ছোট ফেনী নদীর অব্যাহত ভাঙনে গত কয়েক বছরে নোয়াখালি জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী, পূর্বচর হাজারী, মুচাপুর গ্রাম, ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর, কাটাখিলা, চর সাহাভিকারী, উত্তর ও পশ্চিমচর দরবেশ গ্রামসহ বিস্তীর্ণ জনপদে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, নদী ভাঙন রোধ সমুদ্রের লোনা পানি থেকে রক্ষা ও অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৬৭- ৬৮ ইং সালে উক্ত নদীর উপর কাজিরহাটের অদুরে ২০ ভোল্ড একটি রেগুলেটর নির্মাণ করা হয়। রক্ষণা ও মেরামতের নামে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে ২০০২ সালে রেগুলেটর কি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখন থেকে নদী ভাঙন আবারও শুরু হয়। ভাঙন রোধে ওই নদীর মোহনায় মুছাপুর নামক স্থানে ২০০৯ ইং সালে মুছাপুর ক্লোজার নামে আর ও একটি ২৩ ভোল্ডের ক্লোজার নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভাঙন থেকে রক্ষা ও অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও সেনবাগ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও লাঙ্গলকোর্ট, ফেনীর সদর, দাগনভুঁইয়া ও সোনাগাজী উপজেলাসহ এ অঞ্চলে এসব ভোল্ডের ক্লোজার নির্মাণ হয়।
কিন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে নদীতে পানি ধরে রাখার কারণে পানির অভাবে কৃষক কোনো ধরনের চাষাবাদ করতে পারছে না অন্যদিকে গ্রামের পর গ্রাম নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
শিক্ষক আবদুর রহমান জানান, কাজির হাট নামক স্থানে নির্মিত রেগুলেটর কি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন এর পর থেকে আমাদের গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের পুত্র নজরুল ইসলামের বশতবাড়ী, বলি বাড়ি, জল দাসের বাড়ি, পূর্বচর হাজারী গ্রামের ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মসজিদ, ১টি মক্তবসহ ৫০টি বাড়িসহ হাজার হাজার একর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
সাবেক মেম্বার আবুল কাসেম জানান, আমার নিজ বাড়িসহ ১টি মক্তব, ২০টি দোকান, কয়েক হাজার ফসলী জমি এখন নদী গর্ভে। দুর্ভাগ্য আমাদের মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণের ফলে ও নদী ভাঙন রোধ হয়নি। এ ব্যাপারে পূর্বচর হাজারী গ্রামের সাবেক মেম্বার ও সফল কৃষক আবদুর ছোবান জানান, দাগনভুঁইয়া থেকে মুছাপুর ক্লোজার প্রর্যন্ত নদী প্রায় ৩০ কিলোমিটারের বেশী হবে। ওই নদীতে অন্তত ২০ বাঁক রয়েছে। ওই বাঁকের কারণে ও উজানের পানির প্রবল স্রোতে নদী ভাঙন থামছে না। তিনি বলেন নদীর বাঁকগুলো সোজা করা হলে ভাঙন রোধ হতে পারে।
এ ব্যাপারে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা আফসার উদ্দিন জানান, প্রয়োজনীয় বরাদ্ধের চেয়ে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পত্র পাঠিয়েছি। বরাদ্ধ পেলে নদী সোজা করণের কাজ শুরু হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন