কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়ায় লালনের এক তারা শিল্পের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। একতারা শিল্পের প্রসারে পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে স্থানীয়রা অভিমত প্রকাশ করেন। ‘সাধের লাউ বানালো মোরে বৈরাগী’ মরমী বাউল সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের এ গানের মধ্য দিয়ে লালন ভক্তরা সাঁইজির সত্তার সাথে মিশে আছে। তারা সাঁইজি ও লালন অনুসারীদের ব্যবহার্য যন্ত্র একতারার মান ধরে রাখতে একতারা শিল্প গড়ে তুলেছে। কুষ্টিয়া ছেউড়িয়ার মাজার এলাকা কারিকর পাড়া, বিশ্বাসপাড়া এলাকার সম্ভাবনাময় কুটির শিল্প গড়ে উঠেছে। অত্র এলাকার মানুষ ক্ষতিকর তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য ও উৎপাদন থেকে নিজেদের গুটিয়ে বিকল্প আয়ের উৎসব হিসেবে লালনের একতারা শিল্পের কাজ শুরু করেছে। এসব গ্রামের লোকেরা একতারা শিল্পর তৈজষপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ কারণে এই শিল্প ছেউড়িয়ার গন্ডি পেরিয়ে কুষ্টিয়া ছাড়াও আশ পাশের উপজেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে।
একতারা কারখানার মালিক বাদশা জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিড়ির ফ্যাক্টরিতে কাজ করতাম, অধিক পরিশ্রম, কম আয় হওয়াতে আমি বিকল্প আয়ের পথ হিসেবে একতারা তৈরির কাজ বেছে নিয়েছি। তিনি আরো জানান, একতারার চাহিদা ব্যাপক হওয়ার কারণে লাউয়ের বশ ছেড়ে নারিকেলের মালই ও কাঠ দিয়ে তৈরি করছি। তার কারখানায় ৮-১০ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা কুষ্টিয়াসহ পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে একতারা তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করি। একতারা তৈরির পক্রিয়া শেষ করতে একমাস সময় থাকে, বাঁশ, লাউয়ের বশ, নারিকেলের মালাই ২০-২৫ দিন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। ধারালো ছুরি দিয়ে লাউয়ের বশ, নারিকেলের মালই বাঁশ, যটকরো করে কেটে পরিস্কার করতে হয়। পরিস্কার করে রোদ্রে শুকিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে তৈরি করতে হয় একতারা। একতারা তৈরি এখন লাভজনক। একতারা তৈরির উপকরণের মূল্য কম হওয়াতে তৈরি খরচ কম। একতারা তৈরির কারিগরদেরকে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্টপোষকতা দিলে সংস্কৃতির রাজধানীর নাম পূর্ণ মূল্যায়ন হবে। একতারার কারিগরদেরকে স্বল্প সূদে ঋণ দিলে একতারা শিল্পের বিকাশ ঘটবে। একতারা চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারি ও বেরসাকারি পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন