শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহপাকের সেনাবাহিনী প্রকাশ্য ও অদৃশ্যভাবে কাজ করে

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২২, ১২:০৪ এএম

সর্ব শক্তিমান আল্লাহপাকের সেনাবাহিনী দু’ভাবে কাজ করে। প্রথমত: প্রকাশ্যভাবে এবং দ্বিতীয়ত: অদৃশ্যভাবে। অন্য কথায় বলা যায় যে, আল্লাহর বাহিনী কিছু দেখা যায় এবং কিছু দেখা যায় না। যে সকল মুমিন মুসলমান আল্লাহর দ্বীন ও ঈমানের হেফাজতের লক্ষ্যে শত্রুর মোকাবিলায় সমরাঙ্গনে প্রবেশ করে তারাও আল্লাহর বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে দেখা যায়, চেনা যায়। আর যে সকল ফিরিশতা তাদের সহায়তার জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে অবতীর্ণ-হয়, তাদেরকে দেখা যায় না।

তাছাড়া সীমালঙ্ঘনকারী এবং আল্লাহ ও রাসূলবিরোধী সম্প্রদায় বা শ্রেণির মূলোৎপাটন কল্পে যে সকল রোগ, বালাই, ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মহামারি আকারে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে সেগুলোও দেখা যায় না। মহান আল্লাহপাক এই উভয় শ্রেণির সেনা বাহিনীর কথাই আল কোরআনে বিবৃত করেছেন। যথা : (এক) ইরশাদ হয়েছে : হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর। যখন শত্রæ বাহিনী তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল অতঃপর আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্জাবায়ু এবং এমন সেনাবাহিনী প্রেরণ করে ছিলাম, যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি তোমরা যা কর, আল্লাহপাক তা দেখেন। (সূরা আহযাব : ৯)।

(দুই) ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর আল্লাহ তাঁর (রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি স্বীয় সান্ত¦না নাযিল করলেন, এবং তাঁর সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন যা তোমরা দেখনি। (সূরা তাওবাহ : ৪০)। (তিন) ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর আল্লাহ নাযিল করেন নিজের পক্ষ থেকে সান্ত¦না তাঁর রাসূল ও মুমিনদের প্রতি এবং অবতীর্ণ করেন এমন সেনাবাহিনী যাদের তোমরা দেখতে পাওনি, আর কাফেরদেরকে শাস্তি প্রদান করেন এবং এটি হলো কাফেরদের কর্মফল। (সূরা তাওবাহ : ২৫)।

উল্লিখিত তিনটি আয়াতে কারিমায় সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, মহান রাব্বুল আলামীন পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এবং তাঁর সহচরদেরকে সওর গিরি গুহায়, আইযাব যুদ্ধের প্রাক্কালে এবং হুনাইন যুদ্ধের ময়দানে অদৃশ্য সেনাবাহিনী দ্বারা সাহায্য করেছিলেন। এবং কাফেরদের যাবতীয় ষড়যন্ত্র ও বল-বিক্রম ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তাছাড়া এতে আল্লাহপাকের সান্ত¦না নাযিল করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, এই সান্ত¦না মুসলিম মুজাহিদগণকে বিজয় লাভের প্রত্যয়ে শক্তিশালী করে তুলেছিল এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও স্বস্থিরভাবে পথচলার দৃঢ় মনোবল লাভে ধন্য হয়েছিলেন। আর অবিশ্বাসী কাফের সম্প্রদায় নিন্দিত ঘৃণিত ও পরাজয়ের গøানি চিরকালের জন্য নিজেদের স্কন্ধে তুলে নিয়েছিল।

উপরোক্ত ঘটনাবলির পর ভুমন্ডল ও নভোমন্ডল প্রায় দেড় হাজার বছরের কাছাকাছি সময় অতিক্রম করেছে। এই দীর্ঘ সময়ে দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) আনুগত্য পরিহার করে দুনিয়ার লোভে মত্ত হয়ে পড়েছে। অর্থ-সম্পদ, বিত্ত-বিভর, জাগতিক শক্তি সামর্থ, ছল-বল-কুট কৌশল, পাপাচার, অন্যায় অবিচার ও অমানবিক কর্মকান্ডের লোভে ও মোহে সৃষ্টির সেরা মানবকুল এখন অনাসৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, সর্বশক্তিমান আল্লাহপাক পৃথিবীকে বদলে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। এই বদলে দেয়ার কাজটি সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেয়ার জন্য তিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের সর্বত্র স্বীয় অদৃৃশ্য বাহিনী মোতায়েন করেছেন। যাতে করে পৃথিবী নামক ক্ষুদ্র গ্রহের বাসিন্দাদেরকে নেক ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করা সহজতর হয়ে উঠে।

আমরা জানি, মহান রুব্বুল আলামীন পরম দয়ালু ও অতীব মার্জনাকারী। তাঁর দয়া ও ক্ষমার শেষ নেই, ইতি নেই। তাই তিনি এত কিছুর পরও যার প্রতি ইচ্ছা তার তাওবাহ নসীব করবেন। এতদপ্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : অতঃপর আল্লাহপাক যাদের প্রতি ইচ্ছা তাওবাহ এর তাওফিক এনায়েত করবেন আর আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা তাওবাহ : ২৭)।

এই আয়াতে কারিমায় ইঙ্গিত রয়েছে যে, যে বা যারা মুসলমানদের হাতে পরাস্ত ও বিজিত হওয়ার শাস্তি পেয়েছে এবং এখনো ও কুফরী আদর্শের ওপর অটল ও অবিচল রয়েছে, তাদের কিছু সংখ্যক লোককে আল্লাহপাক ঈমান আনয়নের তাওফীক দান করবেন। তবে, এই দান প্রাপ্তরা কারা হবে, তাদের বিষয়ে আল্লাহপাকই ভালো জানেন। অদূর ভবিষ্যতের বাসিন্দারা তাদেরকে স্বচক্ষে অবলোকন করে আল্লাহপাকের শোকর গুজারি করবেন। এতে কোনোই সন্দেহ নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ইমরান ১০ জুন, ২০২২, ১:৪৬ এএম says : 0
আমরা জানি, মহান রুব্বুল আলামীন পরম দয়ালু ও অতীব মার্জনাকারী। তাঁর দয়া ও ক্ষমার শেষ নেই, ইতি নেই। তাই তিনি এত কিছুর পরও যার প্রতি ইচ্ছা তার তাওবাহ নসীব করবেন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন