‘এ শিল্পের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ছিল চার টাকা, গত চার মাস থেকে নেসকো কর্তৃপক্ষ তা বৃদ্ধি করে ১০ টাকা করে’
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুনেরও বেশি বৃদ্ধি করায় চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকার প্রায় অর্ধশত মৎস্য হ্যাচারি মালিক। গত এপ্রির মাস থেকে মৎস্য খামারে বিদ্যুতের এই মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। মৎস্য খামারের বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারনে উপজেলার মৎস্য ব্যবসায় নীতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং মাছের রেনু পোনা তৈরি কম হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য খামারিরা। এতে মাছের উৎপাদন কম হরে ধারনা করা হচ্ছে। ফলে মাছের বাজারেও প্রভার পরার সম্ববনা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ছোট বড় মিলে মৎস্য খামারের সংখ্যা প্রায় ৫০টি। হাচারীর পাশাপাশি উপজেলায় রয়েছে সহস্রাধিক ছোট বড় পুকুর। এই উপজেলায় মাছ চাষের সাথে জড়িত রয়েছে কয়েক হাজার শ্রমজীবী মানুষ। পোনা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষের জন্য আদমদীঘি উপজেলা বিখ্যাত। এখানকার মৎস্য চাষিরা একাধিকবার জাতীয় পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন। এ এলাকার উৎপাদিত বিভিন্ন মাছের পোনা স্থানীয়ভাবে চাহিদা পুরুন করে দেশে ও বিদেশে রপ্তানী হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। প্রতিটি মৎস্য খামারে শ্রমিকের কাজ করার পাশাপাশি মাছ বিক্রি করে এলাকার অনেক বেকার মানুষ এখন স্বাবলম্বি। মৎস্য খামারে মূল্য বৃদ্ধির কারনে উপজেলার মৎস্য ব্যবসায় নীতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং মাছের রেনু পোনা তৈরি কম হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য খামারিরা। এতে মাছ উৎপাদন কম হরে। ফলে মাছের বাজারেও প্রভারা পরার সম্ববনা দেখ দিয়েছে।
এখানকার হ্যাচারিতে পোনা মাছের সাথে উৎপাদন হয় বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ। উপজেলার বিশল এলাকাজুড়ে মৎস্য খামারে রেনুপোনাসহ পাঙ্গাস, থাই কৈ, মনোসিস তেলাপিয়া, কার্পিও, গুলসা, শিং, পাবদার পাশাপশি রুই, কাতলা, মৃগেল মাছের পোনা উৎপাদনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। মৎস্য চাষে সফলতার স্বীকৃতিস্বরুপ মাছচাষি বেলার হোসেন ও মহিদ তালুকদার দুজনই একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় স্বর্ণপদক পুরস্কার। হঠাৎ করে হ্যাচারি শিল্পে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করায় হ্যাচারি মালিকসহ এর সাথে জড়িত বিপুল পরিমান মানুষ ক্ষতির সম্মখীন হয়ে পরেছেন। মৎস্য ব্যবসায়ী মহিদ তালুকদার বলেন, এর আগে এ শিল্পের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ছিল চার টাকা, গত চার মাস থেকে নেসকো কর্তৃপক্ষ তা বৃদ্ধি করে ১০ টাকা করে। বর্তমানে এই মূল্য সামান্য কমিয়ে ৮ টাকা করা হয়েছে, এরপরও হ্যাচারি মালিকদের দ্বিগুন মুল্যে বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে যা সকলের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। অপর হ্যাচারি মালিক বেলাল হোসেন বলেন, এ ভাবে এ শিল্পে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে অনেক হ্যাচারি বন্ধ হয়ে যাবে, কর্মহীন হয়ে পড়বে প্রচুর শ্রমিক।
উপজেলা হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান বলেন, মাছ চাষ কৃষির আওতায় পড়ে সে কারনে হ্যাচারির জন্য বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। তিনি সরকারের প্রতি বিষয়টি বিবেচনা করার দাবি জানান।
নেসকো বগুড়ার সান্তাহার বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রেজানুর ইসলাম বলেন, এটি সরকারি সিদ্ধান্ত, তবে এর আগে যে পরিমান বিল বেশী করা হয়েছিল তা পর্যায়ক্রমে সমন্বয় করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন