দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পবিত্র রমজান মাস ও ঈদুল ফিতর উৎসবকে সামনে রেখে ভেজাল ও নিম্নমানের লাচ্ছা তৈরির ধুম পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক শ্রেণীর মৌসুমী ব্যবসায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবকে সামনে রেখে লাচ্ছা তৈরীর ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন হোটেল ও কনফেকশনারিতেও লাচ্ছা তৈরী করা হচ্ছে। তারা যত্রতত্র ঘর ভাড়া নিয়ে এসব লাচ্ছা সেমাই তৈরী ও বিক্রয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে উপজেলার চৌমুহনী বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শুধু এই চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৭ থেকে ৮ টি দোকানে লাচ্ছা সেমাই তৈরী হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আজাহার আলী, আব্দুস ছামাদ, নুরুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, আবু বক্কর (গোফফার)সহ আরো বেশ কয়েকজন দোকান ভাড়া নিয়ে অনেকেই নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে যত্রতত্র এসব লাচ্ছা তৈরী করছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ দিয়ে লোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব লাচ্ছা তৈরী হচ্ছে। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে ও স্যাতসেতে মেঝেতে আটার খোমর তৈরী করা হচ্ছে। এসব আটার খোমর তৈরীর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের অবস্থা আরো করুণ। খালী গায়ে পা দ্বারা এসব শ্রমিকরা আটার খোমর তৈরীর কাজে ব্যস্ত রয়েছে। গরমে তাদের গা থেকে ঘাম ঝড়ে আটার খোমরে মিশে যাচ্ছে। এই খোমর দ্বারাই পরে কারিগররা তাদের কারিগরী কৌশলে লাচ্ছা তৈরী করছে। অধিক মুনাফার আশায় এই সব ব্যবসায়ীরা তৈরীকৃত লাচ্ছা ভাজার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যন্ত নিম্নমানের পোড়া তেল। দোকানগুলোতে দেখা গেছে পুরানো খাওয়ার অনুপযোগী এসব তেল এই লাচ্ছা ভাজার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরীকৃত এই সব লাচ্ছা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রং মেশানো ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরীকৃত এই সব লাচ্ছা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা মন্তব্য করেছেন। এ দিকে এসব বিষয়ে দেখাশুনার জন্য সরকারিভাবে একজন স্যানেটারী ইন্সপেক্টর উপজেলায় কর্মরত থাকলেও অজ্ঞাত কারনে এসব অসাধু ভেজাল ও নিম্নমানের লাচ্ছা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তিনি নিরব রয়েছেন। এ ছাড়াও পবিত্র এই রমজান মাসে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো হলেও অজ্ঞাত কারনে এই উপজেলা অদ্যবধি ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো থেকে প্রশাসন বিরত হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মমতা রাণী’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ী অনুমতি নিয়ে লাচ্ছা তৈরির ব্যবসা করলেও অধিকাংশ লাচ্ছা ব্যবসায়ীরা অনুমতি (লাইসেন্স) ছাড়াই ব্যবসা করছেন। দুই একেই এইসব অবৈধ ভেজাল লাচ্ছা তৈরীর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নবাগত ইউএনও এসএম জাকির হোসেন এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন