ফেনীর মহিপালে নোয়াখালী সড়কে অবস্থিত বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের নানা সমস্যার সাথে যোগ হয়েছে পানিবদ্ধতা। বছরের প্রায় ৮ মাসই এ ক্লিনিকের মাঠে ও প্রবেশপথে বৃষ্টির পানি জমে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি করে। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান ময়লা পানিতে তলিয়ে যায় বক্ষব্যাধি ক্লিনিকটি। পূর্বে ক্লিনিকের এ অবস্থা ছিল না বলে জানালেন কর্তৃপক্ষ।
গত ২ বছর আগে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র ড্রেনটি ভরাট করে এখানে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়। ফলে ক্লিনিকটি ছাড়াও গণপূর্ত উপ-বিভাগ ফেনী বিএডিসিসহ বিভিন্ন অফিস পানিতে ডুবে থাকে। এতে ক্লিনিকে কর্মরত ডাক্তার, কর্মচারী ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগিরা সীমাহীন বিপাকে পড়ে।
সরেজমিন পরিদর্শন, গিয়ে এসব ভোগান্তির চিত্র দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেনীতে টিবি- যক্ষা ও কুষ্ঠ রোগের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ফেনী মহিপাল বক্ষব্যাধী ক্লিনিক। এখানে বিনামূল্যে শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিস ও বিনামূল্যে কাশি পরীক্ষা করা হয়। এখানকার বহি:বিভাগে প্রতিমাসে ৭/৮শ রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। এছাড়া এ ক্লিনিকে রোগী ভর্তি হয়ে বাসায় অবস্থান করে সময়মত এসে ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে।
সামান্য বৃষ্টিতেই ক্লিনিকটির প্রবেশপথ ও মাঠ কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। ফলে রোগীরা কাদা পানিতে একাকার হয়ে ক্লিনিকে যেতে হয়। ড্রেনের পঁচা পানি শরীরে লাগার পর অনেকে চর্ম রোগে আক্রান্ত হন। এবিষয়ে গনপূর্ত অধিদপ্তরকে বার বার জানালেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি। ফলশ্রুতিতে বর্ষাকালে সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। ফেনী পৌরসভার উদ্যোগে সম্প্রতি সড়কের অপর পাশে ৬ ফুট চওড়া ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ অংশের কাজও অল্প সময়ের মধ্যে শুরু হবে। জানতে চাইলে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আজিজুল হক বলেন, মহিপালের জিরো পয়েন্ট থেকে পাঁচগাছিয়া পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ড্রেন খনন ও নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
ক্লিনিক সূত্র জানায়, বক্ষব্যাধি নির্ণয়ের অন্যতম পরীক্ষা হচ্ছে এক্সরে। কিন্তু পূর্বের পুরাতন একটি এক্সরে বছরের পর বছর ধরে বিকল রয়েছে। এছাড়া ২০০৯ সালে এক্স-রে মেশিন বিকল হলে কয়েকবার মেরামত করেও কোন ফল হয়নি। ক্লিনিকের ভবনটিও জরাজীর্ণ। বৃস্টি হলে ছাদ ছুইয়ে পানি পড়ে এতে মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট হয়। এখানে অতি মূল্যবান একটি জিন এক্সপার্ট মেশিন চালু করা হয়েছে কিন্তু নিদিষ্ট তাপমাত্রা ব্যবহার করা না গেলে মেশিনটিতে সমস্যা দেখা দেয়। মেশিন স্থাপনের সময় এসি স্থাপন করা হলেও তা বৈদ্যুতিক ভোল্টেজের কারণে মেশিনটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সমস্যার বিষয়ে ফেনীর সিভিল সার্জন ও গনপূর্তকে জানানো হয়েছে। এছাড়া এখানে জনবল সংকট ও রয়েছে।
কফ পরীক্ষার ল্যাব টেকনিশিয়ান ও রেডিওগ্রাফার পদ শূন্য, চারজন পিয়নের স্থলে রয়েছে ১জন, ২টি আয়ার পদ শুন্য রয়েছে। সহকারী নার্স পদটি শূন্য রয়েছে। নেই লেডিহোম ভিজিটর ও ড্রাইভার। বক্ষব্যাধী ক্লিনিকের কনসালটেন্ট ডা. মীর ইফতেখার মোস্তাফিজ ইনকিলাবকে জানান, বৃষ্টি হলে পানি ক্লিনিকের ভেতর প্রবেশ করে ও গেইটসহ সামনের অংশ ডুবে যায়। ড্রেন ভরাট করে সিএনজি স্ট্যান্ড করায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এতে ভোগান্তি চরমে উঠছে। পানির সমস্যা দূরীকরণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। এখনো কার্যকর কোন পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন