আবুল কাসেম হায়দার : বেসরকারি খাতকে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি আখ্যায়িত করে এ খাতের উন্নয়ন ও বিকাশে সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা বেসরকারি খাতের উন্নয়নে আর্থিক, নীতিনির্ধারণ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গঠনে আমাদের সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ ডিসেম্বর হোটেল র্যাডিসন ব্লুতে আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমিক থিংকিং : বাংলাদেশ ২০৩০ অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এ সম্মেলনের আয়োজন করে। বিদেশি বিনিয়োগ আনতে বর্তমান সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশজুড়ে আমরা একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি। যেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে। শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে আইটি খাতে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং এ খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির ওপর পিপিপির ভিত্তিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। একইভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো ২০৩০ সালের মধ্যেই অর্জন করে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী এসডিজি বাস্তবায়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হবে। শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০৪১ সালে আমাদের অর্থনীতি এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। স্থানীয় সাপ্লাই চেইন ও গ্লোবাল ভ্যালু চেইন আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ ও সংযোগ সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে আন্তর্জাতিক ও প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়ন জরুরি। এসডিজি ২০৩০ ও পরবর্তী ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কৌশল নির্ধারণে আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন আয়োজনের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের ধারায় ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করবে। এ লক্ষ্য পূরণে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস হ্রাসকরণ ও অগ্রাধিকারমূলক শিল্পে বর্তমান সরকারের নৈতিক ও আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ পা ফেলেছে। এ পথ ধরে সামনে এগিয়ে যেতে প্রয়োজন বাধাগুলো দূর করা, সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সবাইকে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ভাগ দেয়া।
সম্মেলনে দেশি-বিদেশি অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশের উন্নত দেশ হওয়ার পথে বাধাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি এসব বাধা দূর করতে কী করা উচিত তাও তুলে ধরেন। অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবেরা সরকার কী করছে, কী করতে চাইছে তা তুলে ধরেন আগত অতিথিদের সামনে। এ সম্মেলন আয়োজনে ঢাকা চেম্বারের উদ্দেশ্য ছিল উন্নত দেশ হতে হলে কী করতে হবে তা সম্পর্কে জানা। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। দিনভর খাতভিত্তিক পাঁচটি অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়। রাতে নতুন অর্থনৈতিক চিন্তা কী হতে পারে, তা নিয়ে সমাপনী অধিবেশনে কথা বলেন আলোচকরা।
পুরো আলোচনায় বাংলাদেশের সম্ভাবনার পাশাপাশি মোটা দাগে যেসব চ্যালেঞ্জ উঠে এসেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো লক্ষ্যপূরণে অর্থায়নের জোগান দেওয়া, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর বাণিজ্য-সুবিধা না থাকলে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা, রফতানি খাতে বৈচিত্র্য আনা, জ্বালানি সমস্যা দূর, জনসংখ্যাগত সুবিধা পেতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ জনগোষ্ঠীকে কর্মবাজারের উপযোগী করে তোলা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, আরো বৈদেশিক বিনিয়োগ আনা ইত্যাদি। সর্বোপরি জোর দেওয়া হয় ব্যবসা করার পরিবেশের ওপর। বক্তারা বলেন, বছরে ২০ লাখ নতুনমুখ কর্মবাজারে প্রবেশ করছে। তাদের কাজ দিতে হলে ব্যবসা বাড়াতে হবে, শিল্প বাড়াতে হবে। এ সম্মেলনে উঠে আসা সুপারিশগুলো প্রতিবেদন আকারে সরকারের কাছে তুলে ধরবে ঢাকা চেম্বার। অবকাঠামোতে বিনিয়োগে যাচাই-বাছাই করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল সমস্যার কথা তুললে শুরুতেই উঠে আসবে অবকাঠামো-সংকটের প্রসঙ্গ। তাই সম্মেলনে একটি অধিবেশন ছিল অবকাঠামো নিয়ে। এ অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ফ্রান্সের প্যারিস ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক রেমি। শুরুতেই তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামোর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু তা নিয়ে কিছু বলার নেই। সবাই তা জানেন। তবে বাংলাদেশকে কোন কোন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করলে লাভ বেশি হবে তা ঠিক করতে হবে।
পদ্মা সেতুর মতো বিরাট প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন বিশিষ্ট পুরকৌশলবিদ অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে কাজ করবে। জি টু জি (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তিতে) অবকাঠামো নির্মাণে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়ে জামিলুর রেজা চৌধুরী আরো বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রতিযোগিতা না থাকায় প্রকল্প ব্যয় অনেক বেশি পড়ছে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি তাকু ইয়ামাবে বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হয়ে গেলে বাংলাদেশ আর দীর্ঘসময় বাণিজ্য-সুবিধা পাবে না। তখন বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যকে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে। তাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অংশীদার হওয়া এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করার এখনই সময়। চায়না রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান প্রতিনিধি ওয়ে জিয়াওজুন দেশের প্রতিটি জেলা শহরকে রেলওয়ের যোগাযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করার তাগিদ দেন। অধিবেশন শেষে সঞ্চালক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের প্রধান সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেছে। আমরা খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য পূরণ করব।
সুশাসন থাকতে হবে : পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় এসডিজি নিয়ে অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম বাংলাদেশের সমন্বয়ক অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের কথা বলেন। এগুলো হলো এসজিডির লক্ষ্যগুলোকে জাতীয় নীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা, প্রাতিষ্ঠানিক কৌশল ঠিক করা, সম্পদের জোগান দেয়া, তথ্য-উপাত্ত পাওয়া ও অংশীদারিত্ব। তিনি এসডিজির ১৬ নম্বর লক্ষ্যকে (শান্তি ও ন্যায়বিচার) মুকুটের রতœ হিসেবে অভিহিত উল্লেখ করে বলেন, এটি মানবাধিকার, সুশাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ঠিক না থাকলে অন্যগুলো ঠিক থাকবে না। কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টারের প্রেসিডেন্ট বিয়র্ন লমবার্গ বলেন, এসডিজিতে সবার কাছে অঙ্গীকার করা হয়েছে যে সবকিছু করা হবে। আসলে আমরা সবকিছু করতে পারব না। এ জন্য বাংলাদেশকে এমন কিছু লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, যার সামাজিক প্রভাব অনেক বেশি। তিনি উল্লেখ করেন, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতি বছর বিশ্বে সাড়ে চার লাখ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে।
শতকোটি ডলারের স্বপ্ন ৩২ খাতে : দিনের পঞ্চম অধিবেশনের বিষয়বস্তু ছিল কোন খাত বাংলাদেশের জন্য পরবর্তী শতকোটি বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ তৈরি করবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ম্যারিস স্ট্র্যাটেজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জোসেফ আলফ্রেড ডিভানা। প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশে ৩২টি খাতের শতকোটি ডলারের শিল্প হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে চামড়া ও পাদুকা, ওষুধ, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি), হালকা প্রকৌশল শিল্পের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
২০৪১ সালে বাংলাদেশ : চামড়া ও পাদুকা শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশ এখনই বছরে ১৬৬ কোটি ডলারের চামড়াজাতপণ্য বিশ্ববাজারে রফতানি করছে। কাঁচামালের প্রাচুর্যের কারণে এ খাতের মূল্য সংযোজনের পরিমাণ ৮৫ শতাংশ। ঔষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেনেটার প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ কায়সার কবির বলেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্পকে পরবর্তী পর্যায়ে এগিয়ে নিতে হলে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে। এ দেশ থেকে অর্থ নিয়ে বিদেশে বিনিয়োগ করা খুব কঠিন, সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের পাঁচ হাজার কোটি ডলার রফতানির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে পশ্চাৎসংযোগ (ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ) শিল্পকে শক্তিশালী করা, নতুন রফতানি বাজার তৈরি, পণ্যের বহুমুখীকরণ ও উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে।
দুই বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-সংযোগ : ‘বাংলাদেশের জ্বালানি অর্থনীতি’ শীর্ষক অধিবেশনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশের সব শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-সংযোগ দেয়া হবে বলে জানান। তিনি ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের সব বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, তবে বাসাবাড়িতে নতুন করে আর কোনো গ্যাস-সংযোগ দেয়া হবে না। গ্যাস-সংযোগ শুধু শিল্পপ্রতিষ্ঠান পাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল সরকারকে ভূখ- ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক তামিম ২০০০ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন তেমন না হলেও মাইলের পর মাইল বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এখন প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হলেও সঞ্চালন লাইন স্থাপন কম হচ্ছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত নতুন জেগে ওঠা ভূমিগুলো টেকসই করতে গবেষণা ও তদারকির ওপর জোর দেন। যুক্তরাষ্ট্রের টাফ বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি কূটনীতি প্রকল্পের পরিচালক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে যথেষ্ট পানি থাকলেও তা যদি সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যবহার করা না হয়, তাহলে কাজে আসবে না।
সরকার ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার টার্গেট নির্ধারণ করেছেন। এবং লক্ষ্য অর্জনের কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে। তা হচ্ছে :
১. লক্ষ্য পূরণে অর্থায়নের জোগান দেওয়া।
২. উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরও বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা ধরে রাখা।
৩. রফতানি খাতে বৈচিত্র্য আনা।
৪. জ্বালানি সমস্যা দূর করা।
৫. জনসংখ্যাগত সুবিধা পেতে তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাজার উপযোগী করে গড়ে তোলা।
৬. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।
৭. প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।
৮. সুশাসন কায়েম করা।
৯. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সহঅবস্থান নিশ্চিত করে সকলের গ্রহণযোগ্য সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
উপরের উল্লিখিত ৯টি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সরকারকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালে দেশকে উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে হলে উল্লিখিত চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করে দেশকে সফলভাবে এগিয়ে নিতে পারলে স্বপ্ন সফল হবে।
লেখক : সাবেক সহসভাপতি, এফবিসিসিআই, বিটিএমএ, বিজেএমইএ এবং প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
aqhaider@youthgroupbd.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন