আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে
রমজানের শেষে আসছে ঈদ। শীঘ্রই শুরু হবে বাড়ি মুখো মানুষের যাত্রা। শুরু হয়েছে আষাঢ় মাস। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে লাগাতার বর্ষণ। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেনের কাজ শেষের দিকে। আর অপরদিকে গর্তে ভরে গেছে পুরো ফোরলেনের অধিকাংশ অংশ। বিশেষ করে অকার্যকর ওভারলোডিংয়ে দেবে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইতোমধ্যে ফোরলেন সংস্কার কাজ শুরুর কথা জানালেও বৃষ্টি বন্ধ না হলে সংস্কার কাজ সম্ভব নয়। আর এতে দুর্ভোগ আসন্নই। বিশেষ করে সিটিগেট থেকে মিরসরাই উপজেলার ধূমঘাট পর্যন্ত অবস্থা অনেক স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ রূপ নিয়েছে। কোথাও ফোরলেনের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে দু’পাশেই দেবে গিয়ে লম্বাকৃতির গর্ত আবার কোথাও এক লেনের পুরো বৃহদাংশই দেবে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে বেহাল দশায় এখন ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেন। এর জন্য সচেতন চালকরা ওভারলোডিংকেই দায়ী করছে। কারণ একপাশে রেল লাইনের মতো দীর্ঘ হয়ে এই গর্ত দিয়ে কোন ভারী গাড়ি বা দ্রুতগামী হালকা গাড়িসহ সব রকমের যানবাহনই চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ থেকে ১০ টনের ট্রাক ও লরিগুলোতে ইচ্ছেমতো ২০-৩০ টন মালামাল নেয়ার অভিযোগ রয়েছে নিয়মিতই। সীতাকু- উপজেলার শেষপ্রান্ত মীরসরাই উপজেলা সংলগ্ন ওভারলোডিং কন্ট্রোল এক্সেল-এর কর্তা হতে কর্মী সকলেই এখানে শুধু ট্রাক প্রতি লোডিং হিসেবে চাঁদা বা বখশিশই উত্তোলন করছে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত কয়েকমাস পূর্বে সরেজমিন এখানে এসে অভিযান চালালে ও সর্Ÿোচ্চ ১৫ দিন ঠিক ছিল। বর্তমানে সবাই পূর্বের হালেই আবার অবস্থান নিয়েছেন। বিষয়টি যেন কেউ দেখে ও দেখছে না। আর এইসব ওভারলোডিং ট্রাক লরি কাভার্ডভ্যানগুলো সড়কের ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি মালামাল পরিবহন করায় সড়কের আজ বেহাল দশা। বাড়বকুন্ড, নিজামপুর, খৈয়াছরা, মিঠাছরা, সোনাপাহাড়, মস্তাননগর এলাকায় অন্তত কয়েক কিলোমিটার পর পর অপর কয়েক কিলোমিটার জুড়ে পুরো ৭০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় ৩৫ কিলোমিটারই মধ্যখানে লম্বা গর্ত হয়ে মোটরবাইক, কার, মাইক্রো, বাস, সকল যানবাহন ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলার উপযোগীও নেই। এই সব অংশে গর্ত এতোটাই বড় হচ্ছে শীঘ্রই বৃষ্টির পানিতে বড় বড় গর্ত হয়ে যানজট অনিবার্য। সম্প্রতি নিজামপুর, হাদিফকিরহাট, খৈয়াছরা এলাকায় পর পর কয়েকটি দুর্ঘটনা এই গর্তের জন্যই ঘটেছে। এরই মধ্যে চলে এসেছে আষাঢ় মাস। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। সৃষ্টি হওয়া গর্তগুলোতে পানি জমে বেহাল দশায় পৌঁছাবে শীঘ্রই। আর ফোরলেন বিভাগ কিংবা সড়ক বিভাগ বলবে রোদ উঠলে সংস্কার করবো। কিন্তু প্রশ্ন হলো সড়ক ও সেতুমন্ত্রী সর্বশেষ বলেছিলেন চলতি জুনেই সম্পন্ন হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেন। কিন্তু শেষ হবার আগেই সৃষ্টি হলো গর্ত। এই গর্তের কবলে এবার রাস্তা চৌচির হয়ে সৃষ্টি ভেঙে যাবে। আর আসন্ন ঈদের পূর্বে এ সকল গর্ত মেরামত করা না হলে ঈদে যানজটের কবলে পরে ঘরমুখো মানুষগুলো রেহাই পাবে না। এই বিষয়ে ফোরলেনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, গর্ত হয়ে যাওয়া অংশগুলো শীঘ্রই আমরা সংস্কার করবো। তবে ওভার লোডিং স্টেশনের কর্মচারীরা সকল ওভারলোড গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছে মাসোহারার বিনিময়ে এই বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এইসব বিষয়ে এই অঞ্চলের ঠিকাদার রেজা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রবিউল হোসেন কে বার বার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে পুরো ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোরলেনের প্রকল্প পরিচালক আফতাব উদ্দিন খানের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই সকল কাজ শেষ করতে। আশা করছি এই বর্ষায় ও দেশবাসী পুরো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফোরলেনে গর্তবিহীন স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ বা যাতায়াত করতে পারবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন