উৎকণ্ঠা। চামড়া সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে হতাশা।
কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়ীদের বড় একটা অঙ্ক টাকা আটকে আছে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। তাদের কাছে এ এলাকার ১শ’ চামড়া ব্যবসায়ীর পাওনা আটকে গেছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। কোরবানীর ঈদের আর অল্প কিছুদিন বাকি থাকলেও বকেয়া পরিশোধের ব্যাপারে ট্যানারি মালিকদের কোনো উদ্যোগ নেই। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের অনেকেই মহাজন কিংবা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও সংস্থার কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পুঁজি সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ সুযোগে চামড়ার বাজার ভারতীয় ব্যবসায়ীরা দখলে নিয়ে স্বল্প মূল্যে ক্রয় করে তা ভারতে নিয়ে যাবে বলে আশংঙ্কা করছেন কুমিল্ল­ার বৃহত চামড়ার আড়ত ইলিয়টগঞ্জ বাজারের চামড়া ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই চামড়া পাচারকারী চক্র মোটা পুঁজি নিয়ে মাঠে নেমেছে। পুঁজির জোগান দিতে সীমান্তের ভারতীয় চামড়া ব্যবসায়ীদের এ দেশীয় এজেন্টরা কুমিল্ল­ায় এসে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের মাধ্যমে চামড়া কেনার জন্য আগাম বুকিং দিচ্ছে বলে চামড়া ব্যবসায়ীদের একাধিক সদস্য নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন।
ইলিয়টগঞ্জ আড়তের চামড়া ব্যবসায়ী মো. সাইফুল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কুমিল্ল­া জেলার চান্দিনা, দাউদকান্দি, মুরাদনগর দেবিদ্বার, বরুড়া, লাকসাম উপজেলাসহ চাঁপুরের হাজীগঞ্জ, কচুয়া, ফেনী জেলার ছোট-বড় মিলিয়ে চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ১ হাজারেরও বেশি। গত দু’টি কোরবানী ঈদে সংগৃহীত চামড়া ঢাকার ৪টি ট্যানারি মালিক ও কুমিল্ল­ার ইলিয়টগঞ্জের আড়তদারের কাছে বিক্রি করা হয়। কিন্তু কোনবারই তারা পুরো টাকা পরিশোধ করেনি। ফলে তাদের কাছে ঐ দুই ঈদের পাওনা আটকে গেছে প্রায় ৩ কোটি টাকারও বেশি। পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে দফায় দফায় তাগাদা দেয়া হলেও ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা তা আমলে নিচ্ছে না বলে পাওনাদারদের অভিযোগ।
চামড়া ব্যবসায়ী বজন, বাহার, ভিক্ষু, নীল কমল বলেন, ট্যানারি মালিকরা আগাম জানিয়ে দিয়েছেন পর্যাপ্ত ব্যাংক ঋণ পেলেই বকেয়া পরিশোধ সম্ভব হবে। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ আগে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে এবার চামড়ার বাজারে ধস নামবে। আর এ সুযোগ নেবে পাচারকারি সিন্ডিকেট। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গরু, ছাগল ও খাসির চামড়ার মূল্য প্রতি ফুট নির্ধারণ করলেও এ এলাকার এর কোনো বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন