তীব্র শীত উপেক্ষা করে চলনবিলের কৃষকরা বোরো রোপণ করছেন। শস্য ভান্ডারখ্যাত এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ বিল চলনবিল। এ বিলে সরিষা, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হলেও প্রধান ফসল বোরো ধান। বিলের পানি নামতে সময় লাগায় বীজতলা তৈরি ও চারা প্রস্তুতে কিছুটা সময় লাগার পরও চলনবিলে এখন পুরোদমে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে চলনবিলের কৃষকরা।
জানা যায়, চলনবিলে এ বছর ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৮২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে। নাটোর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলায় ৩৯ হাজার ৬১০ হেক্টর, রায়গঞ্জে ২০ হাজার ৫৭৬ হেক্টর, উল্লাপাড়ায় ২৮ হাজার ৭০০ হেক্টর, তাড়াশে ২১ হাজার ৯২০ হেক্টর, শাহাজাদপুরে ২২ হাজার ৮১ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর, চাটমোহরে ৮ হাজার ৫১০ হেক্টর, ভাঙ্গুড়ায় ৬ হাজার ২২০ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর ও আত্রাই উপজেলায় ১৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশা গ্রামের কৃষক গোলাম সরদার বলেন, চলনবিলের বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় এ বছর বোরো চাষে পিছিয়ে পড়েছি। একটানা কুয়াশা আর ঠান্ডার কারণে বীজ রোপণে দেরি হচ্ছে। সিংড়া উপজেলার বিলবিয়াসপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, সুতিজাল দিয়ে পানিপ্রবাহকে বাঁধা দিয়ে মাছ ধরায় এবার বোরো ধান রোপণ করতে দেরি হয়েছে। তার ওপর প্রচন্ড শীতে ঠিকমতো জমি পস্তুত ও চারা রোপণ করতে পারছি না। আবহাওয়া যদি দু’এক দিনের মধ্যে ভালো না হয় তাহলে বিশাল ক্ষতি হবে। চাটমোহরের দিনমজুর রায়হান জানান একই কথা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, চলনবিল মূলত নিচু অঞ্চল। বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় কৃষকরা বোরো আবাদে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে লাইন লোগো পদ্ধতিতে বোরো ধান রোপণ করছেন কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
নাটোর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, চলনবিলে পানি নামতে সময় লাগায় গম ও সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ কম হলেও এ বছর বোরো ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন