শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদিগন্ত

শিশু হত্যা, নির্যাতনের নেপথ্যে

প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবুল কাসেম হায়দার
দেশে হত্যা, নির্যাতন বেড়ে গেছে। প্রতিদিন শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। গুম করা হচ্ছে। শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় যেন সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। দেশে শিশু নির্যাতন ঘটনা এক রকম নয়; মুক্তিপণ আদায়, চুরির অভিযোগ, অপহরণ, শিশু পাচার, শিশু চুরি, বিক্রি, অবশেষে হত্যাকা- প্রভৃতি। আমরা আজকাল শিশু নির্যাতনের এসব ঘটনাকে একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বলে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বিষয়টি মোটেই ঠিক নয়। সমস্যার গভীরে আমাদের যেতে হবে। তবেই প্রকৃত কারণ সহজে আমরা বের করতে পারব। দেশে শিশু হত্যা বেড়ে চলেছে। গত পাঁচ বছরে ১ হাজার ১২২ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের হিসাব অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ২০১২ সালে হত্যা করা শিশুর সংখ্যা ২০৯, ২০১৩ সালে ২১৮, ২০১৪ সালে ৩৬৬, ২০১৫ সালে ২৯২ এবং ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত ৩৭। (সূত্র দৈনিক সমকাল, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ’১৬)
দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিগত অর্থবছরে দেশে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ার টার্গেট নির্ধারণ করেছে সরকার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু শিশু হত্যা, নির্যাতন আমাদের উন্নতির প্রবৃদ্ধি কোনো কিছুই আমাদেরকে বিরত করতে পারেনি। আমাদের দেশে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা হচ্ছে, আমাদের দেশে আকাশচুম্বী দালান হচ্ছে, বড় বড় রাস্তা হচ্ছে, রপ্তানি আয় আমাদের ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে কেন আমাদের শিশু নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না।
১) আমাদের সমাজ ব্যবস্থাই শিশু হত্যার জন্য মূল কারণ। অনেকে মনে করেন পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা মানুষকে অমানুষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। শুধু অর্থ, সমাজ, অর্জনই পুঁজিবাদী সমাজের মূল চিন্তা। কীভাবে মানুষ অর্থশালী হবে, কীভাবে এক একজন অর্থের পাহাড় গড়বে, কীভাবে এক একজন জমি, বিল্ডিংয়ের মালিক হয়ে ভোগবিলাসে নিজের জীবন কাটাবেÑতাই হচ্ছে আমাদের সমাজের মূল চিন্তা। মানুষের প্রতি মানুষের কোনো দয়া-মায়া, মমতা কিছুই নেই। শুধু আমাকে বড় হতে হবেÑএটাই যেন একমাত্র লক্ষ্য। পুঁজিবাদ যেমন আমাদের সমাজকে সম্পদশালী করেছে, তেমনি করেছে অমানুষ। পুঁজি সব সময় নির্মমভাবে খোঁজে ভোগ ও মুনাফা। সমাজের বৃহত্তম অংশ যখন ক্ষুদ্রতম অংশ কর্তৃক শোষিত হতে থাকে, তখন বিশাল জনগোষ্ঠী হয়ে পড়ে প্রতিশোধপরায়ণ। মানুষ হয়ে পড়ে প্রতিশোধপরায়ণ। আর তখন পুঁজিবাদ কাউকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। অসন্তুষ্ট মানুষ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। আর সমাজের এই অসন্তুষ্ট মানুষ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সহসলভ্য শিশুদের টার্গেট করে। কেননা, শিশুরা দুর্বল। প্রতিরোধ করার ক্ষমতা শিশুদের নেই। শিশুরা প্রতিরোধে অক্ষম।
আমাদের এত উন্নতি, বিকাশ, বিশ্ব সমাজে এত কদর, সব কিছুর পিছনে পুঁজিবাদের কল্যাণ। কিন্তু এত সমাজ, ভোগ, বিলাসের মাঝেও যেন কি অসহনীয় আর্তনাদ রয়েছে। শিশুদের নির্যাতনের পিছনে রয়েছে ভোগবাদ তথা পুঁজিবাদ। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, পুঁজিবাদ আমাদের শিশু নির্যাতনের একটি অন্যতম কারণ।
অন্য আরেকটি কারণ সবার নিকট পরিচিত, তা হচ্ছে দেশে বিচারহীনতা। শুধু শিশু নির্যাতনের বিচার নয়, অনেক নির্যাতনের বিচার ঠিকমতো বা ঠিক সময়ে হয় না বলে অন্যায়, অবিচার, শিশু নির্যাতন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। কারণ যারা নিষ্ঠুরতা করে, অন্যায় করে, অবিচার করে, শিশু নির্যাতন করে, তারা সমাজের ক্ষমতাসীন বা উঁচু পর্যায়ের লোক। তাদের শক্তি অনেক বেশি।
পৃথিবীতে প্রথম শিল্প বিপ্লব ঘটে ইংল্যান্ডে। এই বিপ্লব হয়েছিল পুঁজিবাদী চিন্তা-চেতনা থেকে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে কবি উইলিয়াম ব্লেক পুঁজিবাদী নির্যাতনে শিশু নির্যাতনকে প্রতীক হিসেবে চিন্তা করেছেন। কবি ব্লেক শিশু নির্যাতনের কথা ইংল্যান্ডে বড় লোকদের চিমনি পরিষ্কারে শিশুদের ব্যবহারের নিন্দা করেছেন। পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত শিশুদের সস্তা শ্রমিক হিসেবে শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি গৃহকর্মে শিশুদের ব্যবহার নির্যাতনের অন্য এক রূপ। ছোট ছোট দোকান, কারখানায় শিশুদের ব্যবহার করা হয়, সেখানেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশুরা।
৩) পুঁজিবাদের আর একটি দিক হচ্ছে সে পিতৃতান্ত্রিক। তাই সমাজে শিশু, নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর সেকারণেই সমাজে ধর্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কন্যাশিশুরাও ধর্ষণের শিকার। তাই বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। পিতা কন্যাকে বাল্যবিবাহ দিয়ে দায়মুক্ত হতে চায়। দারিদ্র্য আমাদেরকে শিশু নির্যাতনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পিতা মনে করছে পুত্র সন্তান হলে কর্মীক হাত বৃদ্ধি পাবে। তাই বারবার কন্যা সন্তান হওয়ার পর পুত্র সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছে। তাই জনসংখ্যাও আমাদের বাড়ছে। আমাদের পুঁজিবাদী সমাজ সস্তা শ্রমিক পাওয়ার জন্য শিশুদের ব্যবহার করছে। অভাবের কারণে শিশুরা শ্রমে নিয়োজিত হচ্ছে। তাই শিশু নির্যাতনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪) যে কোনো বিপদের সময় শিশু ও নারীদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। বন্যা, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধের সময় শিশু ও নারীরা বেশি সমস্যায় পড়ে। পিতা স্ত্রী, সন্তানকে ছেড়ে অন্যত্র সহজে চলে যেতে পারেন। বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন। কিন্তু মা যেতে পারেন না। মা এক বা একাধিক শিশু সন্তানকে নিয়ে কষ্ট করেন। শিশুকে বড় করার দায়িত্ব নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেন। আমাদের দেশে ৪০ শতাংশের মতো মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। অভাব তাদের জীবনের সঙ্গী। আর শিশুদের যতœ সবচেয়ে কম এসব দরিদ্র পরিবারে। তারা ঠিকমতো খাওয়া পায় না। কাপড় পায় না, চিকিৎসা পায় না, লেখাপড়া করতে পারে না। খেলাধুলা করতে পারে না। অপুষ্টিতে জীবনের শুরুতে তাদের জীবনের অবসান ঘটে। অন্য দিকে ধনী পরিবারে শিশুদের অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হয়। ধনী শিশুদের ওজন বেড়ে যায়। তারা আবার মাঠের অভাবে খেলাধুলা করতে পারে না। টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ফেসবুক দেখে দেখে চরিত্রহীনতায় ভোগে। কিছু দিন পর সঙ্গদোষে মাদকে আক্রান্ত হয়ে সমাজের ক্ষতিকারক কীট হিসেবে বেড়ে ওঠে। শিশুদের জন্য মানসম্মত, নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন বই লেখা হয় না, পড়া হয় না। অথচ আমাদের উন্নতি হচ্ছে। আমরা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছি। এই উন্নতি সমাজের নিকট বড় প্রহসন। এই উন্নতি অমানবিক। শিশুদের এই নির্যাতন, হত্যা আমাদের সব উন্নতিতে ম্লান করে দিয়েছে এবং আমাদের সব উন্নয়নকে অপরাধী করে ফেলেছে।
৫) আমাদের সবার মধ্যে প্রতিহিংসা দারুণভাবে বেড়ে গেছে। সমাজের উঁচু স্তর থেকে নি¤েœ পর্যন্ত সবার মধ্যে প্রতিশোধ নেয়ার হিংস্রতা বেড়ে গেছে। সবার মনের মধ্যে আমরা প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছাকে জাগ্রত করে দিয়েছি। মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, আদর করবে, যতœ করবেÑএই ধরনের মনোভাব আমাদের সবার নিকট থেকে চলে গেছে।
মানুষ সৃষ্টির মূল রহস্য কী? কেন মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে? মানুষ দুনিয়াতে কী করবে? কীভাবে জীবনযাপন করবে? মানুষ কীভাবে অন্যের সঙ্গে ব্যবহার করবে? এসব বিষয়ে আমাদেরকে কে শিক্ষা দেবে? কোথা হতে আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি? পুঁজিবাদ আমাদের এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না। সেক্যুলারিজম বা কমিউনিজমও আমাদের এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না। তা হলে আমরা কোথা থেকে এসব প্রশ্নের জবাব পাব? আমরা অন্যের মতামতকে গ্রহণ করতে পারি না। অন্যের সমালোচনা সহ্য করতে কষ্ট হয়। শুধু আমার প্রশংসা করা হোকÑএটাই আমরা চাই। তাই বিপরীত আদর্শের মানুষের কর্মকা- করতে আমরা শত বাধা সৃষ্টি করছি। তাই দেশের মানুষ অনেক ক্ষেত্রে দিশাহারা। মনে কষ্ট নিয়ে মানুষ জীবন কাটাচ্ছে। কেউ কেউ অল্পতে বিদ্রোহ করছে। কিছু অংশ প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মাঝে মাঝে বিদ্রোহ করছে। এসব সৃষ্টি আমাদের মধ্যে সহনশীলতা নেই বলে। বড়দের সম্মান করা, শিক্ষিতদের মূল্য দেয়া যেন আমরা একেবারে ভুলে গেছি। আমাদের উঁচু স্তর থেকে শুরু করে সর্ব নি¤েœ পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থার পরিবর্তন খুবই জরুরি। তা না-হলে শিশু নির্যাতন শুধু আইন করে, বিজ্ঞাপন দিয়ে বন্ধ করা যাবে না। মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানুষকে ¯েœহ করতে হবে মন থেকে। রাজনীতির জন্য প্রদর্শিত ভালোবাসা আমাদের সমাজ থেকে শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে পারবে না। মানুষকে ক্ষমা করা শিখতে হবে। আমাদেরকে ক্ষমা করার অভ্যাস করতে হবে। কথায় কথায় প্রতিশোধ, মামলা দিয়ে সমাজে শান্তি আসবে না। শিশু নির্যাতনও বন্ধ হবে না। ক্ষমা মহত্বের লক্ষণ। ক্ষমা মানুষকে বড় করে। মহানবী (সা.) মক্কা বিজয়ের পর সব অপরাধীকে ক্ষমা করে দিয়ে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছেন। আজও আমাদের মধ্যে ক্ষমার চর্চা অধিক হারে করতে হবে। তবেই সমাজে শান্তি আসবে, সুখ আসবে, ভালোবাসা পাওয়া যাবে, সমাজ সুন্দর হবে।
৬) নারী ও শিশু রক্ষা আইন আরও কঠোর করতে হবে। আইনকে দলমত নির্বিশেষে কার্যকর করতে হবে। শিশুদের শিশু হিসেবেই দেখতে হবে। তাদের অধিকারের প্রতি সবাইকে সচেতন হতে হবে। শিশুরা শিশু, শিশুরা বয়স্ক মানুষ নয়Ñতা আমাদের মনে রাখতে হবে। শিশুদের সুস্থ থাকার অধিকার রয়েছে। তাদেরকে আনন্দ দিতে হবে। তার জন্য সমাজের উন্নতি ধনী দরিদ্র সবার জন্য সমান তালে করতে হবে। সব সুযোগ-সুবিধা ধনীদের জন্য করলে সব সময় শিশুরা বঞ্চিত হবে। সমাজের উন্নতি পাহাড়ের মতো না হয়ে নদীর মতো হতে হবে। তা না হলে উন্নতি যত বৃদ্ধি পাবে, অমানবিকতা, বিচারহীনতা ও নিষ্ঠুরতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সমাজের অবস্থা বর্তমানে তা বিরাজমান।
৭) বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজের যে চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি তা তার নিজস্ব রূপ। পুঁজিবাদের কোনো সংস্কার করা যাবে না। কিন্তু এই উন্নতিকে জনগণের মাঝে নিয়ে যাওয়া, জনসম্পৃক্ততা পুঁজিবাদী সমাজের খারাপ দিক থেকে বাঁচার উপায়। এ জন্য গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করতে হবে। জনমত প্রকাশে অবাধ স্বাধীনতা থাকতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের কথা বলা, কর্মসূচি পালনসহ যাবতীয় গণতান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ সব সময় থাকতে হবে। তা হলে সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন সফল হবে। সমাজে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সুবিবেকের সুচেতনাসমূহের লালন বৃদ্ধি করতে হবে। নিজের আমিত্ব দূর করে, অন্যের উপকার, সহযোগিতা, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে নিজের চরিত্র গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আইনকে শুধু নিজের জন্য ব্যবহার না করে সবার জন্য সমান ব্যবহার নিশ্চিত আইন বিভাগসহ সরকারকে করতে হবে।
৮) শিশু নির্যাতনের ভয়াবহ মাত্রা আমাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে, আমাদের সমাজকে ধিক্কার দিচ্ছে। আর আমরা যারা এই সমাজে এসব অন্যায়কে মেনে নিচ্ছি তাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে। শুধু কিছু ব্যক্তি, সংগঠন, দল এই শিশু নির্যাতনের জন্য দায়ী নয়, আমরা সবাই অপরাধী। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হলে আমাদের সমাজকে বদলাতে হবে। শিশু না বাঁচলে আমরা বাঁচতে পারব না। হয়তো আমরা বাঁচব, কিন্তু মানুষের মতো নয়। পশুর মতো আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের মধ্যে ক্রমাগত পশুত্ব হিংস্র হয়ে উঠছে। মনুষত্ব বোধ ধীরে ধীরে লোপ পেয়ে যাচ্ছে। এই হিংস্রতা সব সুকর্মকে বিলীন করে দিচ্ছে। সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে তা লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে উপরের স্তরের, কর্মপরায়ণ মানুষের মধ্যে হিংস্রতা দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে। আজ থেকে ১৫ শত বছর পূর্বে আরবে কন্যাশিশুদের প্রতি যে বর্বরতা, নির্যাতন, হত্যা চলেছিল ঠিক তেমনি যেন আমাদের সমাজে তা ফিরে এসেছে। এখন শুধু কন্যাশিশু নয় পুত্র শিশুরাও নির্যাতনের শিকার। সে যুগে পরিবর্তন এসেছিল একটি বিপ্লবের মাধ্যমে। সারা দুনিয়ায় সেই পরিবর্তন ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিবর্তনের ফলে মানুষ ভালোবাসতে শিখে, মানুষকে সম্মান করতে শিখে, শিশু ও নারীদের মর্যাদা পরিপূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শিশু নির্যাতন একেবারেই সমাজ থেকে চলে গিয়েছিল। আজও আমাদের সমাজকে তেমনি একটি আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে সোনালি যুগে ফিরিয়ে নিতে হবে, তবেই শিশু নির্যাতন, হত্যা বন্ধ হবে। সমাজ হবে সুসভ্য, সব মানুষের কল্যাণে একটি বাসযোগ্য আবাস।
য় লেখক : সাবেক সহসভাপতি, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও বিটিএমইএ
ধয়যধরফবৎ@ুড়ঁঃযমৎড়ঁঢ়নফ.পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
untold fact ১২ মার্চ, ২০১৬, ৬:৪৯ পিএম says : 0
এ প্রবন্ধে শিশুহত্যা ও নির্যাতন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলেও ফাইল ছবিতে ব্যবহৃত ঘটনাটির আসল দিকটা উল্লেখ করা হয়নি। লেখাপড়া নিয়ে অনাবশ্যক খুঁতখুঁতেপনা এবং ডিগ্রী ও ক্যারিয়ার নিয়ে অভিভাবকদের অতিরিক্ত নেশা ও অস্থিরতাই যে এসব মাতলামির কারণ, সেই বিষয়টি এখানে আলোচিত হয়নি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন