এম এম হায়দার আলী, তালা (সাতক্ষীরা) থেকে : সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও ৮ শতাধিক পুরুষ-মহিলা সম্ভাব্য মেম্বার প্রার্থী এখন মাঠে। করছেন ছোটখাটো মতবিনিময় সভা। নিজের জনপ্রিয়তা ফুটিয়ে তোলার লক্ষ্যে মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে গিয়ে ভোটারদের কাছে চাইছেন দোয়া ও আশীর্বাদ, দিচ্ছেন উন্নয়নমূলক নানা কাজের প্রতিশ্রুতি। এবার স্ব স্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় সব রাজনৈতিক দলের এসব প্রার্থী স্থানীয় থেকে শুরু করে ছুটছেন ওপর মহলের হেভিওয়েট নেতাদের কাছে। জোর লবিং-গ্রুপিংয়ের পাশাপাশি ওইসব নেতাকে খুশি রাখতে প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। যেহেতু দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিয়নভিত্তিক একজন প্রার্থী দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তারপরও দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলে এখানকার ১২টি ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়াসহ শক্ত অবস্থানে মাঠে থাকবেন বলে একাধিক প্রার্থী এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ, সঠিক এবং জবাবদিহিতামূলক হলে দলের খাতিরে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়ে দলীয় প্রতীকপ্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করবেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এদিকে আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীদের জোরেশোরে মাঠে-ময়দানে দেখা গেলেও তালা উপজেলায় প্রায় নিষ্ক্রিয় বিএনপি-জামায়াতের অধিকাংশ প্রার্থিতার ব্যাপারে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আলাপচারিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এ দুই রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এদিকে উন্নয়ন বঞ্চিত এ উপজেলার আশা-নিরাশার দোলাচলে দোলা সাড়ে ৫ লক্ষাধিক সাধারণ ভোটার তাদের যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে শুরু করেছেন চুলচেরা বিশ্লেষণ। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে সব রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেনÑ সরুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, সাংবাদিক মাস্টার শেখ আবদুল হাই, বিশ্বাস আতিয়ার রহমান, শেখ মনজুরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুনিরুজ্জামান, সাংবাদিক শেখ জহুরুল হক, বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মোড়ল, অতি পরিচিত মুখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা আবদুর রকিব সরদার, রাশিদুল হক রাজু, মেম্বার মুজিবুর রহমান, এক সময়ের তালা উপজেলা বিএনপির বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর সংগ্রামী নেতা প্রয়াত আলহাজ এ বি এম আলতাফ হোসেনের সুযোগ্য পুত্র খালিদ আহম্মেদ এবং হাসান হোসেন বাবু, জাতীয় পার্টির এস এম আলাউদ্দীন, জাসদের শেখ জাকির হোসেন। কুমিরা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম, শেখ আজিজুল ইসলাম, আলহাজ শেখ শাহাবাজ আলী ও কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল। বিএনপির চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা। ইসলামকাটি ইউনিয়নে আ’লীগের সুভাষ কুমার সেন, শেখ আবদুল আজিজ, আবদুল হামিদ মোল্লা, রঞ্জন কুমার রায়, ডা. হাসানুজ্জামান গাজী, গাজী মিনাজ উদ্দীন, শেখ আফতাব হোসেন, সরদার নওশের আলী, বিএনপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন ও খান রেজাউল করিম। জাসদের শেখ আজিজুল ইসলাম। নগরঘাটা ইউনিয়নের আ’লীগের কামরুজ্জামান লিপু, মনোরঞ্জন কুমার ম-ল, বিএনপির চেয়ারম্যান সরদার মহব্বত আলী, জাসদের মিলন ঘোষাল। মাগুরা ইউনিয়নের আ’লীগের গণেশ দেবনাথ, শেখ আবদুল আলিম টুটুল ও গোলাম মোস্তফা। বিএনপির ডা. ইমান আলী, মো. আমিনুর রহমান, শেখ শহিদুল ইসলাম ও শেখ সাইদুর রহমান সাইদ, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আয়ুব আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির হিরণময়। তালা সদরে আ’লীগের সাংবাদিক মীর জাকির হোসেন ও সরদার জাকির হোসেন, বিএনপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিক এস এম নজরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র মো. মশিউর রহমান। খলিষখালী ইউনিয়নে আ’লীগের দুঃসময়ে জীবনবাজি রেখে শক্ত অবস্থানে থেকে ক্ষুরধর লেখনীসহ সার্বিকভাবে দল রক্ষা প্রচেষ্টাকারী ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি বিশিষ্ট সাংবাদিক শিক্ষক মোজাফ্ফর রহমান, প্রবীণ নেতা অশোক লাহিড়ী ও সমীর কুমার দাস, বিএনপির শেখ নুর আহম্মদ, ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাবির হোসেন, জাসদের আবদুর রাজ্জাক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান আলহাজ সুলতান আহম্মেদ। খেশরা ইউনিয়নে আ’লীগের অধ্যাপক রাজীব হোসেন রাজু, মুক্তিযোদ্ধা এম এম ফজলুল হক, শেখ কামরুল ইসলাম লাল্টু ও সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব কৃষিবিদ মুর্শিদা পারভীন পাপড়ি, বিএনপির চেয়ারম্যান সাংবাদিক লিয়াকত হোসেন, সরদার রুহুল হক, গোলদার তবিবুর রহমান, আবদুল গফ্ফার গাজী ও মাস্টার ময়নুল ইসলাম। ধানদিয়া ইউনিয়নে আ’লীগের সন্তোষ কুমার বিশ্বাস, গাজী হামিজউদ্দীন ও ডা. শহিদুল ইসলাম, বিএনপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ওয়ার্কার্স পার্টির মঞ্জু কাদের ও জাসদের ইয়াকুব আলী। তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে আ’লীগের আবুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, শেখ আবদুল্লাহ, বিএনপির চেয়ারম্যান মিয়াজান আলী মোড়ল, জাতীয় পার্টির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাজিদুর রহমান। জালালপুর ইউনিয়নে আ’লীগের রবিউল ইসলাম মুক্তি, আবু সাইদ মিঠু, বিএনপির চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু, প্রভাষক আবদুল গফ্ফার ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রভাষক রফিকুল ইসলাম। খলিলনগর ইউনিয়নে আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু, সরদার ইমান আলী ও রাজু আহম্মেদ, বিএনপির শেখ জিল্লুর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন, স্বতন্ত্র আকবর হোসেন, জাতীয় পার্টির সাংবাদিক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, জাসদের দেবাশীষ দাস। বিশেষ করে এবারের আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপির একাধিক প্রার্থীর ক্ষেত্রে দলের মনোনীত প্রার্থী বাছাইয়ের ব্যাপারে সিলেকশনে সম্ভব না হলে ইলেকশনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করা হবে বলে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন