হোসেন মাহমুদ : ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে চুক্তি হতে যাচ্ছে। এ রকমটিই ধারণা করা হচ্ছিল। ভারত বন্দর ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট (ডেডিকেটেড) জেটি ব্যবহারের সুবিধা না পেলেও অগ্রাধিকার সুবিধা পাবে, তাদের পণ্যের জন্য দু’ বন্দরে নির্দিষ্ট করে রাখা হবে বিশেষ ইয়ার্ড ও শেড। দু’ বন্দরের মাধ্যমে ভারতের আমদানি ও রফতানি পণ্য অভ্যন্তরীণ নৌ, রেল ও সড়ক পথে পরিবহন করা হবে। দু’ দেশের সরকারই এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তারা চাইলে যে কোনো সময় চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তবে ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ বিষয় চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন বিশ^শক্তি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভে যে দেশটির সেনারা নিজেদের রক্ত দিয়েছে, আমাদের শ্রেষ্ঠতম বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ সেই ভারতের সাথে আমাদের জাতীয় স্বার্থেই সুসম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন। ভারত তার প্রয়োজনে কিছু চাইলে বাংলাদেশ দেবে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ তা দিচ্ছেও। দু’হাত ভরেই দিচ্ছে। প্রকৃত বন্ধু আরেক বন্ধুকে কিছু দিতে সংকীর্ণ মনের পরিচয় দেয় না, দর কষাকষিও করে না। যা দেয় বিনা স্বার্থেই দেয়। দিয়ে ভারি খুশি হয়। বাংলাদেশ তাই দিচ্ছে। রবীন্দ্রনাথের একটি গানে আছে, ‘তোমায় কিছু দেব বলে চায় যে আমার মন/ নাইবা তোমার থাকল প্রয়োজন।’ ভারতের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব এমনই উদার। তবে ভারতের অনেক, অনেক কিছুই প্রয়োজন। এক কথায় বললে, তার প্রয়োজনের কোনো শেষ নেই।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দেবে বাংলাদেশ। এ বন্দর দু’টি ব্যবহারের অনুমতিই শুধু নয়, ভারত বন্দর ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট (ডেডিকেটেড) জেটি ব্যবহার সুবিধা চেয়েছিল। ১৫ ডিসেম্বর একটি সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত তা দিতে রাজি হয়নি, তবে ভারত পণ্য আমদানি-রফতানিতে অগ্রাধিকার পাবে। এদিকে ১৯ ডিসেম্বর দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারতের ট্রানজিট পণ্যের জন্য দু’ বন্দরে বিশেষ ইয়ার্ড ও শেড নির্দিষ্ট করে রাখা হবে। এ নিয়ে সম্প্রতি ঢাকায় দু’ দেশের মধ্যে সচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। ইতোমধ্যে চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে। দু’ দেশের সরকার যখন চাইবে তখনি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। খসড়া চুক্তিতে বলা হয়েছে যে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরের স্থান প্রাপ্যতা সাপেক্ষে ভারতের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব সুবিধা নিশ্চিত করবে।
বন্দর ব্যবহার বিষয়টির ব্যাখ্যায় জানা গেছে, ভারতের ‘সেভেন সিস্টার’ খ্যাত রাজ্যগুলো থেকে সড়ক পথে তাদের পণ্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে পৌঁছবে। তারপর তা জাহাজযোগে বিভিন্ন দেশে চলে যাবে। বিপরীতে বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতের জন্য আমদানি করা পণ্য এ দু’ বন্দরে খালাস করা হবে ও সেখান থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠানো হবে। খসড়া চুক্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের তিনটি স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রফতানিযোগ্য পণ্য প্রবেশ করবে। এগুলো হচ্ছে আখাউড়া, তামাবিল ও শেওলা যেগুলোর বিপরীতে রয়েছে ভারতের আগরতলা, ডাউকি ও সুতারকান্দি। আবার আমদানিকৃত পণ্য এ পথেই ভারতে ঢুকবে। প্রয়োজনে স্থল বন্দরের সংখ্যা বাড়তে পারে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে বাংলাদেশের মধ্যে ভারতীয় পণ্য পরিবহনে শুধু দেশীয় যানবাহন ও জাহাজ ব্যবহার করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর দু’টি ব্যবহারের জন্য অনেকদিন যাবত দেন-দরবার করে আসছিল। কানেকটিভিটি, ট্রান্স শিপমেন্ট বা ট্রানজিট নামের আওতায় তারা এ সুবিধা চাইছিল। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থল পরিবেষ্টিত উত্তর পূর্ব অঞ্চলের ৭টি রাজ্য আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মনিপুর ও অরুণাচলের জন্য পণ্য পরিবহন ও সেগুলো থেকে পণ্য রফতানির বিষয় নিশ্চিত করা। বর্তমানে কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে দীর্ঘ ঘুরপথে বিপুল সময় ও ব্যয় সাপেক্ষে এ পরিবহন চলছে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করে এখন সহজপথে ও স্বল্পসময়ে এ পরিবহনের পথ চালু করতে যাচ্ছে ভারত।
কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, বর্তমান অবস্থায় ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের সুবিধা দেয়া কি সমীচীন? জানা গেছে, পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিত না করে ভারতকে বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার বিরোধিতা করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন, দেশের আমদানি-রফতানি পণ্য সামগ্রী ব্যবস্থাপনাতেই চট্টগ্রাম-মংলার বেসামাল অবস্থা। উভয় সমুদ্র বন্দরেই অনেকাংশেই রয়েছে প্রয়োজনীয় সক্ষমতার অভাব। বছরের বেশিরভাগ সময়ই উভয় বন্দর কন্টেইনারসহ কার্গোজটে স্থবির হয়ে পড়ে। দেশের আমদানি-রফতানির ক্রমবর্ধমান চাপ সামাল দিতে বন্দরের বিদ্যমান ভৌত অবকাঠামো, সংকুলানের স্থান, যান্ত্রিক ও কারিগরি সুবিধার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই ভারতের ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্টের জাহাজ ও পণ্যসামগ্রী হ্যান্ডলিংয়ের বাড়তি চাপ মোকাবেলার সক্ষমতা চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের নেই। তারা বলেন, যেখানে দেশের পণ্য সামগ্রীই এ দু’টি বন্দর হ্যান্ডল করে উঠতে পারছে না সেখানে ভারতের পণ্য আমদানি-রফতানি শুরু হলে সংকট বাড়বে। এক ব্যবসায়ী নেতা বলেছেন, বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র বন্দর নেই। তা নির্মাণ না করে ভারত বা অন্য কোনো দেশকে বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়া সুবিবেচনার কাজ হবে না। এতে বন্দর ব্যবস্থাপনায় বড় রকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, ভারি হবে ক্ষতির পাল্লা। আরেক ব্যবসায়ী নেতা বলেছেন, ভারত তাদের পণ্য পরিবহনে আমাদের ভূখন্ড ও অবকাঠামো ব্যবহার করলে এর বিনিময়ে আমরা কী পাব সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। কিন্তু এখনো তা জোরালোভাবে আলোচনায় উঠছে না। তার মতে, সক্ষমতা না বাড়িয়ে এ ধরনের চুক্তি করা হবে দেশের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে শুল্ক নির্ধারণের বিষয়টি চুক্তির আগে সুরাহা হওয়া দরকার। কেউ বলেছেন, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দিলে এ খাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে না লোকসানের সম্মুখীন হবে, সে বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।
এ থেকে বোঝা যায় যে বন্ধু দেশের প্রতি সবারই মনোভাব বন্ধুতমূলক। ভারতকে বন্দর সুবিধা দিতে কারো আপত্তি নেই। কারণ, বন্ধু দেশ কোনো অনুরোধ করলে তা রাখার কথাই সবাই ভাবে, প্রত্যাখ্যান করার কথা নয়। তাছাড়া প্রচলিত নিয়মে তা থেকে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু সুবিধা প্রদানের সক্ষমতা যার নেই সে অন্যকে সুবিধা দেবে কী করে? ভারতকে বন্দর সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে সে কথা মনে রাখা হচ্ছে না। ভারত যেমন তার জাতীয় স্বার্থে এক চুল ছাড় দেয় না, বাংলাদেশও তার জাতীয় স্বার্থে অনুরূপ দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে কিনা তা পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে ভূরাজনীতির কথা এসে যায়। দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নবদিগন্ত সূচনার জন্য একদা আত্মপ্রকাশ করেছিল দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সমিতি বা সার্ক। সবারই জানা, সার্ক প্রত্যাশা অনুযায়ী পথ হাঁটতে পারেনি। আর এবার তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভারত-পাকিস্তান বিরোধকে ব্যবহার করে পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলতে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান ও ভুটানকে পাশে নিয়ে সাফল্যের দেখা পেয়েছে ভারত। তার পরিণতি হচ্ছে এবারের সার্ক সম্মেলনে এদেশগুলোর যোগদানে অস্বীকৃতি। সে না হয় হলো। লক্ষ করলে দেখা যায়, ভারত বহুকাল যা পায়নি তা হলো তার চারপাশের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মতো এত বিশ^স্ত, নির্ভরযোগ্য এবং যা কিছু চায় তা পাওয়ার মতো বন্ধু। অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ আজ ভারতের কাছে রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ। একই সীমানায় থাকা দেশ ভুটান, নেপাল ও শ্রীলংকার গুরুত্ব ভারতের কাছে তত গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাদের কাছে আনুগত্য ছাড়া ভারতের তেমন কিছু চাওয়ার বা পাওয়ারও নেই। উত্তর-পূর্ব ভারতের ছাইচাপা আগুন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা নির্মূল করতে, সেভেন সিসটারস রাজ্যগুলোতে সহজে বিভিন্ন সরবরাহ প্রেরণ, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও সেখান থেকে পণ্য রফতানি ইত্যাদি কারণে ভূখ- ব্যবহারের সুবিধা বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া ভারতের প্রয়োজন। একটি সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে একবার বলা হয়েছিল যে কলকাতা থেকে স্থলপথে আগরতলার দূরত্ব ১৫৫৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে চলাচলের পথ পাওয়ার কারণে এখন সে দূরত্ব ১ হাজার কিলোমিটার কমে গেছে। এ সুবিধা আর কোথায় পাবে ভারত?
অন্যদিকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে ভারতের বেশ কয়েকটি সমুদ্র বন্দর থাকার পরও চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুবিধা তার প্রয়োজন। তা আবার সাধারণ সুবিধা হলে হবে না, বিশেষ সুবিধা চাই। যদি এখানেই ভারতের চাওয়া শেষ হতো, তাও কথা ছিল। ধারণা করা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দর চালু হলে তা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধা দিতে হবে ভারতকে। আরো কথা, জল-স্থলের পর অতি সম্প্রতি অন্তরীক্ষও এসেছে ভারতের চাহিদায়। ভারত বাংলাদেশের কাছে ওপেন স্কাই বা মুক্ত আকাশ সুবিধা চেয়েছে। ভারতের কথায়, বাংলাদেশের বহু মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, পড়াশোনা ও পর্যটনের জন্য ভারতে আসছেন। তাদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। ওপেন স্কাই ব্যবস্থা চালু হলে তাদের সুবিধা হবে। বাংলাদেশ সহজে ভারতে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করতে পারবে। ভারতের এ চাহিদা পূরণ হলে তারা বাংলাদেশের আকাশ ও সকল বিমান বন্দরে বিমান চলাচলের সুবিধা পাবে। একই সুবিধা পাবে বাংলাদেশও। কিন্তু বাংলাদেশ কখনো বিশাল ভারতের মুক্ত আকাশ সুবিধা চাওয়ার প্রয়োজনও বোধ করেনি, সে কথা ভাবেওনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সে মুক্ত আকাশ সুবিধা ব্যবহারের সক্ষমতাও বাংলাদেশের নেই। দেখা যাচ্ছে, আজ এতটুকু দেশ বাংলাদেশের মুক্ত আকাশ সুবিধাও ভারতের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে যে নেপাল বা ভুটান বা শ্রীলংকার মুক্ত আকাশ সুবিধা ভারতের প্রয়োজন হচ্ছে না কেন, সেসব দেশের লোকজন কি ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, পড়াশোনা ও বেড়ানোর জন্য প্রচুর সংখ্যায় ভারতে যায় না? আশা করা হচ্ছে যে শিগগিরই বাংলাদেশের কাছ থেকে মুক্ত আকাশ সুবিধা পাবে ভারত। ফেব্রুয়ারিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে এ বিষয়েও চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের যা আছে তা সে দিচ্ছে ভারতকে। ভারত যখন যা চেয়েছে, চাইছে তাই-ই দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। সেক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ কতটা বিবেচনা করা হচ্ছে বা রক্ষিত হচ্ছে তা সরকারই ভালো জানে। এ ব্যাপারে কারো কারো ভিন্নমত রয়েছে। এখন ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিরোধিতা করছেন ব্যবসায়ী মহল। তারা কিন্তু রাজনৈতিক অবস্থান থেকে এ বিরোধিতা করছেন না, করছেন বাস্তব অবস্থা বিবেচনায়। সাধারণ জনগণ তাদের বক্তব্যের সাথে একমত। কিন্তু সরকার তাদের বক্তব্য বিবেচনা করবে কিনা, চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে কিনা তা বলা মুশকিল। তবে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের আশা যে সরকার তাদের কথা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে।
ছোট দেশ হয়েও বাংলাদেশ ভারতকে এ পর্যন্ত অনেক কিছু দিয়েছে। সরকার হয়তো ভাবে যে ভারতকে তেমন কিছুই দেওয়া হয়নি বা সামান্যই দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওয়ার কোনো শেষ থাকতে পারে না। আর বিরাট দেশ হলেও ভারতের কাছে বাংলাদেশের চাওয়ার যেন কিছু নেই। যেটুকু থাকতে পারে বা আছে তা তারা দিলে ভালো। না দিলে কিছু বলার নেই। যেমন গঙ্গার পানির ন্যায্য হিসসা পাওয়া যাচ্ছে না, তিস্তার পানি চুক্তি হয়নি, ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা মেলেনি, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। এসব সমস্যার সমাধান কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা তা কেউ বলতে পারে না।
তবে সেটা বিষয় নয়। বন্ধুর চাহিদা মিটনোই সৌজন্য। তার পরিচয়ই দিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বন্ধুকে দিচ্ছে, দিতে পারছে সেটাই যেন বড়, বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়াটা নয়।
লেখক : সাংবাদিক
h_mahmudbd@yahoo.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন