লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সড়কের নির্মাণ কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের বলিরপুল-নাসিরগঞ্জ সড়কের এক হাজার ২০০ মিটার সড়কের নির্মাণকাজে এ অনিয়ম করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজশ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের বালু ও ইটের খোয়া দিয়ে দায়সারাভাবে কাজটি শেষ করার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর বাধার মুখে অনিয়মের মাধ্যমে চলতে থাকা ওই সড়কটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বুধবার সড়কটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, চরমার্টিন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বলিরপুল হইতে নাসিরগঞ্জ সড়কের জিএনপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ১২শ’ মিটার নতুন সড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা (৯২ লাখ ৩০ হাজার ৭৭৭ টাকা) হিসেবে মেসার্স আজাদ ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটির নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়ে গত মাসে কাজ শুরু করেন।
জানা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ারকে ম্যানেজ করে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি খুড়ে নিম্নমানের বালু ও ইটের খোয়া ফেলে কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। এলাকাবাসী বিষয়টির প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো নিম্নমানের ইটের খোয়া ফেলে কাজ চালিয়ে যায়। একপর্যায়ে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে কাজে বাধা দিলে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন গত বুধবার ওই সড়ক পরিদর্শনে যান। এ সময় অনিয়মের সত্যতা পেয়ে তিনি সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী ইটের গুণগুত মান নির্ণয়ের জন্য ল্যাবটেস্ট করার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। অন্যদিকে, কাজ শুরু হওয়ার আগেই নির্মাণকাজে কি কি উপকরণ ব্যবহার করা হবে তার একটি তালিকা টাঙানোর কথা থাকলেও তাও করা হয়নি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজাদ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মো. আবুল কালাম আজাদের কাছে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কে তুমি চিন? আমি কি করি আগে জানো। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোহেল আনোয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে জামেলা আছে মোবাইলে কথা বলা যাবে না। অফিসে আসেন তার পর কথা বলবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন কাজ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা পান। এজন্য কাজ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদারকির দায়িত্বে থাকা সাজ্জাদুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন