মোহাম্মদ আবদুল গফুর : পাশাপাশি দুটি দেশ। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ। দুটি দেশেই চলছে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। মিয়ানমারে চলছে হাজার হাজার বছর ধরে সে দেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উৎখাতের লক্ষ্যে গণহত্যা, গণধর্ষণ, ঘরবাড়ি জ্বালাও-গোড়াও অভিযানে সরকারি সেনাবাহিনী ও উগ্রবাগী বৌদ্ধ ভিক্ষু ও রোহিঙ্গাবিদ্বেষী সন্ত্রাসীদের বর্বর অভিযান। এই অভিযানে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বাংলাদেশে ইতিপূর্বেও মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা অনেকে অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে বাস করছে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে সেসব ত্রাণশিবিরে অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে ওঠায় বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে নতুন কোন রোহিঙ্গা গোষ্ঠী যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে। এর ফলে মিয়ানমার হতে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের অনেকেই নৌকায় করে নাফ নদী হয়ে সমুদ্রপথে মিয়ানমারের পূব দিকের থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে আশ্রয় পাওয়ার আশায় নিরুদ্দেশ যাত্রার ঝুঁকি নিচ্ছে।
কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা যেন রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশ ত্যাগের চেষ্টাকেও বরদাশত করতে পারছে না। পলায়নপর অসহায় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তারা পাগলপ্রায় হয়ে উঠেছে। ফলে পলায়নপর এসব নারী, পুরুষ, শিশু রোহিঙ্গাদের অনেকেই লাশে পরিণত হয়েছে। অন্য অনেকে রক্তাক্ত ও আহত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাবিরোধী এ নৃশংস অভিযান শুরু হয় যখন সে দেশটিতে সেনাশাসন চলছিল। সেনা শাসনকালে হাজার হাজার বছর ধরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অবৈধ ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, তারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অনুপ্রবেশ করা অবৈধ নাগরিক। তাই তাদের মিয়ানমারের মাটি থেকে উৎখাত করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব। অথচ ইতিহাসের নিরিখে তাদের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক তাই তারা মিয়ানমারে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাংলাদেশের বহু অমুসলিম নাগরিক মিয়ানমারের ইয়াংগুন প্রভৃতি শহরে ও বহু অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। তাদের সম্পর্কে মিয়ানমার সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। রোহিঙ্গাদের অপরাধ তারা ধর্মবিশ্বাসে মুসলমান। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী বৌদ্ধ। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মুসলমানদের অতীতে কখনও সংঘাত হয়নি।
সকলেই জানেন, বৌদ্ধ ধর্মের আদি জন্মস্থান ভারতবর্ষ। এখনও ভারতে মাটি খুঁড়লেই যত্রতত্র বৌদ্ধমূর্তি পাওয়া যায়। তার কারণ ভারত বর্ষ এক সময় বৌদ্ধ অধ্যুষিত ছিল। বৌদ্ধ ধর্মের আদি জন্মভূমি ভারতে যে বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী লোক খুঁজে পাওয়াই যায় না তার কারণ ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে আগত জাতিভেদে বিশ্বাসী আর্য ব্রাহ্মণবাদীদের সৃষ্ট হিন্দু পুনরুজ্জীবন আন্দোলনের পক্ষ থেকে একদা ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, একজন বৌদ্ধকে দেখামাত্র যে তাকে হত্যা করবে সে চিরকাল স্বর্গবাসী হবে। আর যে একজন বৌদ্ধকে দেখা সত্ত্বেও তাকে হত্যা করবে না, সে চিরকাল নরকবাসী হবে। এর ফলে সমগ্র ভারতবর্ষে সে সময় যে বৌদ্ধ গণহত্যা সংঘটিত হয় তার পরিণতিতে প্রাণে বাঁচতে বৌদ্ধরা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে উত্তরে তিব্বত, চীন, পূর্বে মিয়ানমার, (তদানীন্তন বার্মা) থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণে শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি অঞ্চলে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। সেদিন যারা ভারতবর্ষ থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করতে পারেনি তারা এদেশেই নির্যাতিত জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।
ইতিমধ্যে ভারতবর্ষের জনগণের সাথে সাম্য ভ্রাতৃত্বের ধর্ম ইসলামের পরিচয় ঘটে। বৌদ্ধ ধর্মও মূলত সাম্য, মৈত্রী, অহিংসার নীতিতে বিশ্বাসী হওয়ায় এই নির্যাতিত বৌদ্ধরা অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ইসলাম ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে শত্রুতা ও সংঘাতের ঘটনা খুব কমই ঘটে। অথচ মিয়ানমারের সরকার, সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে সম্প্রতিককালে যে ইসলামবিদ্বেষ প্রকট হয়ে উঠেছে, তার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণই দেখা যাচ্ছে না। অনেকেরই ধারণা আরব বিশ্বে সা¤্রাজ্যবাদের মদদপুষ্ট জায়নবাদী ইসরাইল নামের যে ইহুদি রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে তাদের কোনো ইসলামবিদ্বেষী সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে প্রভাবিত হয়ে মিয়ানমারের একশ্রেণির বৌদ্ধদের মধ্যে মুসলিমবিরোধী এ মনমানসিকতা সৃষ্টি হয়েছে। নইলে যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করেছে, তাদের মধ্যে হঠাৎ করে এমন ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হবে কেন?
মিয়ানমার প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে এতসব কথা বলতে হচ্ছে কেন, তার কারণ মিয়ানমারের বর্তমান সরকারের অন্যতম নেত্রী অং সান সুচির একটি বক্তব্য। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী এই নেত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গাবিরোধী বর্বর অভিযান চলাকালে দীর্ঘকাল বিস্ময়কর নীরবতা অবলম্বন করায় শান্তিকামী বিশ্ব স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থা এবং বহু দেশ তাঁর সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করার অনেক পর তিনি তার এই অনাকাক্সিক্ষত নীরবতা ভঙ্গ করে বলেছেন, রোহিঙ্গা সংক্রান্ত ঘটনাবলী সকলেই একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার ফলে পরিস্থিতির ইতিবাচক সমাধান বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
এ কারণেই আমাদের এ আলোচনায় আমরা বৌদ্ধ ধর্মের আদি ইতিহাস এবং বৌদ্ধধর্মের জন্মভূমি থেকে তাদের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার পটভূমি সংক্ষেপে তুলে ধরেছি। তার পাশাপাশি আমরা এটাও তুলে ধরেছি যে, বৌদ্ধদের সাথে মুসলমানদের কখনও অতীতে বড় ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বা সংঘাত হয়নি, যে কারণে মিয়ানমারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, গণধর্ষণসহ নৃশংস নির্যাতন চালিয়ে তাদের হাজার হাজার বছরের জন্মভূমি থেকে উৎখাত করা হচ্ছে। এর দ্বারা বিশ্বের সর্বাপেক্ষা নিকটতম দুটি ধর্ম সম্প্রদায়ের মধ্যে যে বিভেদের বীজ বপন করা হচ্ছে, তা শুধু চরম দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনকই নয়, ইতিহাসের আলোকে অবাস্তবও বটে।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির দল যখন মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন তখন সে দেশে মানবতার চরম অবমূল্যায়নজনক বর্বর ঘটনা ঘটুক তা তার কোনো শুভাকাক্সক্ষীর কামনা হতে পারে না। আমরা তাই আশা করব, তার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপে এই মানবতাবিরোধী পৈশাচিকতার অবসান ঘটবে এবং আজকের বিশ্বের সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্বে বিশ্বাসী দুটি নিকটতম ধর্ম সম্প্রদায়ের মধ্যে অনাকাক্সিক্ষত ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।
দুই.
এবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু কথা। বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি গণতন্ত্র। এর প্রমাণ অন্য তিনটি মূলনীতিতে সংশোধন বা পরিবর্তনের নামে একাধিকবার হস্তক্ষেপ করা হলেও গণতন্ত্রের গায়ে আঁচড় দিতে সাহস পায়নি কোনো দলের সরকারই গণরোষের ভয়ে। অথচ সেই গণতন্ত্রই বাংলাদেশে বাস্তবে সবচেয়ে অবহেলিত। গণতন্ত্রের মোদ্দা কথা, জনগণের অবাধ রায়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার নিশ্চিত ব্যবস্থা। গণতন্ত্রের আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য, বিরুদ্ধ মতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অভ্যাস। বর্তমান সরকার এ দুটি প্রশ্নেই অবাঞ্ছিত পথে অগ্রসর হতে আগ্রহী।
দেশবাসীর ভুলে যাবার কথা নয়, বাংলাদেশে কাগজে-কলমে গণতন্ত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হলেও পাকিস্তান আমলের মতো বাংলাদেশ আমলেও একটি নির্বাচিত সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়েছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অবাঞ্ছিত ঘটনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। তার কারণ উৎখাত হওয়া ওই নির্বাচিত সরকারের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগের নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। অর্থাৎ নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের তুলনায় সেদিন তাঁর কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছিল সামরিক ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী জেনারেলের শাসন। এটা কিন্তু তার গণতন্ত্রপ্রীতির প্রমাণ বহন করে না।
জনগণের মনে থাকার কথা, জেনারেল এরশাদের শাসনামলে স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়ে ওঠে। দীর্ঘকালের স্বৈরাচারী শাসনের শেষ দিকে যখন সাধারণ নির্বাচনের প্রশ্ন ওঠে, দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঐকমত্যক্রমে তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেমনটা আশা করা গিয়েছিল, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। দেশের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে সুসংগঠিত দল হিসেবে শেখ হাসিনার ধারণা ছিল আওয়ামী লীগই নির্বাচনে জয়ী হবে। নিজস্ব ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে তিনি একপর্যায়ে বলেন, আমি সব জেলার খবর নিয়েছি। নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য রাখবেন, কেউ যেন আবার ভোটে হেরে গিয়ে এর মধ্যে যেন কারচুপি আবিষ্কার না করে। ভোট গণনা শেষে যখন দেখা গেল আওয়ামী লীগ নয়, নির্বাচনে জয়ী হয়েছে বিএনপি, তখন তিনি আবলীলাক্রমে বলে ফেললেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু কারচুপি হয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা হন সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী। খালেদা সরকারের মেয়াদ শেষে নতুন নির্বাচনের প্রশ্ন এলে প্রধানত সেদিনের বিরোধী দলের নেত্রী শেখ হাসিনার দাবির মুখেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান সংবিধানে গৃহীত হয়। এ বিধানের আলোকে দেশে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয় এবং যথাক্রমে দুই প্রধান দল ক্ষমতাসীন হয়ে দেশ চালনার সুযোগ লাভ করে। এতে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশের বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানই গণতন্ত্রের জন্য উপযুক্ততম ব্যবস্থা।
কিন্তু পরবর্তীতে একবার শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে ঘড়ির কাঁটা পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং সে মতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। দেশে অন্যতম প্রধান দল বিএনপি অতীতের সমঝোতা লঙ্ঘনের অভিযোগে সে নির্বাচন বয়কট করে। দেশের দুই প্রধান দলের একটি নির্বাচন বয়কট করায় নির্বাচন হয়ে পড়ে মূল্যহীন। বিরোধী দল তো দূরের কথা সরকারি দলের অনেকেও ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তারা জানতেন তারা না গেলেও তাদের ভোটদানের ব্যবস্থা ঠিকঠাকই করবেন দলের নেতা-কর্মীরা। বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে অল্পসংখ্যক ক্ষমতাসীন নেতা-কর্মী ইচ্ছামতো ব্যালট পত্রে সিল মেরে সরকারি প্রার্থীদের পক্ষে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে তোলার কাজটি সুসম্পন্ন করেন। এভাবে ভোটারদের অনুপস্থিতিতে ভোটদান পর্ব সম্পন্ন হওয়ায় জনগণ এর নাম দেন ‘ভোটারবিহীন নির্বাচন’।
এই ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়েই সরকারি নেতৃবৃন্দ ঘোষনা দিয়েছেন নির্দিষ্ট মেয়াদের এক দিন আগেও আর নির্বাচন দেয়া হবে না। ফলে ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনেই বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটি, যার চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এখনও কাগজে-কলমে রয়েছে গণতন্ত্র। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অপমৃত্যু হয়েছে বলা হলে এতটুকু অসত্য বলা হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন