ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ১৭তম দিনেও বিরামহীন গতিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দুই মেয়রপ্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুর রহমান ও মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পল্টন, মতিঝিল ও নিউমার্কেট, গাউছিয়া, আজিমপুর, বিডিয়ার গেট, নিউমার্কেট কাঁচাবাজর, পল্টন, বিজয়নগর, দৈনিকবাংলা, বায়তুল মোকাররম, জিপিও, ফকিরাপুল, আরামবাগ, মতিঝিল, নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার, মতিঝিল শাপলা নয়া পল্টন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালানো হয়। থানার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে আলহাজ্ব আব্দুর রহমান।
এ সময় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পথ সভাগুলোতে আব্দুর রহমান বলেন, বসবাস যোগ্য আদর্শ নগর গড়ে তুলে মানুষের মৌলিক চাহিদাপুরণ ও ইনসাফপূর্ণ এবং ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই আমার মূল লক্ষ্য হবে। নাগরিক ও ভোটাধিকার ভুলুন্ঠিত হতে হবে না। হাতপাখা বিজয় হলে সাধারণ ও গণমানুষের বিজয় হবে। রাজধানী ঢাকার অন্যতম সমস্যা মাদক, ক্যাসিনা ও দুর্নীতি। শুধু দুর্নীতি দমন নয়, দুর্নীতি মুলোৎপাটন করার কর্মসূচি গ্রহণ করবো, ইনশাআল্লাহ। হাতপাখা বিজয়ী হলে দক্ষিণ সিটিতে টেন্ডার হবে কিন্তু টেন্ডারবাজি করতে দেয়া হবে না।
আব্দুর রহমান বলেন, হাতপাখার প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, ব্যাপক সমর্থন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণসংযোগ ও পথসভাগুলো এক পর্যায়ে বিশাল গণমিছিলে রূপ নিচ্ছে। এ সময় রাস্তার দু’পাশে থাকা সাধারণ মানুষের অভিবাদন ও সমর্থন অনুপ্রেরণা জোগায়। যদি জনগণ ভোট দিতে পারে তাহলে হাতপাখার জয় আসবে ইনশাআল্লাহ।
প্রচারণায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, শ্রমিকনেতা মুফতী মোস্তফা কামাল, নগরনেতা মাওলানা কামাল হোসাইন, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম, মুফতী ছিদ্দিকুর রহমান, নিউমার্কেট থানা সভাপতি আলহাজ্ব কামরুল হায়দার চৌধুরী, ছাত্রনেতা ইমরান হোসাইন নূরসহ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন, যুব আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
পরিকল্পনাই করে যাচ্ছেন আতিক: মাও মাসউদ
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ডিএনসিসির মেয়র ৯ মাস ধরে পরিকল্পনাই করছেন। অথচ এ জাতি ৯ মাসে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। মাওলানা মাসউদ বলেন, তার (আতিক) দায়িত্ব পালনকালে ঢাকায় ডেঙ্গু মহামারী রূপ নিয়েছিল। ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তকমা পেয়েছে। বায়ু, শব্দ ও পানিদূষণে নগরজীবন অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে। মসজিদের শহর ঢাকা ক্যাসিনোর শহর হয়েছে। এরপরও তিনি এখন বিভিন্ন মুখরোচক জনতুষ্টিমূলক কথা বলছেন।
গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা থানায় গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। আতিকুর রহমানের উদ্দেশে তিনি বলেন, জনগণ এখন কথার ফুলঝুড়ি নয় বরং ৯ মাসের কাজের জবাবদিহি চাচ্ছে। আপনি যে দলের পক্ষে সিটিতে প্রতিনিধিত্ব করছেন, সে দলের সময়ে ঢাকা কেন বসবাসের অযোগ্য হলো, সে জবাব জনগণ জানতে চায়। ঢাকা অচল ও জনজীবন বিপর্যস্ত হলেও আপনি নির্ভার হতে পারেন। মনের আনন্দে গান গাইতে পারেন!
তিনি বলেন, ডিএনসিসিতে গতবারের তুলনায় এবছর বাজেট প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু নাগরিক সেবার মান নিম্নমুখী হযেছে। বাজেটও বেড়েছে মশার কামড়ও বেড়েছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে দিনে দিনে বাসযোগ্যতাও হারিয়েছে। জনগণের করের টাকায় কিছু দুর্নীতিবাজদের পকেট পুরছে। আমরা দায়িত্ব পেলে, এদের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে এবং জনগণের টাকা জনগণের নিকট ফেরত দেয়া হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে জনমনে শঙ্কা বিরাজ করছে। ইভিএমের মতোই নির্বাচন কমিশন অসাড় ও নির্বাক যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যাপারে তারা যে কোন দায় অনুভব করছেন না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা করা হলে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন