মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

কাতার সঙ্কটে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা

| প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোবায়েদুর রহমান
আমাকে কয়েক জন প্রশ্ন করেছেন, কেন সৌদী আরব ও কাতারের মধ্যে এই সঙ্কট সৃষ্টি হলো, এর শেষ কোথায় এবং মুসলিম জাহানের ওপর এর কী প্রভাব পড়বে। অত্যন্ত জেনুইন প্রশ্ন। কারণ সৌদী আরব ও কাতারের মধ্যে খুব বড় রকম বিরোধের কথা অতীতে তেমন শোনা যায়নি। ২০১৪ সালে একটি বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু সেটি এখনকার মতো ডায়মেনশন পায়নি। তাই সেটি নিয়ে বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় তেমন বেশি একটি আলোচনা হয়নি। প্রশ্ন হলো, এমন কি ঘটেছে যে কাতারের বিরুদ্ধে সৌদী আরব এবং তার মিত্রদের এমন ড্র্যাস্টিক অ্যাকশন নিতে হলো। এমনকি ঘটলো যে সৌদী পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ইরান এবং তুরস্ক এক কাতারে এসে দাঁড়ালো। এমন কি ঘটলো যে পাকিস্তানও এব্যাপারে অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে। অথচ তাদের মধ্যে এই রকম বড় বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার মতো ঘটনা তো পর্যবেক্ষকদের চোখে পড়েনি।
আমার স্মৃতি পটে ভেসে উঠলো ২০১১ সালের কথা। ঐ বছরের শেষ দিকে, যতদূর মনে পড়ে সম্ভবত সেপ্টেম্বর মাসে, আমার স¦ল্পক্ষণের জন্য কাতার এবং ৬ দিনের জন্য ইরান যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো। তখন ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন আহমেদিনিজাদ। তিনি ফিলিস্তিন সমস্যা আলোচনা এবং তার সমাধানের পথ নির্দেশের জন্য ইরানের রাজধানী তেহরানে মুসলিম দেশসমূহের পার্লামেন্টারিয়ান এবং বুদ্ধিজীবিদের একটি সম্মেলন আহবান করেন। পার্লামেন্টারিয়ানদের তরফ থেকে প্রাক্তন আইন মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন খসরু এমপি এবং বুদ্ধিজীবিদের মধ্য থেকে আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছিলো। যদিও সম্মেলনটি হবে তেহরানে তদসত্বেও আমাদেরকে বহন করা হয় কাতার এয়ার ওয়েজে। দেখলাম, তেহরান পার হয়ে বিমানটি অবতরণ করলো কাতারের রাজধানী দোহাতে। পরে জানলাম সেটাই নিয়ম। যে বিমানে আপনি ট্রাভেল করবেন সেই বিমানটি যে দেশের, সেই দেশের কোনো রাজধানী বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো শহরে প্রথমে অবতরণ করবে। এর পর তারা আপনাকে গন্তব্য স্থানে নিয়ে আসবে। বিশেষ ব্যবস্থাধীনে থেকে দোহায় কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করার সুযোগ আমার হয়েছিলো। দোহায় এবং দোহা বিমান বন্দরে সৌদী, ওমানী, মিশরী, বাহরাইনি প্রমুখ নাগরিককে দেখলাম। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। বিরোধের কোনো চিহ্ন দেখিনি। ফিরে এলাম তেহরানে। যে কয়দিন সেখানে ছিলাম সে কয়দিন সৌদীদের বিরুদ্ধে ইরানের সংবাদপত্র বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে কোনো বিরূপ প্রচারণা লক্ষ করিনি। ইরান বরং কমন টার্গেট করেছে ইসরাইলকে।
এটিই তো হওয়ার কথা। মুসলিম জাহানের কমন টার্গেট হবে ইসরাইল। অথচ সেটি না হয়ে আজ একাধিক মুসলিম দেশ পরস্পর আত্ম কলহেই শুধু লিপ্ত নয়, বরং একজন আরেকজনকে বিশেষ করে সৌদী আরব এবং তার মিত্ররা কাতারকে সম্পূর্ণ একঘরে ও বিচ্ছিন্ন করতে উদ্যত হয়েছে। সৌদী আরব ও তার মিত্রদের এই পদক্ষেপের ফলে মুসলিম জাহানের বিভেদ নতুন মাত্রা পেল।
সৌদী আরব, মিশর প্রভৃতি বড় বড় এবং শক্তিশালী দেশ যখন কাতারের মতো একটি ছোট এবং পুচকে দেশের বিরুদ্ধে বড় ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় তখন মনে হয় মশা মারতে সৌদী আরব কামান দাগছে। এ প্রসঙ্গে সৌদী আরব এবং কাতারের অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত একটি তুলনা মূলক চিত্র দিচ্ছি। কাতারের ভৌগোলিক আয়তন ৪ হাজার ৪ শত ৭৩ বর্গ মাইল। পক্ষান্তরে সৌদী আরবের ভৌগোলিক আয়তন ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বর্গ মাইল। সৌদী আরব কাতারের তুলনায় ভৌগোলিকভাবে যে কত বড় সেটা কল্পনাই করা যায় না। অনুরূপভাবে কাতারের জনসংখ্যা ২৬ লক্ষ ৭৫ হাজার। পক্ষান্তরে সৌদি আরবের জনসংখ্যা ২ কোটি ৮১ লক্ষ ৬ হাজার। এই দুটি দেশের কি কোনো তুলনা চলে? সৌদী আরবের ট্যাংকের সংখ্যা ১ হাজার ১শত ৪২টি। পক্ষান্তরে কাতারের ট্যাংকের সংখ্যা ৯২টি। সৌদী আরবের জঙ্গি বিমানের সংখ্যা ১৭৭টি। পক্ষান্তরে কাতারের জঙ্গি বিমানের সংখ্যা ৯টি। অর্থাৎ কোনো দিক দিয়েই সৌদী আরবের সাথে কাতারের তুলনা হয় না।
\দুই\
তাহলে কেন সৌদী আরব সহ মিশর, ওমান, বাহরাইন, আরব আমিরাত, ইয়েমেন, মৌরিতানিয়া, মরিশাস, মালদ্বীপ, লিবিয়া- এই ১০টি দেশ কাতারের বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করলো? এসম্পর্কে এসব দেশ যে বক্তব্য দিয়েছে তার সারমর্ম নি¤œরূপ:
সৌদী সরকার বলেছে, কাতার সৌদী আরব আর বাহরাইনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অপরাধ করেছে। এ কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘গত কয়েক বছর ধরে দোহা কর্তৃপক্ষ গোপনে ও প্রকাশ্যে সৌদী আরবের ভেতরে উচ্চপর্যায়ে বিভাজন সৃষ্টির অপতৎপরতা চালিয়েছে; সৌদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়েছে; সৌদী আরবের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে; বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসবাদী ও গোষ্ঠীগত চক্রকে ব্যবহার করে এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এ প্রসঙ্গে সৌদী কর্তৃপক্ষ মুসলিম ব্রাদারহুড, দায়েশ বা আইএস এবং আলকায়েদার নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছে, কাতার এসব সংগঠনের আদর্শ ও পরিকল্পনায় মদদ জুগিয়েছে, নিজের মিডিয়ায় নিরন্তর প্রচার চালিয়েছে। আরো বলা হয়, সৌদী আরবের কাতিফ প্রদেশে এবং বাহরাইনে কাতার ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী গ্রæপগুলোকে সমর্থন দিয়েছে। যেসব চরমপন্থী দেশে বিদেশে ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নস্যাৎ করতে তৎপর, কাতার ওদের অর্থ ও আশ্রয় দিয়েছে এবং ওই মিডিয়াকে ব্যবহার করেছে যা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ইন্ধন জোগাতে চায়।’ জানানো হয়েছে, ‘সৌদী আরবের কাছে এটা স্পষ্ট যে, (সৌদী নেতৃত্বাধীন) জোট ইয়েমেনের বৈধ সরকারকে সমর্থনদানের ঘোষণা দেয়া সত্তে¡ও দোহা কর্তৃপক্ষ হুতি মিলিশিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।’ ‘কাতার সমর্থিত সন্ত্রাসী প্রচারণা ও তৎপরতার শিকার’ বাহরাইনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করাও সৌদী সরকারের এ সিদ্ধান্তের একটি কারণ বলে উল্লেখ করা হয়। এসব অভিযোগের সমর্থনে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ দেয়া হয়নি। শুধু কাতার কর্তৃক ব্রাদারহুডকে সমর্থনের প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। কাতার ইয়েমেনে হুতি জঙ্গিদের সাহায্য করে আসছে, এমন অভিযোগ বিশ্বাস করা কষ্টসাধ্য। কারণ কাতারের সৈন্যরা সে দেশে সৌদী নেতৃত্বে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে, এমনকি নিজেরা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
\তিন\
কাতার সৌদী সম্পর্ক এখনকার মতো বিস্ফোরণ¥ুখ পর্যায়ে আসার মতো ঘটনা চোখে পড়ে না। ২০০৮ সালে দুটি দেশ একটি সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে স্থল সীমান্তও চিহ্নিত করেছে। একটি কারণ হতে পারে আরব বসন্তের ঢেউ। আরব বসন্তে যেহেতু গণতন্ত্রায়নের বাতাস বইছিলো তাই সেই আন্দোলনকে সৌদী আরব, আমিরাত প্রভৃতি রাজতন্ত্র শাসিত দেশ তাদের মসনদের জন্য হুমকি মনে করে থাকতে পারে। তখন সৌদী আরব বা আমিরাতের বিরুদ্ধে কাতার কিছুই করেনি। তবে অন্যান্য দেশের গণতান্ত্রিক বিপ্লবী আন্দোলনে কাতার আংশিক অর্থায়ন করেছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। আরো অভিযোগ করা হয় যে কাতারের তদানীন্তন শাসক শেখ হামাদ মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং লিবিয়াসহ কয়েকটি দেশের বিপ্লবীদেরকে পরোক্ষ সমর্থন দেন। বলা হয় যে, কাতার আরব বিশ্বে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখা সমূহকে এবং হামাসকে দীর্ঘদিন ধরে নীরবে সমর্থন দিয়ে আসছে। মিশরে হুসনি মোবারকের পরিবর্তে জনগণের সমর্থন পুষ্ট মুসলিম ব্রাদারহুডের মুরসি সরকারকে কাতার সমর্থন দেয়। ২০১৩ সালে মুরসিকে উৎখাত করে জেনারেল সিসি ক্ষমতা দখল করলে সৌদী আরব জেনারেল সিসির মিলিটারি সরকারকে সমর্থন করে। প্রকাশ্যে না বললেও ধারণা করা হচ্ছে যে বর্তমান সৌদী-মিশর ও কাতারের এই বিরোধের মূলে রয়েছে আরব বসন্ত ও মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি কাতারের সমর্থন। সৌদী আরব ও মিশরের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে সিরিয়ার আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট নুসরা ফ্রন্ট, এমনকি আইএসের মতো সশস্ত্র সংগঠনকেও কাতার নাকি রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সীমিত পরিমাণে হলেও অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
আর যেসব ফ্যাক্টরকে বর্তমান বৈরিতার কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে আল জাজিরা টেলিভিশনকে কাতারের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দান। মুসলিম ব্রাদারহুডকে গুরুত্ব দেওয়া এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সমালোচনার কারণে সৌদী আরব ও আরব আমিরাত অনেক দিন ধরে আল জাজিরার সমালোচনা করছে। সৌদী আরবে এই চ্যানেলের অফিসগুলো এবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
\চার\
দেখা যাচ্ছে যে সৌদী আরব এবং তার মিত্রগণ কর্তৃক কাতারের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া এখনও শেষ হয়নি। শুধু মাত্র ক‚টনৈতিক সম্পর্কই তারা ছিন্ন করেনি, কাতারের সাথে স্থল, বিমান ও সমুদ্র পথের সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। কাতার এয়ার ওয়েজ যেমন ঐসব দেশে যেতে পারে না তেমনি সৌদীয়া ও এ্যামিরেট সহ ঐসব দেশের বিমানও কাতার আসে না। যদিও ঐসব দেশে কাতারি নাগরিকগণকে ১৪ দিনের মধ্যে চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে ৩-৪ দিন পরেই তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয় কাতারের ৫৩ জন নাগরিককে সন্ত্রাসী, এই অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে মনে হচ্ছিলো যে, কাতার আর কয়েকদিন টিকবে। এর মধ্যে ঘটে গেল একটি নাটকীয় ঘটনা। তুরস্ক ঘোষণা করে যে কাতারে তার যে সামরিক ঘাঁটি রয়েছে সেটি থাকবে এবং সেখানে আরো তুর্কি সৈন্য মোতায়েন করা হবে। বলা বাহুল্য, এর অর্থ হলো প্রয়োজন হলে সামরিকভাবে হলেও তুরস্ক কাতারের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।
গুজব রটেছিল যে, কাতারের আমিরের প্রাসাদ আক্রমণ করবে সৌদী আরব। এই লেখার সময় অন লাইনে দেখলাম যে ইরানের বিপ্লবী গার্ডরা নাকি ইতোমধ্যেই কাতারের আমিরের রাজপ্রাসাদ রক্ষা করার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তারা নাকি কাতারের আমীরের রাজপ্রাসাদের চারদিকে টহল দিচ্ছে। মধ্য প্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশ সরাসরি কাতারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় কাতার নিরালম্ব হয়ে পড়েনি।
সৌদী আরব ও কাতার বিরোধে একটি গুরুত্ব ভ‚মিকা রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের। পাকিস্তান এই দুইটি দেশেরই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাই তারা এই বিরোধে কোনো পক্ষ অবলম্বন করতে চায় না। কিন্তু ক‚টনৈতিক চ্যানেলে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তাই তারা প্রকাশ্যে কোনো ভ‚মিকা নিতে চাচ্ছে না। ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো জেনে গেছে যে পাকিস্তান চাচ্ছে না যে এই বিরোধে কাতার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হোক।
এব্যাপারে মার্কিন ভ‚মিকা রহস্যময়। আমেরিকা দুইটি দেশেরই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র। চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব বিরোধ থামিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তা দিচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি ধারণা এই যে, কাতারের ব্যাপারে আমেরিকার চোখ অনেক দূরে প্রসারিত। আর সেটি হলো কাতারের অফুরন্ত তেল এবং গ্যাস সম্পদ। আমেরিকার মতলব আর কিছুদিনের মধ্যেই টের পাওয়া যাবে।
journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
রিমন ১৩ জুন, ২০১৭, ১:৫৬ এএম says : 0
এর পিছনে সকল কলকাঠি নাড়ছে আমেরিকা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন