শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সাঁকো তৈরিতে বদলে যাবে গ্রাম

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:১৪ পিএম

আঙ্কেল দেখেন দেখি কাঠের আকাবাকা সাঁকো স্কুলে যেতে ভয় লাগে। পানি যখন বেশি থাকে তখন মা' সাঁকো পার করে দেন কথাগুলো প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছোট্ট নিলয়ের।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের জলকাই পাড়ায় এলাকাবাসীর নিজ অর্থায়নে কাঠ বাঁশের তৈরি সাঁকোদিয়ে চলছে যাতায়াত ব্যবস্থা।
অর্থের অভাবে এবছর ঠিক করা হয়ে উঠেনি চলাচলের একমাত্র পথ কাঠ বাশের তৈরি অস্থায়ী সাঁকোটি। সারাদেশ ব্যাপী সরকারের উন্নয়ন আমারা দেখছি শুনছি আমাদের কথা সরকারকে কে শুনাবে। আমাদের কথা নেতারা তো শুনেনা। কান্না কন্ঠে মনের ক্ষোভে কথা গুলো বলছিলেন গ্রামের বাসিন্দা কৃষাণী রিক্তা বানু (২৩)।
প্রায় ১০ বছর ধরে এলাকাবাসীর নিজ অর্থায়নে প্রতি বছরেই কাঠ বাশের তৈরি সাঁকো রিপিয়ার করে চলছে চলাচল বলছিলেন কুলি শ্রমিক রাজিকুল ইসলাম(২৭)। বন্যার সময় আমাদের বেশি কষ্ট করতে হয়। এবছর তেমন বন্যা না হওয়ায় একটু স্বস্তিতে আছি। নালায় পানি কম থাকলেও দুশিন্তা তো কাজ করেই, ছোট ছোট বাচ্চারা এ সাঁকো দিয়ে স্কুলে যাতাযাত করে কখন কি যে হবে বলা যায় না।
মুধুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেনির ছাত্র নুর-ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের এ সাঁকোটি করার ব্যবস্থা করেদিত তাহলে আমরা এলাকার মানুষগুলো একটু স্বস্তিতে থাকতে পারতাম। আমি এখন এভাবেই চলাচল করতে পারি তেমন কোন সমস্যা হয় না। তবে আমার পাড়ার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট করে স্কুলে যেতে হচ্ছে। আমাদের এখানের প্রায় সবাই শ্রমজীবি মানুষ অন্যের বাড়িতে কাজ করে খায়। অন্যের বাসায় কাজ করতে গিয়ে আবার নিজের ছেলে মেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে আসতে হয় তখন যার বাসায় কাজ করে তারা বকাবকি করেন। সাঁেকাটি হয়ে গেলে বাচ্চারা নিজেরাই আসতে পারবে। তেমন সমস্যা হবেনা।
আরেক বাসিন্দা আল-আমিন (৩৬) বলছিলেন, আমাদের এই পাড়ায় ২৭টি পরিবারের বসবাস। কাঠ বাশের তৈরি ভাঙ্গা সাঁেকাটি দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অন্য এলাকার স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে প্রায় দুইশত থেকে আড়াইশত জনের যাতায়াত। আমাদের জলকাই পাড়ায় ২৭টি বাড়িতে সবমিলে প্রায় শখানেক মানুষজন থাকেন। সাঁেকাটি হলে আমাদের চলাচলের জন্য অনেক উপকার হবে। যেমন ধরেন আমারা এখানে যে সকল পরিবার থাকছি তারা সবাই দিন মুজুর কেউ কুলি শ্রমিক কেউ কৃষি শ্রমিক কেউ মিলে কাজ করে খাই। এবার টাকার অভাবে এখনও সাঁেকাটি ঠিক করতে পারিনি।
রহিমানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আবু হান্নান হান্নু বলেন,আমার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের জলকাই পাড়ায় যেতে একটি সাঁকো প্রয়োজন জেনে একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সেখানে কাজ করতে গেলে যে জায়গায় সাঁেকাটি প্রয়োজন সেখানে মালিকপক্ষের অনেকগুলি ওয়ারিস থাকায় তাদের সহযোগীতা না পাওয়ায় সেখানে কাজটি করা সম্ভব হয়নি। যেহেতু প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হয়।
তিনি আরও বলেন,আমি আগেও উপলব্ধি করেছি এখনও উপলব্ধি করছি সেখানে একটি সাঁেকা অথবা একটি কালভার্ট প্রয়োজন। যেটাতে নিচদিক দিয়ে পানি যাবে আর উপর দিকদিয়ে এই এলাকার মানুষ দিনে রাতে চলাচল করতে পারবে। বিশেষ করে বাচ্চারা এখানে প্রাইমারি স্কুলে যাতায়াত করে এই ছোট ছোট বাচ্চাদের যাতায়াতের জন্য এটা প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি এবং সবার সহযোগীতা আমি কামনা করছি।
সদর উপজেলা এলজিডি প্রকৌশলী মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, ব্যাপারি তিনি অবগত নন। তিনাকে উক্ত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা কেহ জানালে তিনি সরজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন।
যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে সেগুলি সমস্যা সমাধান করে দ্রুত সাঁকোটি তৈরির জোর দাবী এলাকাবাসীর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন