শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

রাঙ্গুনিয়া বনাঞ্চল বৃক্ষশূন্য!

বেপরোয়া কাঠ পাচার

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের পোমরা বিটের বন উজাড় করে কাঠ পাচারের মহোৎসব চলছে। সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবৈধভাবে শতশত কাঠুরিয়া মূল্যবান গাছ কেটে অবৈধ গড়ে উঠা স্থানীয় করাতকল (স’মিল) মজুদ করছে। বনায়নের অপরিপক্ক কঁচি গাছ বিভিন্ন ইটভাটায় পাচার করা হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গোল, রদ্দা ও ছিড়াই কাঠ পোমরা বিট সড়ক হয়ে বিভিন্ন পরিবহনে ওপেন সিক্রেট পাচার হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের পোমরা বিটে বিশাল এলাকাজুড়ে সেগুন, গামারি, আকাশমনি, গর্জন, চাপালিশ সহ বিভিন্ন প্রজাতির লক্ষ লক্ষ গাছ রোপন করা হয়। পোমরা বনবিভাগের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে গত কয়েকবছরে মূল্যবান বনাঞ্চল উজার শুরু হয়। বনদস্যুদের বেপরোয়া কাঠ পাচারের কারণে বনাঞ্চল বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ছে। বনাঞ্চলে কাঠচোরদের উৎপাত দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে।

পোমরা মাল্যেরহাট এলাকার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বনাঞ্চল উজার করার পর প্রভাবশালীরা বন বিভাগের জায়গা দখলে নেয়। নদীভাঙা মানুষ ও রোহিঙ্গাদের কাছে চড়া মূল্যে এসব জায়গা বিক্রি করছে চক্রটি। স্থানীয় এক মেম্বারের নেতৃত্বে একাধিক সিন্ডিকেট পোমরা বিটকে ম্যানেজ করে শতশত একর সরকারি জমি ক্রয়-বিক্রয় করছে। বেপরোয়া বন উজারের কারণে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।

পোমরা শান্তিরহাটের ওসমান গণি বলেন, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন চোরাই কাঠের আড়ত থেকে কর্ণফুলী নদীপথে এনে বেতাগী সড়ক, শান্তিরহাট-মাল্যেরহাট সড়ক, গোচরা সড়ক, ভবানি সড়ক ও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম হয়ে বিভিন্ন যানবাহনে চোরাই কাঠ চট্টগ্রামে পাচার হচ্ছে। বন বিভাগকে ম্যানেজ করে এসব চোরাই কাঠ বিনা বাধায় রাজস্ব ছাড়া পাচার হয়ে যাচ্ছে। এতে বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ আয় বাড়লেও সরকার প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

ট্রাকচালক মোহাম্মদ করিম বলেন, শতশত কাঠুরিয়া বিভিন্ন বনাঞ্চলে কাঠ আহরণ শুরু করেছেন। এসব আহরিত কাঠ ইটভাটায় সরবরাহ হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার ইটভাটার মালিকরা ইতোমধ্যে কাঠ সংগ্রহ শুরু করছেন। প্রতি মৌসুমে একটি ইটভাটায় হাজার হাজার ঘনফুট জ্বালানি কাঠ পুড়ানো হয়। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়ন উজাড় করে প্রতিরাতে এসব কাঠ পাচার হচ্ছে।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চোরাইকাঠ পাচারের সাথে পোমরা বনবিভাগের কর্মচারী কথিত ক্যাশিয়ার সাইফুল ইসলাম জড়িত থাকায় কাঠ পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। পোমরা বিটের বন প্রহরী (এফজি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন চোরাই পয়েন্টে কাঠ পাচার চলছে। অফিস খরচ ও উর্দ্ধতন মহলকে ঘুষ দিতে হয় বলে চোরাইকাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়া হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন